কুমিল্লায় স্বাধীনতা দিবসের সভায়
এমপিকে রাজাকারের ছেলে ও ভাতিজা বললেন উপজেলা চেয়ারম্যান

কুমিল্লার বরুড়ায় একই মঞ্চে বক্তব্য দিতে গিয়ে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যকে রাজাকারের ছেলে ও ভাতিজা বললেন একই দলের উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান। এ ঘটনায় সমাবেশস্থলসহ উপজেলাজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়।
শনিবার (২৬ মার্চ) সন্ধ্যায় মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের সংবর্ধনা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে উপজেলা চেয়ারম্যান এ এন এম মইনুল ইসলাম বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেবার সময় এ মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কুমিল্লা ৮ বরুড়া আসনের সংসদ সদস্য নাছিমুল আলম চৌধুরী নজরুল।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপজেলা চেয়ারম্যান এ এন এম মইনুল ইসলাম বলেন, আজ স্বাধীনতার ৫০ বছর সুবর্ণজয়ন্তীতে স্মরণ করি স্বাধীনতার মহান স্থপতি, স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ৩০ লক্ষ শহীদের। তিনি স্মরণ করেন বরুড়া উপজেলা মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা চারবারের সাবেক সংসদ সদস্য বরুড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের আমৃত্যু সভাপতি আবদুল হাকিম তথা আমার পিতাকে।
আরও পড়ুন:
- বরিশাল বিএনপিতে সরোয়ার-যুগের অবসান, পাল্টাপাল্টি গ্রুপিং এ অস্বস্তিতে কর্মীরা
- ‘দেশের মানুষের সকল হতাশাকে আশায় পরিণত করবে এবি পার্টি’
তিনি বলেন, আমি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ও মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা স্বাধীনতাবিরোধী মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যাকারী, মা বোনদের ইজ্জত লুণ্ঠনকারী, বরুড়ার শান্তি বাহিনীর প্রধান রাজাকার কুট্টু মিয়া ও তার ভাই সিএসপি অফিসার সামসুল আলমের প্রতি নিন্দা জানায়। সেই সঙ্গে এই রাজাকারের সন্তান ও ভাতিজার হাত থেকে মুক্তিযোদ্ধার সংবর্ধনা নিলে কিভাবে শহীদদের আত্মা শান্তি পাবে সেই প্রশ্ন তোলেন।
উল্লেখ্য, কুট্টু মিয়া হলেন বর্তমান এম পি নাছিমুল আলম চৌধুরী নজরুল তার পিতা আর সি এস পি অফিসার সামসুল আলম, সাংসদ নজরুলের চাচা।
এ দুজনের নামের তালিকা বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা ওয়েল ফেয়ার ফাউন্ডেশন বইয়ে লিপিবদ্ধ আছে বলে তাদের নামের তালিকা উপস্থিত সবাইকে খুলে দেখান উপজেলা চেয়ারম্যান।
তিনি বলেন, এই বইয়ে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার, আলবদর বাহিনী, শান্তি বাহিনীর নামের তালিকা আছে। তিনি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের সহযোগিতা চেয়েছেন বরুড়ার মাটি থেকে স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার মুক্ত করার জন্য।
এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকা সংসদ সদস্য নাছিমুল আলম চৌধুরী নজরুল অবাক ও বিস্ময় দৃষ্টিতে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের দিকে তাকিয়ে থাকেন। কোন প্রকার প্রতিক্রিয়া দেখাননি।
স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে বরুড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ এন এম. মঈনুল ইসলামের নেতৃত্বে শহীদ মিনারে ও বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে ওই সভা হয়।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মীর রাশেদুজ্জামান রাশেদ, আরো উপস্থিত ছিলেন অফিসার্স ইনচার্জ ইকবাল বাহার মজুমদার, পৌর মেয়র বখতিয়ার হোসেন বক্তার, জেলা পরিষদ সদস্য মোঃ জসীম উদ্দীন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কামাল হোসেন, কৃষি অফিসার মোঃ নজরুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন লিংকনসহ আরও অনেকে।
বিভি/এজেড/এসএমপি
মন্তব্য করুন: