ঋণের লোভে ঢাকায় এসে ফেরার পথে আটক ৫

বিনা সুদে ১ লাখ থেকে কোটি টাকা ঋণ দিবো কইয়া ঢাকায় নিয়া গেছে। আমরা কি জানি ওইহানে আন্দোলন হইবো। বাস থাইক্যে নামতেও পারি নাই, ওই হানে (শাহাবাগে) যাওয়ার পরই দেখি মারামারি হইতাছে। কয়জন ছাত্ররা আমাগো বাসে ওইঠা কয়জনরে লাঠি দিয়া বারি দিছে, অনেকে মাইরও খাইছে। টাকা তো বড় কথা না বাঁইচা আইছে হেইডাই কথা।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) দুপুর সোয়া ২ টার দিকে উপজেলার জরিনা কলেজ এলাকায় দবির হোসেনের বাসার সামনে কথা গুলো বলছিলেন সদর উপজেলার মালঞ্চ গ্রামের রোকসানা আক্তার। তিনিও বিনা সুদে ঋণ পাওয়া আশায় শাহবাগে গিয়েছিলেন।
ঢাকা লোজজন জমায়েত করার অভিযোগে প্রতারক দবির হোসেন, হাসিনা আক্তার ও দবিরের স্ত্রী চামিলী আক্তার ও সিংগাইরে জহুরা বেগম, দেলোয়ার হোসেনসহ পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিনা সুদে লাখ টাকা থেকে কোটি টাকার ঋণ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সারাদোশের মত মানিকগঞ্জ থেকেও আজকে সকাল ৬ টার দিকে জেলা বিভিন্ন এলাকা থেকে এসব লোকজন জরিনা কলেজের দবিরের ব্সার সামনে জড়ো হন। পরে দবির ও হাসিনা আক্তার আগত মানুষদের সাতটি বাসে করে ঢাকার শাহবাগের উদ্দেশ্য রওনা হয়। শাহাবাগ যাওয়ার পরে পরিস্থিতি খারাপ দেখে ওই বাসে করেই মানিকগঞ্জ ফিরে আসেন তারা।
এরপর জরিনা কলেজে দবির হোসেনে বাড়ি ঘেরাও করে এসব সাধারণ মানুষ। পরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ায় পুলিশ ও সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। ঋণ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশ নামের একটি সংগঠনের ব্যানারে ঢাকার শাহাবাগে অবস্থান কর্মসূচি পালনের জন্য লোকজন জমায়েতের অভিযোগে তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা প্রতারক দবিরকে ঘেরাও করে আটকে রাখে এবং তাদের কাছ থেকে নেওয়া টাকা ফেরত চায়। পরিবেশ উত্তপ্ত হলে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা প্রতারক দবির ও হাসিনাকে আটক করে নিয়ে যায়। বিক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ দবিরের শাস্তির দাবিতে তার বাড়ির সামনে অবস্থান নেন।
ভুক্তভোগী নাজমা বেগম জানান, ড. ইউনূসের একটা সমাবেশ আছে ঢাকায়। সমাবেশ শেষে নিরীহ সাধারণ মানুষকে সুদমুক্ত এক লক্ষ থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ বিতরণ করা হবে। এই বিষয়টা দবির, হাসিনা ও তার স্ত্রী চামিলী আমাদের জানালে আমরা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দবিরের অফিসে এসে দিয়ে যাই। এ সময় আমাদের কাছ থেকে ২৫০ টাকা করে নেওয়া হয়। আজ সকালে জরিনা কলেজ থেকে ছয়টি বাসে আনুমানিক চার শতাধিক নারী-পুরুষ সমাবেশের উদ্দেশ্যে রওনা হই। দবির এলাকার লোক, দবিরকে আমরা আগে থেকেই চিনি এর জন্য তার কথায় আমরা প্রলুব্ধ হয়েছি।
খাদিজা বেগম, লতা সাহা, বিলকিস বেগম, আলো আক্তার নামের ভুক্তভোগীরা বলেন, 'গাড়ি থেকে ঢাকার শাহবাগে নামার পর স্থানীয় লোকজন আমাদের মারধর করে। পুলিশ আমাদের গাড়িগুলো ফিরিয়ে দেয় আমরা মানিকগঞ্জ চলে আসি। আমরা টাকা ফেরত পাইনি। দবিরসহ সবার সুষ্ঠু বিচার দাবি করি।'
এ বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস.এম. আমানুল্লাহ বলেন, 'প্রতারক দবির হোসেন, হাসিনা আক্তার ও দবিরের স্ত্রী চামিলী আক্তারকে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে তিনি জানান।
বিভি/এজেড
মন্তব্য করুন: