মধ্য জুনে বাজারে উঠবে উত্তরের হাঁড়িভাঙা

উত্তরের গাছে দুলছে হাঁড়িহাঙা। এলাকায় ছোট-বড় আম বাগানে ভড়ে গেছে গ্রামগুলো। বাগানে আমের আকার বড় হতে শুরু করেছে। আরো দু’টি নতুন জাত পরিক্ষামূলকভাবে চাষ হচ্ছে। যদিও আবহাওয়াজনিত কারনে এবছর হাঁড়িভাঙার ফলন কমলেও সব মিলিয়ে পৌনে ৫শ’ কোটি টাকা মূল্যের আম বিক্রির আশা সংশ্লিষ্টদের।
বাগানে থোকায় থোকায় হাঁড়িভাঙা বাতাসে দোল খাচ্ছে। দেখেই যেন চোখ জুড়িয়ে যায়। মধ্য জুনেই বাজারে উঠবে এই আম। আমচাষীরা বলছেন, গেল ১৫ বছরে হাঁড়িভাঙা দখল করেছে উত্তরাঞ্চলের বিস্তৃর্ণ এলাকা। স্বাদ, গন্ধে অতুলনীয় এই আম গোটা দেশে পরিচিতি পেয়েছে। পরিণত হয়েছে তাদের অর্থকারী ফসলে।
জেলার মিঠাপুকুর, বদরগঞ্জ ও সদর উপজেলায় গড়ে উঠেছে কয়েকশ’বাগান। গুণে, মানেও বেশ। হাঁড়িভাঙার জীবনমান কম হওয়ায় সংরক্ষণ নিয়ে দুশ্চিন্তায় চাষিরা। মিঠাপুকুরের ময়েনপুর ইউনিয়নের আম চাষি শাহিনুল ইসলাম বকুল, আমিরুল ইসলাম, মাসুদ মিয়াসহ অনেকেই জানিয়েছেন, হাঁড়িভঙা আম তাদের ভাগ্য উন্নয়নের চাবি। ধানের জমিতে আম চাষ করে লাভবান হয়েছেন তারা। চাষপদ্ধতির পরিবর্তন করেছেন তারা। তাদেও এই দেখানো পথে এগিয়ে যাচ্ছেন এখন অনেকেই। তবে কষ্টে লাগানো বাগানগুলোকে বেশি মুনাফার আশায় গলা টিপে হত্যা করছে আম ব্যবসায়ীরা। চড়াদামে বাগান কিনে তারা ফলন বৃদ্ধিতে স্প্রে করছে হরমন। ফলে হাঁড়িভাঙা আম গাছের আযু কমে যাচ্ছে। এক মৌসুমে গোটা গাছজুরে আম আসলেও পরের মৌসুমে গাছে ধরছেনা ফল। তাই আম চাষ ধওে রাখতে বিকল্প হিসাবে ব্যানানা ম্যাংগো, গৌরমতিসহ বারি-৪ জাতের আম চাষ শুরু করেছেন তারা। হাঁড়িভাঙার পরেই বাজারে পাওয়া যাবে গৌরমতি, এরপর ব্যানানা ম্যাংগো যা ভোক্তাদেও চাহিদা পুরোন করবে। প্রতি বছরেই এই নতুন তিন জাতের আমের এলাকা বাড়ছে।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক শেখ এমদাদ হোসেন জানিয়েছেন, প্রকৃতিগত কারনে চলতি বছর আমের ফলন কম হলেও কমবেনা দাম। একারনে মৌসুমের শুরু থেকে আম চাষিদেও নানাভাবে সহযোগিতা করেছে কৃষি বিভাগ। চলতি মৌসুমে কৃষি অঞ্চলের পাঁচ জেলায় ৭ হাজার ২শ’ ৪০ হেক্টর আম চাষের মধ্যে হাঁড়িভাঙার চাষ হয়েছে ৪ হাজার হেক্টরে। উৎপাদন ধরা হয়েছে ৯৩ হাজার টন আম। এর মধ্যে শুধু হাঁড়িভাঙা বিক্রি হবে প্রায় ২শ’ ৩২ কোটি টাকা মূল্যের। শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে লক্ষমাত্রা পুরোনের আশা করছেন তিনি।
আর হাঁড়িভাঙাকে পুষ্ঠ করে বাজারজাত করার আশ্বাস দিয়ে জেলা প্রশাসক আসিব আহসান জানিয়েছেন, হাঁড়িভাঙা আম সারা দেশের বাজারে পৌছে দিতে কৃষি বিপনন কেন্দ্রকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। দেশের অন্য এলাকার আম ব্যবসায়ীরা আম কিনতে কোন ধরনের সমস্যায় যাতে করে না পরে সে ব্যবস্থাও নেয়ার কথাও জানান তিনি।
বিভি/এসআই
মন্তব্য করুন: