• NEWS PORTAL

  • সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

নির্বাচনের সফলতা-ব্যর্থতা ইসি একা কেন? দায় সবাইকেই নিতে হবে

মেহেরপুরে ইসি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবিব খান (অব.)

প্রকাশিত: ১৬:৫৬, ২৮ মে ২০২২

আপডেট: ১৭:২১, ২৮ মে ২০২২

ফন্ট সাইজ
নির্বাচনের সফলতা-ব্যর্থতা ইসি একা কেন? দায় সবাইকেই নিতে হবে

নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবিব খান (অব.) বলেছেন, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, বিজিবি, র‍্যাব, আনসার ও বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি, আধা-সরকারি এমনকি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন স্কুল কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষকবৃন্দ ও কর্মকর্তা কর্মচারীদের সমন্বয়ে ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় দেশের জন্য একটি সুন্দর সুষ্ঠু স্বার্থক ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেওয়া সম্ভব। কিন্তু নির্বাচনের সফলতা ব্যর্থতা নির্বাচন কমিশন এককভাবে বহন করবে কেন? এই দায়-দায়িত্ব সকলকেই গ্রহণ করতে হবে। তাই একটি সুষ্ঠু, সুন্দর, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সকলের সম্মিলিত প্রয়াসেই উপহার দেওয়া সম্ভব।

শনিবার (২৮ মে) দুুপুরে মেহেরপুর পৌরসভা ও ইউপির সাধারণের নির্বাচন উপলক্ষ্যে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি। 

তিনি বলেন, অবাধ, শুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন গণতন্ত্রের অন্যতম নিয়ামক, আর অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন যা পরবর্তী দেশ পরিচালনার জন্য যোগ্যকান্ডারী নির্ধারণ করবে। নির্বাচন কমিশন দেশের একটি অবাধ ও সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করার যে অঙ্গিকার করেছে সে অঙ্গিকার পূরণ করা এবং দেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশ অধিকরতর বিকাশে সুষ্ঠু নির্বাচন অত্যাবশ্যক, বিধায় তা কার্যকর করা নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিরপেক্ষতা ও ঐকান্তিকতা এবং সেই পূর্ণ দক্ষতার উপর নির্ভরশীল।

নির্বাচন ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত জটিল ও বহুমাত্রিক একটি বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর সাথে রাজনৈতিক সংবেদনশীলতাও জড়িত রয়েছে। সে কারণে এ কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তাকে দেশ ও জাতির প্রত্যাশার সাথে সামঞ্জস্য রেখে নিজেদের দায়িত্ব পালনে সর্বোচ্চমান প্রদর্শন করতে হবে। 

নির্বাচনকে আরো স্বচ্ছ ও গহণযোগ্যতা আনয়নের লক্ষ্যে নির্বাচনে ইতোপূর্বে ব্যবহৃত ম্যানুয়াল ব্যালট পেপারের পরিবর্তে  ইভিএম ব্যবহার করা হচ্ছে যা স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে মাইলফলক হিসেবে কাজ করছে বলেও জানান তিনি।

ভোটারদেরকে নির্বিঘ্নে, নিরাপদে ও নির্ভয়ে ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত ও ভোট প্রদানের সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশ তৈরি করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ আইন-শৃংখলা বাহিনীর স্ট্রাইকিং ফোর্স ও মোবাইল টিমের তৎপরতা বাড়াতে হবে। সুষ্ঠু, সুন্দর, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রত্যেক প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে আচরণ বিধি প্রতিপালন করতে হবে। প্রত্যেক প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী যাতে নির্বাচনী আচরণ বিধি প্রতিপালন করে সেই লক্ষ্যে জেলা প্রশাসক, পুলিশ প্রশাসন, আইন-শৃংখলা বাহিনীকে সতর্ক থাকতে হবে। যে সকল প্রার্থী নির্বাচনী আচরণ বিধি ভঙ্গ করবে রিটানিং অফিসার ও সহকারি রিটানিং অফিসার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা গহণ করবেন। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীগণ আচরণ বিধি ভঙ্গ করার পর তাদেরকে বারংবার সতর্ক করা হলে তার পরেও যদি তারা আচরণ বিধি বঙ্গ কর তাহলে কমিশন বিধি মোতাবেক প্রয়োজনে প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করবে।

এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, নির্বচন প্রচারকালীন প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী বা তাদের পক্ষে কোন ব্যক্তি তিক্ত বা উস্কানিমূলক বা সাম্প্রদায়িকতা বা ধর্মানুভুতিতে আঘাত লাগে এমন কোন বক্তব্য প্রদান থেকে বিরত থাকবে। নির্বাচন পূর্ব সময়ে কোন প্রকার মিছিল বা কোনরূপ শো-ডাউন করা যাবে না। এছাড়া নির্বাচন প্রভাবমুক্ত রাখার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তার পক্ষে অর্থ, অস্ত্র ও পেশী কিংবা স্থানীয় ক্ষমতা দ্বারা নির্বাচনকে প্রভাবিত করা যাবে না। বিধি মোতাবেক অনুমোদিত নির্বাচনী ক্যাম্প এর অতিরিক্ত নির্বাচনী ক্যাম্প তৈরী করা যাবে না। একজন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর পোস্টারের উপরে অন্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী পোস্টার টাংগানো যাবে না। ‌এছাড়াও একজনের পোস্টার অন্য জন প্রার্থী/প্রার্থীর সমর্থক ছিড়ে ফেলবেন না।

নির্বাচনে প্রতিযোগিতা, প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকবে কিন্তু প্রতিরোধ ও প্রতিহিংসা থাকবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভোটকেন্দ্র ভোট প্রদানের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখতে আইন-শৃংখলা বাহিনীর ভুমিকা বৃদ্ধি করতে হবে। নির্বাচন মনিটরিং টিম নির্বাচন সংক্রান্ত আইন, বিধি, নির্বাচনের আচরণ বিধি এবং নির্বাচনের সার্বিক বিষয়াদি যথাযথ ও সঠিকভাবে পালন হচ্ছে কিনা তা তদারক করবে ও প্রতিপালনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এই টিম বিশেষ ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিকভাবে এবং অন্যথায় প্রতি ৭ দিন পর পর উল্লিখিত বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করবে। বিজ্ঞ জুডিশিয়াল ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত ছকে নির্বাচনি আচরণ বিধি’র বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে দৈনন্দিন রিপোর্ট প্রদান করবেন। 

নির্বাচনি কোর কমিটির নিয়মিত মিটিং এ জেলা নির্বাচন অফিসার ও রিটানিং অফিসারকে সদস্য হিসেবে রাখতে হবে বলেন তিনি।

এছাড়া বিকেলে প্রশাসন ও আইন-শৃংখলা মিটিংয়ে তিনি বলেন, 

নির্বাচন একটি টিম ওয়ার্ক। নির্বাচন কমিশন, স্থানীয় প্রশাসন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী , নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেকে এই টিমের সক্রিয় অংশিদার। 
আইন কর্তৃক প্রত্যেকের দায়-দায়িত্ব সুনির্দিষ্ট করা আছে। আইন অনুযায়ী দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার পরিধিও সুনির্দিষ্ট।

নির্বাচনের অন্যতম প্রধান নিয়ামক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি। নির্বাচন-পূর্ব, নির্বাচনকালীন এবং নির্বাচন পরবর্তী সময়ে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পেশাগত ও আইন সংগত নিরপেক্ষ অবস্থান সুষ্ঠু আইন-শৃঙ্খলার অন্যতম প্রধান শর্ত। বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এবং বিভিন্ন নির্বাচনে আমরা দেখেছি পুলিশসহ বিভিন্ন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর চমৎকার দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে অনেক জায়গায় নির্বাচন সুন্দর এবং সুষ্ঠু হয়েছে। বর্তমান নির্বাচন কমিশন এ কার্যক্রমকে আরো উচ্চতর মাত্রায় নিয়ে যেতে চায়।

তিনি বলেন সম্প্রতি যেসকল স্থানে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সেসকল নির্বাচনকে নির্বাচন কমিশন অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টিতে কারো প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা দৃষ্টিগোচর হলে ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি জেলায় শক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন চায় প্রত্যেকে যার যার দায়িত্ব আইন সঙ্গতভাবে এবং নিরপেক্ষতার সাথে পালন করবে। অন্যথায় নির্বাচন কমিশন তার আইনসঙ্গত ক্ষমতা প্রয়োগ করে নির্বাচনে ব্যর্থ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

বিভি/টিএ/এইচকে

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2