প্রেমের টানে ভারত থেকে সুনামগঞ্জে এসে বিয়ে করলেন কারিশমা

ফেসবুকে পরিচয়। সেই পরিচয় গড়িয়েছে প্রেমে। কিন্তু দু’জনের সম্পর্ক পরিবার মেনে নিলেও বাধা হয় জাতীয়তা ও ভৌগলিক সীমানা। তবে প্রেমকে পরিণয়ে রূপ দিতে দুই দিনের পথ পাড়ি দিয়ে কাঁটাতারের সীমানা পেরিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন ভারতীয় তরুণী কারিশমা শেখ (১৯)। ইসলামী শরিয়ত অনুযায়ী সুনামগঞ্জের আশরাফুল আলমের (২৬) সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন কারিশমা শেখ।
নানা প্রতীকূলতা কাটিয়ে অবেশেষে তিন বছরের প্রচেষ্টা সফল হয়েছে তাদের। এত দূর পরিবার পরিজন ছেড়ে আশরাফুলের বাড়িতে আসায় কারিশমাকে মেনে নিয়েছে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। আশরাফুলের বাড়ি সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভপুর উপজেলার ধনপুর ইউনিয়নের চরাগাঁও। তিনি ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষে ছাত্র। বিদেশি বউ গ্রামে আসায় খুশি গ্রামের মানুষ।
ভারতীয় তরুণী কারিশমা শেখ জানান, তিনি ভারতের আসাম প্রদেশের ডিকেরায় হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। তার বাবা আবদুল কাচিম শেখ এলাকার একটি জামে মসজিদে ইমামতি করেন। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে কারিশমা শেখ সবার বড়। কাউকে না জানিয়েই বাংলাদেশে চলে আসেন তিনি। গোহাটি হয়ে কলকাতা যান। পরে কলকাতা থেকে বেনাপোল সীমান্তে আসতে দুদিন সময় লাগে তার। বেনাপোল থেকে তাকে বাড়িতে নিয়ে আসে প্রেমিক আশরাফুল।
দীর্ঘ এই পথপাড়ি দিতে কারিশমা পাসপোর্ট, ভিসা করেছেন নিজেই। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে একা এত দূর চলে আসেন এই তরুণী। এখন এদেশেই আজীবনের জন্য থাকতে চান। সেই জন্য বৈবাহিক সূত্রে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দিতে সরকারের প্রতি অনুরোধ করেন তিনি।
আশরাফুল আলম বলেন, ৩ বছর আগে প্রথমে ফেসবুকে পরিচয় আমাদের। পরে তার মোবাইল নম্বর নিলাম। এরপর থেকে আমাদের মধ্যে একটা ভালোবাসার সম্পর্ক তৈরি হয়। এরপর থেকেই নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। এখন সে বৈধভাবে বেনাপোল দিয়ে বাংলাদেশে এসেছে। সেখান থেকে আমার বাড়ি নিয়ে এলে প্রথমে পরিবার মানেনি। অনেক বোঝানোর পর সবাই মেনে নিছে। এখন তার বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পাওয়াটাই আমাদের আশা।
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশ, পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনের মায়া ত্যাগ করে প্রেমের টানে বাংলাদেশে আসা ভারতীয় এই তরুণীকে নিজের সন্তানের মতো করে গ্রহণ করেছেন আশরাফুলের পরিবার। ভারতীয় তরুণীকে জীবনসঙ্গি হিসেবে পেয়ে আশরাফুল আলমও বেশ খুশি। আজীবন এক সঙ্গে থাকতে স্ত্রী কারিশমা শেখকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদানে সরকার ও সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ এই প্রেমিক যুগলের।
এ বিষয়ে ধনপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মিলন মিয়া বলেন, কয়েকদিন আগে আমার ইউনিয়নে এক ভারতীয় মেয়ে এসেছে শুনেছি। পরে পুলিশ সঙ্গে নিয়ে তার বৈধতা যাছাই করে দেখলাম, তার সব কিছু বৈধ আছে। বৈধভাবে বাংলাদেশে এসে বিয়ে করেছে। তারা সুখে শান্তিতে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে এবং নাগরিকত্ব পেতে আমাদের ইউনিয়ন পরিষদ থেকে যতটুকু সহযোগিতা করা দরকার আমরা করব।
বিভি/এইচএস
মন্তব্য করুন: