পুলিশের সামনেই আন্দোলনকারীদের উপর ছাত্রলীগের হামলা

ফরিদপুরে পুলিশের উপস্থিতিতেই কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের উপর হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এতে দুইজন গুরুতর আহত সহ অন্ততপক্ষে পাঁচ আন্দোলনকারী আহত হয়েছেন। আহতদের তাৎক্ষনিকভাবে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
গুরুত্বর আহতদের মধ্যে রয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী শহরের ঝিলটুলীর বাসিন্দা কাজী নিশাত আহমেদ (২৫) ও সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের আবরার নাদিম ইতু (২৬)।
এদিকে, আন্দোলনকারীদের উপর হামলার ঘটনার পরে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা রাজপথে নেমে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে। তারা মুজিব সড়ক হয়ে মিছিল সহকারে জনতা ব্যাংকের মোড়ে সমবেত হয়।এসময় বৃষ্টি বিঘ্ন পরিবেশ উপেক্ষা করে তারা বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকে।
এর পাশাপাশি ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ ও ডায়বেটিক অ্যাসোসিয়েশন মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীরা পৃথক পৃথকভাবে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে। বেলা ১১টার পরে শহরের প্রধান সড়ক সহ ফরিদপুর-বরিশাল মহাসড়ক উত্তাল হয়ে উঠে আন্দোলনকারীদের উপস্থিতিতে।
শহরের জনতা ব্যাংকের মোড়, ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সামনে, ভাঙ্গা রাস্তার মোড়ে ও মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনে আন্দোলনকারীরা অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করে।
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কোটা আন্দোলনকারীদের উপর হামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বেলা ১১টা থেকে শহরের ব্রাহ্মসমাজ সড়কের সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয় আন্দোলনকারীরা। সেখানে তারা সড়কে বসে নানা শ্লোগানে মুখরিত করে তোলেন। এসময় জেলা পুলিশের একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নেতৃত্বে পুলিশও উপস্থিত ছিলো।
আন্দোলনকারীদের অবস্থানের মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যে সোয়া ১১ টার দিকে সেখানে অর্ধশত ছাত্রলীগের নেতাকর্মী লাঠিসোটা ও হকিস্টিক দিয়ে হামলা চালায়। এতে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় আন্দোলনকারীরা।
হামলায় আহত কোটাবিরোধী আন্দোলনের নেতা আবরার নাদিম ইতু বলেন, আমাদের কর্মসূচি শুরু হতে না হতে হতেই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পুলিশের উপস্থিতিতে অতর্কিতভাবে হামলা করে। আমার সহকর্মীরা পড়ে গেলে তাদের উঠাতে যাই। এ সময় আমার পরিচিত মুখই হামলা চালায়। আমাদের প্রত্যেকের মাথায় আঘাত করেছে তারা। আমাদের দেখে নেয়ারও হুমকি দিয়ে গেছে। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় আছি। তিনি আরও বলেন, আমরা প্রতিদিনই শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছিলাম। আজও পুলিশের সাথে কথা হয়েছে, শান্তিপূর্ণভাবে করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তারা পুলিশের বাঁধা অতিক্রম করে আমাদের উপর হামলা চালায়।
এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তামজিদুল রশিদ চৌধুরী রিয়ানসাংবাদিকদের বলেন, আমি এবং সাধারন সম্পাদক আন্দোলনকারীদের কর্মসূচি করতে নিষেধ করেছিলাম। তখন তারা বলেছিল চলে যাবে, পরে আমি চলে আসি। এরপরই জানতে পারি, ওরা শতাধিক লোক জড়ো হয়েছে। তখন আমি শহর ছাত্রলীগের সভাপতিকে পাঠাই। ছাত্রলীগ সেখানে যাওয়া মাত্রই হেলমেট দিয়ে আমাদের একজনকে আঘাত করে। এরপরই মারামারির ঘটনা ঘটেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সেখানে উপস্থিত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শৈলেন চাকমা ও কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ হাসানুজ্জামান হাসান তাৎক্ষণিকভাবে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
বিভি/এজেড
মন্তব্য করুন: