শত শত ভূমিহীন থাকার পরও ভূমিহীন মুক্ত ঘোষণা: প্রতিবাদ সাতক্ষীরায়

সাতক্ষীরা জেলায় শত শত ভূমিহীন থাকার পরও জেলা প্রশাসক কর্তৃক ভূমিহীন মুক্ত জেলা ঘোষণার প্রতিবাদে ও তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে মানববন্ধন এবং প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারক লিপি প্রদান করা হয়েছে। জেলা ভূমিহীন সমিতির ব্যানারে রবিবার (৩০ জুন) বেলা ১১টায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন, সংগঠনটির সভাপতি কওছার আলী।

বক্তব্য রাখেন, নদী বন ও পরিবেশ রক্ষা কমিটির সভাপতি আদিত্য মল্লিক, সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ ফারুক হোসেন, জেলা ভূমিহীন সমিতির সহ-সভাপতি শেখ শওকত আলী, জি এম রেজাউল করিম, শেখ হাফিজুর রহমান, আশরাফুল ইসলাম গাজী, আব্দুল কাদের পাড়, শেখ রিয়াজুল ইসলাম প্রমুখ। সমগ্র অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন, জেলা ভূমিহীন সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ। মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ মিছিল সহকারে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারক লিপি প্রদান করেন নেতৃবৃন্দ। 

বক্তারা প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্যে করে বলেন, সাতক্ষীরা জেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে শত শত ভূমিহীন পরিবার। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জন্মশত উপলক্ষে আপনি সারা দেশের ভূমিহীন গৃহহীনদের গৃহ নির্মাণের যে মহতী উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন সেটি বাঙালি জাতি হাজার বছর ধরে স্মরণ করবে। সাতক্ষীরাতেও ইতিমধ্যে অনেক পরিবার মুজিববর্ষের গৃহ পেয়ে উপকৃত হয়েছে। তবে যাছাই-বাছাই নিয়ে নানান বিতর্ক রয়েছে। জেলার ভূমি অফিসের কর্মকর্তাদের (নায়েবদের) টাকা না দিলে ঘর পায়নি এমন প্রমাণও রয়েছে শতটি। 

এসব বিষয় নিয়ে আমরা একাধিকবার সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে গিয়ে অভিযোগ দিলেও তিনি কোনো পদক্ষেপ নেননি। ভূমি অফিসের দুর্নীতিবাজ নায়েবরা ঘর প্রতি ১০ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়েছে। এমন প্রমাণ রয়েছে একাধিক। সাতক্ষীরা সদরের রইচপুরে ৬শ বিঘা, বাঁকালে ১ হাজার বিঘা, বিনেরপোতা বসুন্ধরা, দেবহাটার খলিষাখালী, নোড়ারচক, চিংড়ীখালী, বৈরাগীর চক, কালিগঞ্জের বাবুরাবাদে হাজার হাজার বিঘা খাস সম্পত্তি রয়েছে। এছাড়াও পৌরসভার কুখরালী এলাকায় ১২ বিঘা খাস জমি রয়েছে।

যে গুলো প্রভাবশালীরা অবৈধভাবে ভোগ দখল করে যাচ্ছে। দু:খের বিষয়গুলো এসব খাস জমিগুলো অজানা কারণে জেলা প্রশাসনের নজরে আসে না। এসব সম্পত্তিগুলো নামমাত্র টাকায় ইজারা দেওয়া হয় প্রভাবশালী ভূমিদস্যুদের কাছে। আর গোপনে তাদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে পকেট ভারী করেন সরকারি কর্মকর্তারা। অথচ অসহায় ভূমিহীন পরিবারগুলো রাস্তার ধারে, নদীর ধারে এবং বস্তিতে অতিকষ্টে জীবন যাপন করে আসছি। ওই জমি ভূমিহীনরা ইজারা নিতে গেলেও তাদের দেওয়া হয় না। বক্তারা এসময় সাতক্ষীরার অসহায় ভূমিহীনদের ভাগ্য উন্নয়নে আশু পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান।