• NEWS PORTAL

  • বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

বাবার অপেক্ষায় পোষা ময়না `জোজো`, ২ সন্তানের শিক্ষা জীবন অনিশ্চিত

হারুন আনসারী, ফরিদপুর

প্রকাশিত: ১৩:৪৯, ২০ আগস্ট ২০২৪

ফন্ট সাইজ
বাবার অপেক্ষায় পোষা ময়না `জোজো`, ২ সন্তানের শিক্ষা জীবন অনিশ্চিত

কামরুল ইসলাম সেতু ও তার পরিবার

বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে গুলিতে নিহত ব্যবসায়ী কামরুল ইসলাম সেতুর মৃত্যুতে তার কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া দুই সন্তানের ভবিষ্যৎ শিক্ষা জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। স্ত্রী সন্তানদের পাশাপাশি পরিবারের এই অভিভাবকের শূন্যতা স্পর্শ করেছে তার পোষা পাখিকেও। ৪ আগস্ট ঢাকার মিরপুর-১০ এ আন্দোলনকারীদের সাথে পুলিশ সহ বিভিন্ন বাহিনীর সংঘর্ষে আরো অনেকের সাথে গুলিতে নিহত হন সেতু। পিতার অবর্তমানে যেনো সম্ভাবনাময় দু'টি সন্তানের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ মলিন না হয়। 

মিরপুর-১১ নম্বরের একটি বাড়িতে স্ত্রী ও দুই ছেলেমেয়ে নিয়ে থাকতেন ফরিদপুরের রঘুনন্দনপুরের হাউজিং এস্টেটের কামরুল ইসলাম সেতু। সেখানে অনলাইনে তিনি কসমেটিক পণ্যের ব্যবসা করতেন। ৪ আগস্ট নামাজ পড়তে বাসা থেকে বের হয়ে তিনি বাইরে যুদ্ধাবস্থা দেখতে পেয়ে যাচ্ছিলেন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কর্মচারীদের খোঁজে। পথিমধ্যে মাথার পিছনে গুলিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। আর এভাবেই তার মৃত্যুর সাথে খানখান হয়ে যায় তার পরিবারের স্বপ্ন।

একমাত্র মেয়ে উমাইয়া ইসলাম স্নেহা জানান, ওইদিন আব্বু নামাজ পড়ার জন্য বের হন। এরপর ফোন করে আম্মুকে বলেন যে কেউ যেনো বাসা থেকে না বের হয়।
 
একমাত্র পুত্র আলভি বিন ইসলাম জানান, হাসপাতালে বাবার লাশ খুঁজে পাওয়ার পরই শুরু হয় আইনি জটিলতাগুলো। আইনি প্রক্রিয়া ছাড়া তারা লাশ দিতে অস্বীকৃতি জানায়। শেষ পর্যন্ত অনেক কান্নাকাটি আর বুঝিয়ে  শুনিয়ে লাশ পেলেও শর্ত ছিলো যে, কোন মেডিক্যাল সার্টিফিকেট দিবে না।

মেয়ে স্নেহা আরও জানান, বাবা পশুপাখি খুব ভালবাসতেন। রাস্তায় বের হলে পশুদের খাবার দিতেন। তিনি চাইতেন আমি পশু ডাক্তার হই। আমাদের সবসময় বলতেন তোমরা নিজেদের মতো করেই বড় হবে।

আইভি বলেন, দুই সন্তানের মতোই পোষা ময়না 'জোজো'কে স্নেহ করতেন বাবা। তাকে দেখতে না পেয়ে সেও যেনো বাঁধন আর স্নেহার মতো বাবাকে খুঁজছে। 

এদিকে স্ত্রী নিলুফা ইসলাম বলেন, ওর বাবা মারা যাওয়ার পর থেকেই বাবা বাবা বলে ডাকছে ও। ওই যে বলছে- এখন আমার গা শুকিয়ে দিবে কে?

নিলুফা ইসলাম কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমিতো কোন কর্মজীবী নারী নই। আমার স্বামীই ছিলেন একমাত্র উপার্জনক্ষম। এখন এই ছেলেমেয়ে দু'টি কিভাবে তাদের পড়াশোনা চালাবে? বাংলাদেশ কি তাদের মতো দু'টি সম্ভাবনাময় সন্তানকে হারাবে? তিনি এব্যাপারে সরকার সুদৃষ্টি কামনা করেন।

একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার আন্দোলনে হাজারো প্রাণ হারানোদের একজন কামরুল ইসলাম সেতু। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন তিনি। তার অবর্তমানে অর্থকষ্টে যাতে তার ছেলেমেয়েদের শিক্ষাজীবন বিঘ্ন না হয় এটিই এখন তাদের প্রত্যাশা নতুন সরকারের কাছে।

বিভি/এজেড

মন্তব্য করুন: