• NEWS PORTAL

  • বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

চেয়ারম্যানের অদক্ষতা ও অনিয়মে খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ ও হস্তান্তরিত ২৪ বিভাগে অচলাবস্থা

এইচ এম প্রফুল্ল, খাগড়াছড়ি

প্রকাশিত: ১৭:৩২, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

আপডেট: ১৭:৩২, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ফন্ট সাইজ
চেয়ারম্যানের অদক্ষতা ও অনিয়মে খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ ও হস্তান্তরিত  ২৪ বিভাগে অচলাবস্থা

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জিরুনা ত্রিপুরার অদক্ষতা, দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে পরিষদ ও হস্তান্তরিত ২৪টি বিভাগে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। অর্থবছরের ৭ মাস পার হয়ে গেলেও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের গৃহীত প্রায় ৩৬ কোটি টাকার প্রকল্প এখনো অনুমোদন হয়নি। পরিষদের ফাইলগুলো নড়ছে না। একই অবস্থা পরিষদের হস্তান্তরিত শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসহ ২৪টি বিভাগের। চেয়ারম্যান জিরুনা ত্রিপুরার স্বেচ্ছাচারিতার কারণে পরিষদের সদস্যদের সাথেও টানাপোড়েন চলছে। 

একটি সূত্র জানায়, চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদকে প্রথমে ৬১ কোটি ৫৬ লাখ টাকার বরাদ্দ দেন। পরে সংশোধিত বরাদ্দে প্রায় ২৪ কোটি ৭০ লাখ কর্তন করে ৩৬ কোটি ৮৬ লাখ টাকা করা হয়।
সূত্রটি জানায়, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ প্রায় ৩৬ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করে। কিন্তু অর্থ বছরের অর্ধেকেরও বেশি সময় অতিবাহিত হলেও এখনো প্রকল্প অনুমোদন করা যায়নি। ফলে উন্নয়ন প্রকল্প আদৌ বাস্তবায়ন সম্ভব হবে কিনা এ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। 

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের ফাইলগুলো স্তুপ হয়ে পড়ে রয়েছে। চেয়ারম্যানের কাছে জরুরি ফাইলও নিয়ে গেলে রেখে যাওয়ার নির্দেশ দেন। 

সূত্রটির মতে, প্রায় ৮ লাখ ৩০ হাজার ব্যয়ে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ ডেক্স ও ওয়াল ক্যালেন্ডার ছাপলেও চেয়ারম্যান জিরুনা ত্রিপুরার ছবি না থাকায় ক্যালেন্ডারটি পুনরায় ছাপতে হয়েছে। এতে সরকারের বিপুল অর্থ অপচয় হয়েছে। 

গত বছরের ৭ নভেম্বর রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব তাসলীমা বেগম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দোসর বলে পরিচিত জিরুনা ত্রিপুরাকে চেয়ারম্যান এবং আরও ১৪ জন সদস্য নিয়ে পুনর্গঠন করা হয় অন্তর্বর্তীকালীন খাগড়াছড়ি পার্বত্য পার্বত্য জেলা পরিষদ। এর তিনদিন পর ১০ নভেম্বর নবনিযুক্ত সদস্যদের নিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেন চেয়ারম্যান জিরুনা ত্রিপুরা।

কিন্তু মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে জিরুনা ত্রিপুরার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগের পাহাড় জমে। বড়দিনের খাদ্যশস্য বিতরণে অনিয়ম, বরাদ্দ পাওয়া এক হাজার  মে.টন চাউল ও গম বিতরণ না করে আত্মসাতের চেষ্টা, শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণের নামে পরিষদ তহবিল থেকে ৩৫ লাখ উত্তোলন করে বিতরণ না করা, উন্নয়ন প্রকল্পের জামানত থেকে উৎকোচের জন্য ফাইল আটকিয়ে রাখা, পরিষদ সদস্যদের মতামত উপেক্ষা করে খেয়াল-খুশিমত সিদ্ধান্ত গ্রহণ, নিজ দপ্তর ও হস্তান্তরিত ২৪ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তুই-তোয়াক্কা ব্যবহার, যখন-তখন অফিস আদেশ জারী করে খোদ পরিষদ সদস্যদের হেনস্তা, ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কাজে যত্রতত্র গাড়ী ব্যবহার করে সরকারী অর্থ অপচয়, বিভিন্ন সরকারী কর্মসূচীতে অসংগলগ্ন আচরণ, স্বজাতপ্রীতি ও নিকটাত্মীয়দের পুনর্বাসনসহ নানা অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য সাথোয়াইপ্রু মারমা বলেন, চেয়ারম্যানের স্বেচ্ছারিতা চরমে পৌঁছেছে। এর নিন্দা জানানোর ভাষা জানা নেই। 

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের অপর সদস্য নিটোল মনি চাকমা বলেন, শুরু থেকে চেয়ারম্যানের সাথে সদস্যদের টানাপোড়েন চলছে। প্রায় ঝগড়া চলে চেয়ারম্যানের সাথে সদস্যদের। চেয়ারম্যানের কারণে জেলা পরিষদের ইমেজ সংকটে পড়ছে। 

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, চেয়ারম্যান গত ২৯ জানুয়ারি থেকে অফিসে আসেন না। বাসায় ফাইল নিয়ে গেল ও রেখে যেতে বলেন। 

এ বিষয়ে চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ করতে অফিসে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। আর মুঠোফোনে সংযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

বিভি/এজেড

মন্তব্য করুন: