এক যুগ পর মুক্তি পেলো হারিয়ে যাওয়া মেয়েটি

এক যুগ আগে মাত্র ১০ বছর বয়সে হারিয়ে যাওয়া শিশু হিসেবে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে পাঠিয়ে দিয়েছিলো সেফ হোমে। অবশেষে আইনি প্রক্রিয়ায় লিগ্যাল এইড সার্ভিসেসের মধ্যস্ততায় আদালতের মাধ্যমে তার মুক্তি মিলেছে।
এখন তার বয়স ২২ বছর। ঠিকানাহীন মেয়েটির আশ্রয় জুটেছে একজন সহৃদয়বান ব্যক্তির পরিবারে। অবশ্য মেয়েটিকে পূনর্বাসনে সমাজসেবা অধিদপ্তর কাজ করছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা মেয়েটির খোঁজখবরও রাখবেন বলে জানিয়েছেন।
জানা গেছে, আজ সোমবার (১৮ এপ্রিল) দুপুর দেড়টার দিকে নিজ জিম্মায় মেয়েটিকে মুক্তি দেন বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১ নম্বর আমলী আদালত শফিকুল ইসলাম মেয়েটির জামিন মঞ্জুর করেন।
ফরিদপুরের নারী ও শিশুকিশোরী হেফাজতিদের নিরাপদ আবাসন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক তাহমিনা জামান জানান, মেয়েটি সুস্থ্য ও স্বাভাবিকভাবে নিজেই ওকালতনামায় নাম স্বাক্ষর করে। এরপর আদালত তাকে মুক্তি দেন।
আরও পড়ুন:
- বাংলাদেশ-দ.কোরিয়া কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর যৌথভাবে উদযাপন করবে
- সন্ধ্যা হতেই মাটি ফুঁড়ে বেরোলো আগুন, এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্য
তিনি জানান, ২০১০ সালে মেয়েটি নিরাপদ হেফাজতে আসার পর মাঝখানে অসুস্থ্য ছিলো। তাকে গাজীপুর ও ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা দেওয়া হয়। ২০১৬ সালে আবার সে ফরিদপুরের নিরাপদ হেফাজত কেন্দ্রে আসে। সে নিজের নামসহ সামান্য কিছু লিখতে পারে। কিছু হাতের কাজও শিখেছে। তাকে তার কাজের উপযুক্ত স্থানে পূনর্বাসনের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা আশা করছি মেয়েটি একটি সুন্দর ভবিষ্যত লাভ করবে।
বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড সার্ভিসেস ব্লাস্টের ফরিদপুর জেলা শাখার সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট শিপ্রা গোস্বামী জানান, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সহৃদয়বান ব্যক্তি মেয়েটির দ্বায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন। মেয়েটি আপাতত সেখানেই গিয়েছে। আমরা তার খোঁজখবর রাখবো। তিনি জানান, সম্প্রতি সমাজসেবা কার্যালয়ের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরে ব্লাস্টের নিজস্ব আইনজীবী অ্যাডভোকেট অর্চণা দাস মেয়েটিকে স্বাভাবিক জীবনে মুক্ত করতে কাজ শুরু করেন। এরপর আইনী প্রক্রিয়া শেষে আজ সে মুক্তি পায়। তবে জীবনের দীর্ঘ সময় পরিবারের আদর ভালবাসা থেকে বঞ্চিত মেয়েটির স্বাভাবিক মনোবিকাশ ঘটেনি। এজন্য সে কিছুটা ভারসাম্যহীনতার মধ্যে রয়েছে। এজন্য মুক্ত হয়েও আজ তার মাঝে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।
ফরিদপুর জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. নুরুল হুদা বলেন, এভাবে পরিবার থেকে হারিয়ে যেয়ে অনেক মেয়েই এখানে আসে। তাদের আবার উপযুক্তভাবে পূনর্বাসনেরও চেষ্টা করা হয়। তিনি বলেন, এই দীর্ঘ সময়েও মেয়েটির সন্ধানে কেউ আসেনি।
বিভি/এইচএ/এএন
মন্তব্য করুন: