মেয়ে রেখে, বাবা-মাকে চিরকুট লিখে ট্রেনের নিচে মাথা দিলো সাহারা

নিজের ছোট্ট সাত মাস বয়সী মেয়েকে রেখে এবং বাবা-মায়ের কাছে ক্ষমা চেয়ে ট্রেনের নিচে ঝাপিয়ে পড়ে জীবন দিয়েছে সাহারা খাতুন নামের ২৬ বছর বয়সী এক গৃহবধূ। শুক্রবার (২৪ মে) ঘটনাটি ঘটেছে নেত্রকোণার পূর্বধলায় উপজেলা ভূমি অফিস সংলগ্ন এলাকায় জারিয়া-ময়মনসিংহ রেললাইনে।
নিহত সাহারা উপজেলার আগিয়া ইউনিয়নের কৈলাটি উত্তরপাড়া গ্রামের শাহজাহান মিয়ার স্ত্রী ও আগিয়া ইউনিয়নের জতিয়াবর গ্রামের আলাল উদ্দিনের মেয়ে।
চিরকুটের দুই পৃষ্ঠাতেই অল্প অল্প লেখা। যার প্রথম পৃষ্ঠায় লেখা, বাবা-মা ক্ষমা করে দিও। জানি এটা ক্ষমার অযোগ্য। আমি কলিজার সন্তান রেখে গেলাম। লেখার মতো সময় নাই।
আরেক পৃষ্ঠায় লেখা আছে, “আত্মহত্যা মহাপাপ” সন্তান রেখে আত্মহত্যা মহাপাপ। আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। শ্বশুর বাড়ির কাউকে দোষারোপ করো না।
স্থানীয়রা জানান, সাহারা খাতুনের সঙ্গে একই ইউনিয়নের কৈলাটি উত্তরপাড়া গ্রামের শাহজাহান মিয়ার বিয়ে হয়। স্বামীর বাড়ির লোকজনের সাথে ঝগড়া বিবাদ করে বাবার বাড়ি আসেন। শুক্রবার বাড়ির কাউকে না জানিয়ে বের হয়ে আসেন সাহারা। পরে ট্রেন আসার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত সাহারা খাতুন রেললাইনের পাশে বসে মোবাইল ফোনে কারো সাথে কথা বলছিলেন। ট্রেনটি কাছাকাছি আসতেই তিনি ট্রেনের ইঞ্জিনের সামনে ঝাঁপিয়ে পড়েন।
নিহত সাহারার ভাই ওমর ফারুক জানান, শ্বশুর বাড়ির লোকজনের সাথে ঝগড়া করে আমার বোন আমাদের বাড়ি আসে। আমার বোনকে আত্মহত্যার প্ররোচনা করে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে। আমরা এর বিচার চাই।
পূর্বধলা রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) জহিরুল ইসলাম জানান, শুক্রবার দুপুর পৌনে ২টার দিকে জারিয়া থেকে ছেড়ে ময়মনসিংহের উদ্দেশ্যে ২৭৩নং লোকাল ট্রেনটি যাচ্ছিল। পূর্বধলা রেল স্টেশন অতিক্রম করার পর ওই মহিলা ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে মারা যায়।
ময়মনসিংহ রেলওয়ে থানার ওসি মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, পূর্বধলায় ট্রেনে কাটা পড়ে সাহার খাতুন নামের এক নারী মারা গেছেন। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
বিভি/এজেড
মন্তব্য করুন: