উত্তরায় বিস্ফোরণে ৮ জনের মৃত্যুর প্রকৃত ঘটনা

গত (৬ আগস্ট) শনিবার দুপুরে রাজধানীর উত্তরা কামারপাড়ার রাজাবাড়ী এলাকায় ব্যাটারি চালিত রিকশার দোকানে চার্জকৃত ব্যাটারীতে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট হয়ে ব্যাটারি বিস্ফোরণের ঘটনায় গ্যারেজ মালিক গাজী মাজহারুল ইসলামসহ দগ্ধ ৮ জনের সবার মৃত্যু হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উত্তরার কামারপাড়ায় নিহত গাজী মাজহারুল ইসলামের অটো রিকশা গ্যারেজের পাশাপাশি একটি ভাঙারীর দোকান আছে। গ্যারেজে অটোরিকশা রেখে নিয়মিত চার্জ দেওয়া হতো এবং অটোরিক্সার ব্যাটারিতে কোন সাবধানতা অবলম্বন না করে এসিড পরিবর্তন করা হতো।
নিহতের পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শী সুত্র বলছে, ঘটনার দিন রিকশা গ্যারেজে অনেকগুলো ব্যাটারি ওভারলোডিং চার্জ দেওয়া হচ্ছিল। চার্জকৃত ব্যাটারিতে গ্যারেজ মালিক এসিড পরিবর্তন করার সময় অল্প দূরবর্তী স্থানে অপর দুই কর্মচারী সিগারেট টানছিল।
ব্যাটারীতে এসিড ঢালার সময় অসাবধানতাবশত কিছু ছাই বিদ্যুতের তারে গিয়ে লাগে। এ সময় বিদ্যুতের শর্ট সার্কিট হয়ে বিস্ফোরণে গ্যারেজ মালিক গাজী মাজহারুল ইসলামসহ ৮ জন অগ্নিদগ্ধ হয়। সেসময় গ্যারেজে থাকা ১৩টি অটোরিকশা ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় এবং রক্ষিত অন্য মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
পাশের ভাঙ্গারীর দোকান ঘরে রক্ষিত বিভিন্ন স্থান হতে ক্রয়কৃত ‘ড. রাযেশ’ এর জার্মকিল স্প্রের কিছু ব্যবহারিত খালি কৌটাসহ অন্যান্য মালামাল ছড়িয়ে-ছিটিয়ে গেলেও অক্ষত থেকে যায়। বিস্ফোরণ ঘটায় পর উত্তরার ফায়ার স্টেশনের ব্যবস্থাপক সৈয়দ মনিরুল ইসলাম টিম নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণ করেন।
পরবর্তীতে বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয় যে বিদ্যুতের শর্ট সার্কিটের কারণে ব্যাটারি বিস্ফোরণে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, ঘটনার পর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আলম তার শ্বশুর রফিককে এবং নূর হোসেন তার ছেলে নাজমুল মৃত্যুর আগ মুহূর্তে বলেছে, গ্যারেজ মালিক গাজী মাজহারুল ইসলাম ব্যাটারিচালিত এসিড পরিবর্তন করছিল অপর কর্মচারীরা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আলাপচারিতায় ব্যস্ত ছিল হঠাৎ ব্যাটারীতে লাগানো বিদ্যূতের তারে এসিডের ফোটা লেগে স্পার্কিং হয় এবং মূহুর্তে আগুন লেগে বিস্ফোরণ ঘটে।
নিহতের পরিবারের সদস্যরা বলেন, তাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি চলে যাওয়ায় তারা এখন অসহায়, দিশেহারা এবং অনিশ্চয়তায় ভুগছেন। তারা বিত্তবানদের সহায়তার অনুরোধ করেছেন।
জানা যায়, এক বছর আগেও এ রিকশা গ্যারেজে বিদ্যুতের শর্ট সার্কিট থেকে লাগা আগুনে একজনের মৃত্যু হয়। সাম্প্রতিক ঘটনায় অটো রিক্সা গ্যারেজ ও ভাঙারির দোকানের মালিকের ভাই নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে গত বুধবার তুরাগ থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেছেন।
মন্তব্য করুন: