• NEWS PORTAL

  • সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

হাসপাতালে সন্তান প্রসবের সময় আয়ার হাতে নবজাতকের মুত্যুর অভিযোগ

কুয়াকাটা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৬:১৭, ২৮ জুন ২০২৪

ফন্ট সাইজ
হাসপাতালে সন্তান প্রসবের সময় আয়ার হাতে নবজাতকের মুত্যুর অভিযোগ

পটুয়াখালীর মহিপুরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে সন্তান প্রসবের সময় আয়ার হাতে নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। 

বৃহস্পতিবার (২৮ জুন) সকালে মহিপুর থানা সদরের কেয়ার মডেল হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। 

স্বজনদের অভিযোগ, চিকিৎসকের দায়িত্ব নেয়া ওই আয়া নিজেই প্রসূতির ডায়াগনোসিস রিপোর্ট পর্যালোচনা করে স্বাভাবিক ডেলিভারির আশ্বাসও দিয়েছেন। একই সাথে ডাক্তার না ডেকে নিজেই সনাতনি পদ্ধতিতে ডেলিভারি করতে গিয়ে নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে প্রসূতির স্বজনরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। খবর পেয়ে মহিপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থালে গিয়ে পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই আয়া পরভীন এবং নার্স মানসুরাকে থানায় নেওয়া হয়েছে।

মহিপুর থানা পুলিশ ও স্বজনরা জানায়, মহিপুর থানা সদর ইউনিয়নের বিপিনপুর গ্রামের আনোয়ারের স্ত্রী দুই সন্তানের জননী সন্তান সম্ভাবা শারমিন বেগমকে (৩৩) বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় ওই হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ সময় পারভীন নামে ওই আয়া অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে ডেলিভারি করান। ওই হাসপাতালের কর্তব্যরত নার্স মানসুরা (৩০) আসার আগেই নবজাতক মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এরপর ডাক্তারকে ফোন করা হলে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তিনি হাসপাতালে পৌঁছে নবজাতকের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হন।

নবজাতকের বাবা আনোয়ার জানান, তার দুই মেয়ে সন্তানের পর এই ছেলে সন্তানের জন্ম হয়েছে। ছেলে সন্তানের আশায় তিনি তৃতীয় সন্তান নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তার সেই আশা অনুযায়ী ছেলে সন্তান হলেও আয়া আমার সন্তানকে মেরে ফেলেছে। আমরা এর বিচার চাই। 

তিনি আরও বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে এর প্রতিকার চাইতে গেলে তারা আমার বাচ্চাকে দাফন দেয়ার কথা বলেন। এ মডেল হাসপাতালে এর আগেও এমন ঘটনা একাধিকবার ঘটেছে। তাই আমি চাই আমার মতো কোনো বাবা যেন এরকম ঘটনার স্বীকার না হয়। আমার সন্তান মৃত্যুর পিছনে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দায়ী রয়েছে তাই আমি আমার সন্তান মৃত্যুর বিচার দাবি করছি। 

অভিযোগ রয়েছে, হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টা প্রসূতি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক থাকবার ঘোষণা থাকলেও ওই সময় কোনো চিকিৎসক ছিলেন না। প্রসূতি শারমিন এবং তার স্বামী আনোয়ার ও তার স্বজনরা অভিযোগে বলেন, এভাবে আর যেন কোনো মা ক্ষতিগ্রস্ত না হন। সন্তান হারা না হয়। তাদের দাবি এ হাসপালে এর আগেও ডেলিভারি করার সময় দু’টি নবজাতক মারা যায়।

হাসপাতালের আয়া পারভীন ও নার্স মানছুরা জানান, প্রসূতির ডায়াগনোসিস রিপোর্ট অনুযায়ী নরমাল ডেলিভারি হবার কথা, হয়েছেও তাই। এজন্য তারা ডাক্তারকে ডাকেননি। তবে ডা. ছাড়া কীভাবে এমন ঝুকিঁ তারা নিলেন তার কোনো সদুত্তোর দিতে পারেননি তারা।

ওই হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. পপি সুর জানান, হাসপাতাল থেকে তাকে নরমাল ডেলিভারি হবার কথা জানালে ফোনে তিনি নার্সকে পরামর্শ দিয়েছেন। পরে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এসে দেখেন বাচ্চা মৃত।  

হাসপাতালটির মালিক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, আল্টাসনোগ্রাফি রিপোর্ট অনুযায়ী নরমাল ডেলিভারি হবার কথা ছিল বলে ডাক্তার ডাকা হয়নি। তার দাবি, রোগী হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই বাড়িতে বসে স্থানীয়ভাবে ডেলিভারি করানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে হাসপাতালে নিয়ে আসে। নবজাতকের গলায় নারী পেচানো ছিল। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং আয়ার বক্তব্য পরস্পরবিরোধী।

তবে অভিযোগ রয়েছে, হাসপাতালটিতে বিভিন্ন ডাক্তারের সাইন বোর্ড ঝুলিয়ে রাখা হলেও তা শুধু কাগজে কলমেই রয়েছে। বাস্তবে এক-দুইজন চিকিৎসক রয়েছে। তা অনিয়মিত। নার্স আয়াদের দিয়েই চলছে চিকিৎসা।

মহিপুর থানার ওসি মো. আনোয়ার হোসেন তালুকদার জানান, এরই মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আয়া এবং নার্সকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। পরবর্তীকালে তদন্ত অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বিভি/টিটি

মন্তব্য করুন: