পূর্ব শত্রুতার জেরে ইউপি সদস্যকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ

নরসিংদী সদর উপজেলার আলোকবালী ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের সদস্য ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে পূর্ব শত্রুতার জেরে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে কুপিয়ে হত্যার করার অভিযোগ উঠেছে। এ সময় ভুক্তভোগীর ভাইকেও কুপিয়ে আহত করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে নরসিংদী সদর উপজেলার আলোকবালী উত্তরপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নরসিংদী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমদাদুল হক।
নিহত আমির সরকার (৩০) আলোকবালী ইউনিয়নের ৩ নং সদস্য ও সাবেক ইউনিয়ন শাখা ছাত্রলীগের (নিষিদ্ধঘোষিত) সাধারণ সম্পাদক। তিনি আলোকবালী গ্রামের উত্তরপাড়ার আব্দুল হক মিয়ার ছেলে। ভুক্তভোগীর লাশ উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহত রফিকুল ইসলামকে (৫৫) নরসিংদী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ ও নিহতের স্বজনরা জানায়, ২০২১ সালে একই ওয়ার্ডে নিহত আমির সরকার ও আব্দুল জব্বার ইউপি সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে এবং আমির সরকার বিজয়ী হয়। এছাড়াও তাদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ ছিল। বিএনপির কর্মীর আব্দুল জব্বার মিয়ার (৫৬) সাথে ইউপি নির্বাচন নিয়ে রোধ থাকায় ৫ আগস্টের পর হতে এলাকা ছাড়া ছিলেন ইউপি সদস্য আমির হোসেন সরকার। প্রবাসফেরত ভাইকে দেখতে মঙ্গলবার বাড়ি ফিরেন তিনি। এসময় জব্বার ও তার লোকজন দেশিয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমির হোসেনের ওপর হামলা চালায়। এতে ধারাল অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত হয় আমির হোসেন। স্বজনরা গুরুতর আহতাবস্থায় তাকে উদ্ধার করে স্পীডবোটে করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নদীতে কচুরিপানার জট থাকায় হাসপাতালে নিতে দেরি হওয়ায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয় বলে জানান স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। মরদেহ সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। একই গ্রামের স্থানীয় বিএনপির কর্মীর আব্দুল জব্বার আলোকবালী ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুল কাইয়ুম মিয়ার কর্মী ।
ভুক্তভোগীর ভাই সোহরাব মিয়া (২৭) বলেন, ‘গতকাল সোমবার রাতে আমার বড় ভাই রফিকুল ইসলাম ৯ বছর পর মালেশিয়া থেকে দেশে আসেন। ঢাকার বিমানবন্দর থেকে রাতে বাসায় নিয়ে আসেন আমির সরকার। পরে, আজ মঙ্গলবার দুপুরে আমির সরকার ও রফিকুল ইসলামকে কুপিয়ে জখম করে বিএনপি নেতা জব্বার, তারা মিয়া (২৮), আমিরুল (২৬), শামসুল হকের ছেলে আলী (২৫), জিহাদ (২২), খোকন মিয়াসহ (২৬) সহ ১০-১২ জন। আমরা তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
ভুক্তভোগীর আরেক ভাই জুয়েল মিয়া বলেন (৪৬) বলেন, ‘নির্বাচনে পরাজিত হয়ে বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুল কাইয়ুম মিয়ার নির্দেশে তার কর্মী জব্বার ও তার লোকজন আমির সরকারকে কুপিয়ে হত্যা করে। জব্বার মিয়া একই ইউনিয়নের নেকজানপুর গ্রামের ৩ জন হত্যার মামলার এজহারভুক্ত আসামী।’
নরসিংদী সদর হাসপাতালের ডিউটি ডাক্তার সজিব সাহা বলেন, ‘আমির সরকারকে মৃত অবস্থায় আমাদের কাছে নিয়ে আসা হয়েছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে মারা গেছে। তার গায়ের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে।’
তবে, অভিযুক্ত আব্দুল জব্বার মিয়াকে কল দেওয়া হলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
নরসিংদী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোহাম্মদ এমদাদুল হক বলেন, ‘পূর্ব শত্রুতা ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে বিরোধ ছিলো। সে বিরোধ থেকে আমির সরকারকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’
বিভি/পিএইচ
মন্তব্য করুন: