বেতন নিয়ে বাড়ি যেতে চেয়েছিলেন সাগর, ফিরলেন লাশ হয়ে

বেইলি রোডে পোড়া ভবন, ইনসেটে নিহত সাগর
এইচএসসি পাশ করা সাগর চেয়েছিলেন সংসারের হাল ধরতে। পরীক্ষার পর চারমাস ধরে ঢাকায় বিভিন্ন কাজ করে বাড়িতে চাকরি করছিলেন। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি নতুন সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে জয়েন করেছিলেন। আগামী ১০ মার্চ বেতন তুলে বাড়ি যাওয়ার কথা ছিল তার। সাগর ফিরেছেন বাড়ি, কিন্তু লাশ হয়ে।
বেইলি রোডের আগুন কেড়ে নিল সাগর ও পরিবারের স্বপ্ন। দিনমজুর বাবার অভাবী সংসারের হাল ধরার স্বপ্নটা পুড়লো আগুনে। মৃত্যুর মিছিলে যোগ হয়েছে তার নামটিও। বেইলি রোডের ওই ভবনে অবস্থিত পোশাক প্রতিষ্ঠান ইপিলিয়ানের শোরুমে ভয়াবহ এ দুর্ঘটনার মাত্র দুইদিন আগে যোগদান করেছিলেন সাগর।
নিহত সাগর এ বছর এইচএসসি পাশ করেছেন। বাড়ি পাবনার ফরিদপুর উপজেলার হাদল ইউনিয়নের ধানুয়াঘাটা পূর্বপাড়া গ্রামে। বাবা হাসান আলী ও মা সাবিনা খাতুন।। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে সাগর ছিলেন সকলের বড়।
গতকাল শুক্রবার (০১ মার্চ) বিকালে সাগরের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িতে আত্মীয়-স্বজন ও এলাকাবাসীর ভিড়। শোকে পাথর হয়ে গেছেন বাবা-মা। মাঝে মাঝে ছেলের জন্য আর্তনাদ করছেন তারা। সান্তনা কিভাবে দেবেন তাও ভুলে গেছেন প্রতিবেশীরা।
আরও পড়ুন: বেইলি রোডের আগুনে প্রাণ গেল অতিরিক্ত ডিআইজির মেয়ের
সাগরের বাবা জানান, ছেলের সঙ্গে আলোচনা করে ঢাকায় যেতে বলি কাজের জন্য। চার মাস আগে সে ঢাকায় গিয়ে সিকিউরিটি কোম্পানিতে চাকরি শুরু করে। সে মাঝে মধ্যে কিছু টাকা পাঠাত। তা দিয়ে মোটামুটি সংসার চলছিল। গতরাতে বাড়ি ফেরার পর আমি শুনতে পাই আমার ছেলে নাই।
সাগরের মা সাবিনা খাতুন বলেন, বেতন তুলে দশ তারিখে বাড়ি আসবে বলেছিল সাগর। আমি বলেছিলাম টাকার দরকার নাই, তুমি বাড়ি আসো। কিন্তু তার আগেই আমার ছেলেটা পৃথিবী থেকে চলে গেল।
হাদল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিম হোসেন বলেন, ঢাকা যাবার আগেও আমার সাথে কথা বলেছে। শুক্রবার সকালে ফেসবুকের মাধ্যমে জানলাম বেইলি রোডের আগুনের ঘটনায় সাগর মারা গেছে। তার পরিবারটি খুবই অসহায়। আমি দাবি জানাই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় যেন পরিবারটি ক্ষতিপূরণ পায়।
বিভি/এজেড
মন্তব্য করুন: