পাঁচ বছর পর বাবা-মায়ের কাছে ফিরলেন সামাউন আলী

পাঁচ বছর পর ফিরে এসেছেন সামাউন আলী
ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে অপহরণের পাঁচ বছর পর বাবা-মায়ের কাছে ফিরেছে সামাউন আলী (২০) নামে এক তরুণ। শনিবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে বালিয়াডাঙ্গী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) (তদন্ত) দিবাকর অধিকারী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) দিবাগত রাতে অপহরণকারীরা তাকে বালিয়াডাঙ্গী চৌরাস্তায় ফেলে রেখে যায়। পরে সেখান থেকে পুলিশ ও সামাউন আলীর স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে।
সামাউন আলী উপজেলার ভানোর ইউনিয়নের গোগবস্তি গ্রামের আব্দুস সোবহানের ছেলে।
সামাউন আলীর পরিবারের সদস্যরা জানান, পাঁচ বছর আগে চাকরি দেওয়ার কথা বলে সামাউনকে ঢাকায় নিয়ে যান তার চাচাতো ভাই জমিরুল ইসলাম ওরফে মিঠুন। ঢাকায় যাওয়ার কিছুদিন পর থেকে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। পরে একাধিকবার ছেলেকে ফেরত চেয়ে উদ্ধারের চেষ্টা করেন সামাউনের বাবা সোবহান। তাকে ফেরত পাঠানোর কথা বলে মিঠুন কয়েক দফা টাকাও নিয়েছেন সামাউনের বাবার কাছ থেকে, কিন্তু তার ছেলেকে আর ফেরত দেননি।
ছেলের খোঁজে ব্যর্থ হয়ে সাত মাস আগে ঠাকুরগাঁও আদালতে মামলা করেন সোবহান। এতে মিঠুন ও তার বাবা আব্দুল খালেককে আসামি করা হয়। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে বালিয়াডাঙ্গী থানার পুলিশকে এটি এজাহার হিসেবে রুজু এবং সামাউনকে উদ্ধারের নির্দেশ দেন।
সোবহান বলেন, ‘সালিস বসিয়ে ছেলেকে ফেরতে চেয়েছি। আসামিরা কোনো কথা শোনেনি। মামলা করার পর পুলিশ যখন আসামিদের ধরতে চাইল, তখন তারা ছেলেকে ফেরত দিল।’
সামাউন বলেন, ‘তাকে নরসিংদী জেলার কোনো এক গুদামে রাখা হয়েছিল। তিনি কাজ করতেন, বেতন তুলতেন অন্য কেউ। কিছুদিন এভাবে চলার পর সবার সঙ্গে তার যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর কোথায় ছিলেন, কী করছিলেন—কিছুই বলতে পারছেন না।’
তবে তাকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
বালিয়াডাঙ্গী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) (তদন্ত) দিবাকর অধিকারী বলেন, ‘আদালতের নির্দেশনা পাওয়ার পর মামলার তদন্ত শুরু করি। পুলিশের তৎপরতা অপহরণকারীরা বুঝতে পেরে ছেলেটিকে ঘটনাস্থলে ছেড়ে পালিয়েছে। শনিবার বিকালে আমরা আইনি প্রক্রিয়া শেষে ছেলেটিকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছি। ছেলেটিকে অসুস্থ মনে হয়েছে, তার চিকিৎসার প্রয়োজন।’
বিভি/এজেড
মন্তব্য করুন: