বিধি ভেঙে স্কুলের গাছ নিধন, অধ্যক্ষ এবং সভাপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়েই গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার রামদিয়া শ্রীকৃষ্ণ শশি কমল বিদ্যাপীঠের গাছ কেটে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক শরিফুল ইসলাম ও বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি বায়েজিদ আহমেদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় কবীর শরীফ নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। 
অভিযোগে বলা হয়েছে, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শরিফুল ইসলাম ও বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি বায়েজিদ আহমেদ বিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে ১০টি বিশালাকৃতির পুরানো মেহগনি ও চম্বল গাছ কেটে ২ লাখ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন। তারা সেখানে রাস্তা নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী কোনো সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের গাছ কাটতে হলে প্রশাসনের অনুমতি নিতে হয়। প্রশাসনের কোন অনুমতি না নিয়ে এসব গাছ কাটা হয়েছে। ফলে বিদ্যালয়ের সৌন্দর্য ও পরিবেশ নষ্ট হয়েছে। এতে শিক্ষার্থী-অভিভাবক ও এলাকার সাধারণ জনগণের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে বলেও ওই অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
গোপালগঞ্জ জেলা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন আনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গাছ কাটতে হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, শিক্ষা কর্মকর্তা ও বন বিভাগের কাছে লিখিত আবেদন করতে হয়। সংশ্লিষ্ট বিভাগ অনুমোদন দিলেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গাছ কাটা যাবে।
অভিযোগকারী কবীর শরীফ বলেন, এখানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অমান্য করা হয়েছে। কোন প্রকার অনুমতি না নিয়েই প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি গাছ কেটেছেন।
অনুমতি ছাড়া গাছ কাটার কথা স্বীকার করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘স্কুলের মধ্যে পাকা রাস্তা করার জন্য ম্যানেজিং কমিটির সাথে আলোচনা ও রেজুলেশন করে গাছগুলো কাটা হয়েছে। গাছগুলো বিক্রি করা হয়নি। গাছ দিয়ে স্কুলের আসবাবপত্র তৈরী করা হবে। শুধু গাছের ডালপালা বিক্রি করে ৯৮ হাজার টাকা ব্যাংকে রাখা হয়েছে।’
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি বায়জিদ আহমেদ বলেন, ‘স্কুলের বেঞ্চ-টেবিল ও আসবাবপত্র তৈরী করার জন্য ম্যানেজিং কমিটির লোকজন এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে পরামর্শ করে রেজুলেশনের মাধ্যমে গাছগুলো কাটা হয়েছে। তবে গাছগুলো বিক্রি করা হয়নি। একটি মহল আমাদের সুনাম ক্ষুন্ন করার জন্য অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। তবে তিনিও প্রশাসনের কোন প্রকার অনুমতি ছাড়াই গাছ কাটার কথা জানিয়েছেন। ’
উপজেলা বন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘গাছ কাটার ব্যাপারে আমাদের কাছে কেউ কোন আবেদন করেনি। বিষয়টি আমার জানা নেই।’
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহেদী হাসান জানান,‘ বিধিবহির্ভূতভাবে গাছ কাটা হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
বিভি/কেএস
মন্তব্য করুন: