টিকটক করায় ২ ছাত্র ও ১ ছাত্রী বহিষ্কার, প্রতিবাদে স্কুলে ভাঙচুর

স্কুলে ভাঙচুর করছে শিক্ষার্থীরা। ইনসেটে টিকটকের লোগো।
স্কুল ড্রেস পরে শ্রেণিকক্ষে টিকটক ভিডিও বানানো এবং তা ফেসবুকসহ সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ায় ২ ছাত্র ও ১ ছাত্রীকে বহিষ্কার করেছে বিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু এতে হিতে বিপরীত হয়েছে। বহিষ্কারের প্রতিবাদে ক্লাসের বেঞ্চসহ আসবাবপত্র ভাঙচুর করেছে শিক্ষার্থীরা। ঘটনাটি ঘটেছে নাটোরের সদর উপজেলার চন্দ্রকলা সাইফুল ইসলাম উচ্চ বিদ্যালয়ে।
জানা যায়, রবিবার (২৯ মে) স্কুল চলাকালীন বেলা ১১টার দিকে বিদ্যালয়ের বহিষ্কৃত ওই শিক্ষার্থীরাসহ সব শিক্ষার্থী প্রতিবাদে বিক্ষোভ করে। এ সময় স্কুলের প্রধান গেট বন্ধ করে দিলে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে এবং স্কুল ভবনের দরজা-জানালার কাঁচ ভাঙচুর করে। ইটপাটকেল নিক্ষেপের সময় এক শিক্ষার্থী আহত হয়। প্রায় আধাঘণ্টা ধরে এই প্রতিবাদ বিক্ষোভ চলার সময় শিক্ষকসহ ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা অবরুদ্ধ ছিলেন।
পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ৩ শিক্ষার্থীকে আটকসহ ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এ বিষয়ে তদন্ত করে জেলা শিক্ষা অফিসারকে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য জেলা প্রশাসক নির্দেশ দিয়েছেন।
স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আনিসুর রহমান জানান, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ৯ম শ্রেণির দুই ছাত্র ও এক ছাত্রী একটি কক্ষে স্কুলের পোশাক পরে টিকটকের ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকে ছাড়ে। পরে ওই টিকটকের ধারণকৃত ভিডিওটি তাদের দেখানো হয়। বিষয়টি ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত এবং ওই শিক্ষার্থীদের মতামত ও সম্মতি নিয়ে তাদের বহিষ্কার করা হয়।
রবিবার ১৫-২০ জন শিক্ষার্থী স্কুলে ঢুকে দরজা জানালার কাঁচসহ আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। এ সময় তারা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এ সময় শিক্ষকসহ ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা স্কুল ভবনে অবরুদ্ধ ছিলেন। পুলিশ এসে ৯ শ্রেণির দুই ছাত্র মোরসালিন, মনিরুল ও এসএসসি পরীক্ষার্থী মারুফকে আটক করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
নাটোর সদর থানার ওসি নাছিম আহমেদ বলেন, ভাঙচুরের খবর পেয়ে পুলিশ চন্দ্রকলা স্কুলে গিয়ে আইন শৃংখলা নিয়ন্ত্রণের জন্য ৩ জনকে আটক করে। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আফরোজা খাতুন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দরজা-জানালার কাঁচসহ কিছু আসবাবপত্র ভাঙচুর আবস্থায় দেখতে পাই। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসকের নির্দেশ অনুযায়ী তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বহিষ্কৃত এক ছাত্রের পরিবার থেকে দাবি করা হয়, গানের ভিডিও ফেসবুকে দেওয়া হয়েছিল। বিষয়টি শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের না জানিয়ে বহিষ্কার করা হয়। বছরের মাঝামাঝি সময় হওয়ায় তাদের নতুন করে অন্য বিদ্যালয়ে ভর্তি করে রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ না থাকায় তাদের শিক্ষা জীবন থেকে একটি বছর ঝরে যাবে।
তবে জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, শিক্ষার্থীরা প্রাপ্তবয়স্ক নয়। তাদের বহিষ্কার না করে অভিভাবকদের ডেকে সতর্ক করা উচিত ছিলো। তবে কোমলমতি শিশুদের ভবিষৎ যেন নষ্ট না হয় সে বিষয়টির ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে।
বিভি/এজেড
মন্তব্য করুন: