এক নির্বাচনের ফলাফল তিন রকম!

সংবাদ সম্মেলনে আলমগীর হোসেন ও ঘষামাজা করার ফলাফল
কুড়িগ্রামের রাজারহাটের বিদ্যানন্দ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ফলাফল সীট ঘষামাজা করে নৌকা প্রার্থীকে বিজয়ী করার অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন প্রথম ফলাফলে বিজয়ী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আলমগীর হোসেন।
মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) দুপুরে নিজ বাড়িতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি অভিযোগ করে বলেন, গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর বিদ্যানন্দ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের ফলাফলে উক্ত ইউনিয়নের তৈয়বখাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোট কেন্দ্রে ভোট গণনা করে কর্তব্যরত প্রিজাইডিং অফিসার ও রাজারহাট মহিলা ডিগ্রী কলেজের সহকারী অধ্যাপক রাশেদুল ইসলাম প্রার্থীদেরকে ফলাফল সীট প্রদান করেন।
ফলাফল সীটে ওই কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী তাইজুল ইসলাম ১৭৫ ভোট এবং আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আলমগীর হোসেন ৩১০ ভোটে জয় লাভ করেন। পরে ওই রাতে রাজারহাট উপজেলা রিটার্নিং অফিসার ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলামের নিকট ফলাফল জমার পূর্বে প্রিজাইডিং অফিসার ফলাফল সীট ঘষামাজা করে নৌকার প্রার্থী তাইজুল ইসলামের ১ ভোট বাড়িয়ে ১৭৬ ভোট লিখে জমা প্রদান করেন। এতে করে ওই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ফলাফল ৫১৬৬ ভোটে ড্র হয়ে যায়। এনিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী আলমগীর হোসেন হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দাখিল করেন যা বিচারাধীন রয়েছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানান।
এছাড়া তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নিকট অভিযোগ করায় তার নির্দেশে রংপুর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা জি এম সাহাতাব হোসেন তদন্ত করে ফলাফলে নিয়ে অনিয়ম ও প্রিজাইডিং অফিসারের কর্তব্যে অবহেলার সত্যতা স্বীকার করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
এর প্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে গত ২৭ মার্চ উক্ত কেন্দ্রের ভোট পুনঃগণনার আয়োজন করেন রিটার্নিং অফিসার নজরুল ইসলাম। অসুস্থতার কারণে বিদ্রোহী প্রার্থী আলমগীর হোসেন সময়ের প্রার্থনা করলেও সময় না দিয়েই তার অনুপস্থিতিতে রিটার্নিং অফিসার ভোট পুনঃগণনার ফলাফলে আবারও মোটরসাইকেল প্রতীকের ২টি ভোট কমিয়ে দিয়ে ৩০৮ ভোট দেখিয়ে নতুন ফলাফল সীট অনুযায়ী নৌকা প্রতীকের প্রার্থী তাইজুল ইসলামকে বিজয়ী ঘোষণা করেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আলমগীর হোসেন প্রথম ফলাফল সীট বহাল রাখার দাবি জানান এবং নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশে অনিয়মে জড়িত রিটার্নিং অফিসার ও প্রিজাইডিং অফিসারের বিচার দাবি করেন।
প্রিজাইডিং অফিসার রাশেদুল ইসলাম জানান, প্রথমে ভুল বশতঃ ফলাফল সীটে নৌকা প্রতীকের ১ ভোট কম হয়েছিলো পরে সংশোধন করে ১৭৬ ভোট করে দিয়েছি। পুনঃগণনায় বিদ্রোহী প্রার্থীর মোটরসাইকেল প্রতীকে সিল না দিয়ে টিপ সই দেওয়া ২টি ভোট বাতিল হওয়ায় তার ভোট কমে গেছে বলে জানান এই নির্বাচন কর্মকর্তা।
বিষয়ে জানতে চাইলে রিটার্নিং অফিসার ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানান, যা করা হয়েছে তা নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী করা হয়েছে। আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার তদন্ত প্রতিবেদনে অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন। এবিষয়ে তিনি বলেন, আই ডন্ট নো?
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুরে তাসনিম বলেন, ভোটের ফলাফল সীট ভিন্ন রকম হওয়ার বিষয়ে প্রিজাইডিং অফিসার ও রিটার্নিং অফিসার বলতে পারবেন। নির্বাচনী আইন-শৃঙ্খলার বিষয়টি আমি দেখেছি।
বিভি/এইচএস
মন্তব্য করুন: