ক্রিকেটার তৈমুর হত্যা: স্ত্রীকে পাঁচদিন রিমান্ডে চায় পুলিশ

কাউসার আলম চৌধুরী তৈমুর
গরম পানিতে ঝলসে ফেনীতে ক্রিকেটার কাউসার আলম চৌধুরী তৈমুর (৪৫) কে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার তাঁর স্ত্রী খাদিজা বিনতে শামস ওরফে রূপা চৌধুরীকে পাঁচদিনের রিমান্ডে চেয়েছে পুলিশ। রিমান্ডের আবেদন করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফেনী থানার এসআই আব্দুর রহিম। সোমবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে ফেনীর আদালতে এ আবেদন করা হয়েছে। এ বিষয়ে মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) শুনানি করা হবে।
জানা গেছে, নিহত তৈমুর স্থানীয় ঐতিহ্যবাহী ‘ফ্রেন্ডশিপ ক্রিকেট ক্লাব’র সাবেক খেলোয়াড় ছিলেন। তিনি ঘটনার এক সপ্তাহ পর রবিবার দুপুরে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
ফেনী মডেল থানার ওসি মো. নিজাম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, নিহতের ছোট ভাই তানজুর চৌধুরী শনিবার দুপুরে তৈমুরের স্ত্রী রূপা চৌধুরীকে আসামি করে হত্যাচেষ্টা মামলা করেন। রবিবার সকালে শহরের তাকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি বলেন, প্রথমে হত্যাচেষ্টা মামলা হলেও ভিকটিমের মৃত্যু হওয়ায় এখন সেটি হত্যা মামলায় রূপান্তর করা হবে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মামলার বাদী নিহতের ভাই তানজুর চৌধুরী দাবি করেন, মৃত্যুশয্যায় তৈমুর একটি ‘জবানবন্দি’ দিয়ে গেছেন। সেখানে তার মৃত্যুর জন্য স্ত্রীকে দায়ী করেছেন। ঢাকার বার্ন ইন্সটিটিউটের একজন চিকিৎসক সেটি লিপিবদ্ধ করেছেন। আইসিইউতে মোবাইল বা অন্য কোনো ডিভাইস নিয়ে যাওয়া যায় না। তাই চিকিৎসক নিজের হাতে তৈমুরের কথা লিখেছেন। লেখার পর সেখানে তৈমুরের আঙ্গুলের ছাপ ও স্বাক্ষর নেওয়া হয়। সেটি এখনও পরিবারের কাছে আছে। তদন্তের স্বার্থে পুলিশকে তা দেওয়া হবে।
তানজুর চৌধুরী আরও অীভযোগ করেন, ভাই-ভাবির সংসারে দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক কলহ চলছিলো। তাদের দুটি মেয়ে রয়েছে। গত সোমবার ভোর ৬টার দিকে তাদের ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে ভাইয়ার চিৎকার শুনে পাশের ফ্ল্যাট থেকে দৌড়ে যাই। গিয়ে দেখি, গরম পানি ঢেলে ভাইয়ার শরীর ঝলসে দেওয়া হয়েছে। তখন ফ্ল্যাটে ভাই, ভাবি ও তাদের দুই মেয়ে ছাড়া আর কেউ ছিল না।”
পরে তাকে ফেনী জেনারেল হাসপাতাল ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তার শরীরের ৬০ শতাংশ ঝলসে যায় বলে চিকিৎসকরা জানান। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই তিনি মারা যান।
পুলিশ হেফাজতে থাকা তৈমুরের স্ত্রী রূপা তার বিরুদ্ধে আনা এমন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই। আমাকে ফাঁসানোর জন্য কেউ এ চক্রান্ত করেছে। ওইদিন সেহেরি খাওয়ার পর আমি ঘুমিয়ে যাই। তার গায়ে গরম পানি কিভাবে পড়েছে তা আমি জানি না।’
বিভি/আরআই/এইচএস
মন্তব্য করুন: