নিজের স্ত্রী মামলা দিলো, আত্মীয়ের স্ত্রীকে নিয়ে পালিয়ে গেলো যুবক

স্ত্রীর দায়েরকৃত যৌতুক মামলা মাথায় নিয়েই আত্মীয়তার সুবাদে প্রতিবেশীর স্ত্রীকে নগদ টাকা ও গহনাসহ ভাগিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে এক যুবকের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে ফরিদপুর সালথা উপজেলার গট্টী ইউনিয়নের ঠ্যানঠেনিয়ার ভবুকদিয়া গ্রামে।
এ ঘটনায় স্ত্রী ও ওই যুবকের বিরুদ্ধে ফরিদপুর জজ কোর্টের ৬ নং আমলী আদালতে মামলা দায়ের করেছেন স্বামী। অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তরুণ বাশার এর আদালত মামলা আমলে নিয়ে আসামীদের বিরুদ্ধে সমন জারি করেছেন।
জানা গেছে, টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর গ্রামের নয়ন সিকদারের পুত্র মো: সুজন সিকদারের (৩২) সাথে নগরকান্দার ভবুকদিয়া গ্রামের মান্নান মোল্লার মেয়ে লাভলী আক্তার সুমাইয়ার (২৪) ৮ বছর আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়।
গত ২৬ মে স্ত্রী সুমাইয়াকে নিয়ে পালিয়ে যায় সদর উপজেলার কানাইপুর ইউনিয়নের শোলাকুন্ডু গ্রামের মৃত কলিমদ্দিন শেখের পুত্র মো: আলামিন শেখ (৩১)। আলামিন বিবাহিত এবং ৩ বছরের একটি মেয়ে রয়েছে তার। এ ঘটনার পর তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেন স্বামী সুজন শিকদার।
সুজন শিকদার অভিযোগ করেছেন, আসামী আলামিন তাদের আত্মীয় হওয়ার সুবাদে বাড়িতে যাতায়াত ছিলো। এ সুযোগে স্ত্রী সুমাইয়াকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে গত ২৬ মে স্ত্রী সুমাইয়াকে ফুসলিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। এসময় ঘরের আলমারিতে রাখা তার ৩ লাখ টাকা ও ২ ভরি গহনাও নিয়ে যায় সুমাইয়া।
সুজন শিকদার বলেন, বিয়ের পর স্ত্রী সুমাইয়াকে নিয়ে শশুড়বাড়ী ভবুকদিয়া গ্রামে বসবাস করতেন তিনি। মাঝখানে কিছুদিন কাতারে প্রবাসী ছিলেন। দেশে ফিরে এসে ফরিদপুর শহরে একটি রডের কোম্পানিতে ফোরম্যানের কাজ করেন তিনি।
স্ত্রী সুমাইয়া গোপনে গত কয়েক মাস ধরে মোবাইলে একটি ছেলের সাথে কথা বলতেন জানিয়ে সুজন বলেন, গত রোজার মধ্যে আমি স্ত্রীর সম্পর্কের বিষয়ে হাতেনাতে ধরে শ্বশুরকে বিষয়টি জানাই। তখন আমার স্ত্রী ওই ছেলের সাথে কথা বলবে না বলে জানায়।
এদিকে, বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর তিনি ও তার শ্বশুর মান্নান মোল্লা আলামিনের বাড়িতে যেয়ে সুমাইয়ার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। তবে তারা ওই বাড়িতে যাওয়ার আগেই আলামীন ও সুমাইয়া ওই বাড়ি থেকে সটকে পড়ে। তিনি জানান, স্ত্রী সুমাইয়াকে অত্যন্ত ভালবাসতেন তিনি। ৮ বছরের দাম্পত্য জীবনে তাদের কোন সন্তান না হলেও ভালবাসা দিয়ে ভরণপোষণে কোন কমতি রাখেননি।
মেয়ের বাবা মান্নান মোল্লা বলেন, আমি আমার মেয়েকে ফিরে পেতে চাই। আলামিনের পরিবারকে বারবার অনুরোধ করেছি। তারা কোন প্রকার সহযোগিতা করছে না। ছেলের বড় ভাই দুলাল শেখ বলেন, আমার সৎ ভাই আলামিনকে ৫ বছর আগে পারিবারিকভাবে তাকে বিয়ে দেই। তাদের ৩ বছরের একটি কন্যা সন্তান আছে। তবে আলামিনের সেই স্ত্রীর করা নারী নির্যাতন ও যৌতুকের মামলা নারী ও শিশু কোর্টে চলমান রয়েছে। এরই মধ্যে সে অন্যের স্ত্রীকে নিয়ে পালিয়েছে। আমি আমার ভাইকে অনুরোধ করেছি সুজনের স্ত্রীকে ফিরিয়ে দিয়ে আসতে।
সুজনের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তৌহিদুল ইসলাম স্টালিন বলেন, সুজন ও সুমাইয়া এখনও তারা স্বামী-স্ত্রী। এদিকে আলামিনও বিবাহিত। তার বিরুদ্ধে নারী শিশু আদালতে তার স্ত্রীর দায়ের করা নির্যাতন মামলা চলমান রয়েছে। এমন অবস্থায় আলামিন সুজনের স্ত্রী সুমাইয়াকে নিয়ে পালিয়ে যায়। আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে মামলাটি গ্রহণ করে আলামিন ও সুমাইয়ার বিরুদ্ধে সমন জারি করেছেন।
তবে আলামিন ও সুমাইয়া পলাতক থাকায় তাদের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বিভি/এইচএ/এজেড
মন্তব্য করুন: