মেঘনা ও তেতুলিয়া নদীতে দুই মাস মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা

ইলিশের বেড়ে ওঠা নিশ্চিত করতে মার্চ ও এপ্রিল দুই মাস এবারও ভোলার ১৯০ কিলোমিটার এলাকাসহ উপকূলের মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর ৩৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ অভয়স্থলে সব ধরনের মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
আগামীকাল শনিবার থেকে দুইমাস এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে। মাছ ধরা বন্ধ রাখতে আশপাশের এলাকায়ও মাছ বিক্রি, পরিবহণ ও সংরক্ষণের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
আজ মধ্যরাত থেকে ভোলার মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীতে ইলিশের অভয়াশ্রমে দুই মাসের জন্য সকল ধরনের মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞা শুরু হচ্ছে। এই সময়ে সরকারের প্রণোদনার চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন জেলেরা। নিবন্ধিত অনেকেই এই প্রণোদনা পান না বলেও জানান তারা।
ভোলার মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদী থেকে ইলিশ ধরে ঘাটে ফিরছে জেলে নৌকা। শুক্রবার মধ্যরাত থেকেই বন্ধ হয়ে যাবে জেলেদের ইলিশ ধরার এই কর্মচাঞ্চল্য। প্রতি বছরের মত এবারও পহেলা মার্চ থেকে দুই মাস ইলিশের অভয়াশ্রমে ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে মৎস্য বিভাগ। এসময় জেলেদেরকে সরকারি প্রণোদনা হিসাবে মাসে ৪০ কেজি চাল দেওয়া হলেও সরজমিনে দেখা গেছে সবাই তা পায় না।
ভোলার ইলিশা মদনপুর থেকে মেঘনা নদীর চর পিয়াল পর্যন্ত ৯০ কিলোমিটার ও তেঁতুলিয়া নদীর ভেদুরিয়া থেকে চর রুস্তম পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার করে মোট ১৯০ কিলোমিটার দীর্ঘ অভয়শ্রমে ঘোষণা করেছেন মৎস্য অধিদপ্তর। এই সময় মেঘনা ও তেতুলিয়া নদীতে সবধরণের মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া মৎস্য বিভাগ । এই নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সময়ে মাছ ধরা, ক্রয় বিক্রিয়, পরিবহণ ও সংরক্ষণের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
জেলা মৎস্য বিভাগের তথ্য মতে, জেলার ১২৪টি মাছঘাটে কমপক্ষে ৪০ হাজার ইঞ্জিনচালিত নৌকা বা ট্রলার রয়েছে যারা সরাসরি মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে মাছ ধরে থাকে। এ ছাড়া জেলায় ১০ হাজার ৫৯৩টি সমুদ্রগামী ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলার দুই মাসের মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকলেও সাগরে মাছ ধরতে যেতে হলে জেলা মৎস্য অফিসের অনুমতি প্রয়োজন হবে।
এ বিষয়ে জেলেদের সচেতন করার জন্য নদী এবং উপকূলবর্তী এলাকায় মাইকিং ও পোস্টারিংসহ সব ধরনের প্রচারণা অব্যাহত রেখেছে জেলা প্রশাসন ও জেলা মৎস্য বিভাগ। এ নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন করার জন্য নদীতে মৎস্য বিভাগ,জেলা - উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও কোস্টগার্ডের সমন্বয়ে প্রতিদিন অভিযান পরিচালনা করা হবে। আইন অমান্য করলে জেল-জরিমানার বিধান রয়েছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব জানান, মেঘনা, তেঁতুলিয়া নদীতে অভয়স্থলে দুই মাস মাছ ধরা বন্ধ রাখলে এ অঞ্চলে ইলিশ উৎপাদন বেড়ে যাবে। এ বছর ভোলা জেলায় ৮৯ হাজার ৬শ জেলের অনুকূলে ৭ হাজার ১শ ৬৮ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ করা হয়েছে। সেগুলো ইতিমধ্যে উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছানো হয়ে গেছে মার্চের প্রথম সপ্তাহের দিকে জেলেদেরকে দেওয়া শুরু হবে। প্রত্যেক জেলে প্রতি মাসে ৪০ কেজি হারে চাল পাবে। জেলায় ১ লাখ ৮৫ মেট্রিকটন হাজার টন ইলিশ আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। কিন্তু এবছর মা ইলিশ প্রচুর পরিমাণ ডিম ছাড়ার সুযোগ পেয়েছে তাই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের চেয়েও বেশি হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
বিভি/এজেড
মন্তব্য করুন: