হাসপাতালে জায়গা নেই, গাছতলায় চিকিৎসা নিচ্ছেন ডায়রিয়া রোগীরা

ফরিদপুরে ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। রবিবার (২৪ এপ্রিল) সকাল থেকে ৬ ঘণ্টায় ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৭৮ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী। বর্তমানে এই হাসপাতালটিতে ডায়রিয়ায় আক্রান্তদুই শতাধিক রোগী ভর্তি রয়েছেন। যা গত কয়েক বছরের মধ্যে দেখা যায়নি।
এদিকে, হাসপাতালের বেড, মেঝে ও বারান্দাতেও সংকুলান না হওয়ায় হাসপাতাল ভবনের সামনের গাছতলাতেও রোগীদের চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে। রোগীদের চাপ বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সকল স্টাফদের ছুটি বাতিল করেছেন।
জানা গেছে, একশো শয্যার ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে বেডের সংখ্যা মাত্র ১০টি। সেখানে এই হাসপাতালে বর্তমানে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি রোগীর সংখ্যাই দুইশতাধিক ছাড়িয়েছে। এর ফলে হাসপাতালটির ডায়রিয়া ওয়ার্ড ছাড়িয়ে সাধারণ ওয়ার্ডে অন্য রোগীদের চিকিৎসা সেবা সাময়িক স্থগিত করে এসকল ওয়ার্ডেও ডায়রিয়া রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এই বিপুল সংখ্যক রোগীকে সেবা দিতে গিয়ে নার্স ও চিকিৎসকদের হিমশিম খেতে হচ্ছে বলে জানান তিনি।
ফরিদপুরের সির্ভিল সাজন ডা. ছিদ্দীকুর রহমান জানান, গত দেড় মাস ধরে জেনারেল হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগী আসছে। তবে ফরিদপরে সম্প্রতি দুই দফায় ডায়রিয়ায় সংক্রমনের হার বেড়েছে। এর মধ্যে এবারের আক্রান্তের হার গত কয়েক বছরের তুলনায় অনেক বেশি।
তিনি বলেন, এখন ডায়রিয়া রোগী গত কয়েক বছরের তুলনায় অনেক বেশি। রোগী আসছে প্রতি মুহুর্তে। সাধ্যমতো তাদের সেবা দিয়ে যাচ্ছি। চিন্তার কারণ নেই। এ রোগীদের দুই থেকে তিন দিন ঠিকমতো যত্নে রাখলে ভাল হয়ে যায়।
সিভিল সার্জন হাসপাতালে রোগীদের ভিড়ের বিষয়ে তিনি বলেন, ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগী কিছু ভর্তি নিলে এখানের চাপ অনেকটা কমে যেতো। রোগীরাও আরো উন্নত ও ভালভাবে সেবা পেতো।
এদিকে, ফরিদপুর সদর জেনারেল হাসপাতালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রবিবার সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ডায়রিয়ায় সমস্যা নিয়ে হাসপাতালটিতে নতুন করে ভর্তি হয়েছেন ৭৮ জন। এছাড়া এর আগে ভর্তি ছিলো আরো ১৪১ জন। রোগীদের চাপ বেড়ে যাওয়ায় প্রতিষ্ঠানটির কর্তৃপক্ষ সকল স্টাফদের ছুটি বাতিল করেছেন। হাসপাতালটিতে ডায়রিয়া ওয়ার্ড ছাড়াও আশেপাশের সকল ওয়ার্ডে এখন এই রোগ নিয়ে ভর্তি হচ্ছে রোগী।
রোগীর স্বজনেরা জানালেন, প্রচুর রোগী আসছেন। তাই কাঙ্খিত চিকিৎসা সেবা পাচ্ছি না। সরকারি ঔষধ সরবরাহ করা হচ্ছে কম। রোগীকে সেলাইন দেবে তার স্ট্যান্ড পর্যন্ত নেই। বাধ্য হয়ে সেলাইন গাছে বা হাত দিয়ে উঁচু করে রাখতে হচ্ছে।
হাসপাতালের ডায়রিয়া রোগীদের সেবার কাজে নিয়োজিত সেবিকা আমেনা খাতুন জানালেন, ‘রোগী আসছে প্রচুর। জায়গা দিতে পারছি না। নিরুপায় হয়ে অনেকেই ফ্লোর, বারান্দা আবার অনেকেই গাছতলায় সেবা নিচ্ছেন। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি সেবা নিশ্চিত করতে।’
বিভি/এইচএ/এইচকে
মন্তব্য করুন: