• NEWS PORTAL

  • বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

কাঠালিয়ায় অর্ধশত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, আশ্রয়নের ঘরসহ ২৭ গ্রাম প্লাবিত

ঝালকাঠি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৬:৩৮, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২

আপডেট: ১৬:৪৪, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২

ফন্ট সাইজ
কাঠালিয়ায় অর্ধশত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, আশ্রয়নের ঘরসহ ২৭ গ্রাম প্লাবিত

বিষখালী ও হলতা নদীর জোয়ারের পানি ৩-৪ ফুট বৃদ্ধি পাওয়ায় ঝালকাঠি জেলার কাঠালিয়া উপজেলার অর্ধশত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ২৭টি গ্রাম ও শতাধিক আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর প্লাবিত হয়েছে। ভেঙ্গে গেছে কাঠালিয়া গ্রামের বিষখালী নদীর তীরবর্তী রাস্তা ও চিংড়াখালী খালের বাঁধ। গ্রামীন কাঁচা পাকা ১০টি রাস্তা দেঁভে গর্ত হয়ে সংযোগ বিচিছন্ন রয়েছে এ সকল গ্রামের। ফলে হাজার হাজার মানুষের চরম দূর্ভোগ ও আতংকের মধ্যে দিন কাটছে। 

রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) থেকে মুশল ধরে বৃষ্টি, বৈরী আবহাওয়া, বিষখালী ও হলতা নদীর অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসাসহ অর্ধশত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শ্রেণি কক্ষে পানি ঢুকে পড়েছে। তলিয়ে গেছে ২৭টি গ্রাম। জোয়ারের পানিতে উপজেলার আউড়া, শৌলজালিয়া ও আওরাবুনিয়া আশ্রায়ন প্রকল্পের শতাধিক ঘর পানিতে ভাসছে। ২/৩ ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে এ সব ঘর। উপজেলা পরিষদের সবগুলো অফিস ভবন, নির্বাহী অফিসারের বাস ভবন, কাঠালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ, কাঠালিয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিকল্যাণ কেন্দ্র, ছৈলার চর পর্যটন কেন্দ্র, কাঠালিয়া লঞ্চ ঘাট, সিকদার পাড়া, পশ্চিম আউরা জেলে পাড়া, আমুয়া হাসপাতাল ও আমুয়া বন্দরসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান ৩ ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে।

বিষখালী নদীর কাঠালিয়া অংশে বেরিবাঁধ না থাকায় প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে এ সব অঞ্চল পানিতে তলিয়ে যায়।  দীর্ঘ ৫০ বছরেও বেড়িবাধ নির্মিত না হওয়ায় কাঠালিয়া অংশে প্রায় ২৪ কিলোমিটার জায়গা অরক্ষিত রয়েছে। 

পানিতে প্লাবিত হয়েছে কাঠালিয়া উপজেলার কাঠালিয়া, আউরা, বড় কাঠালিয়া, চিংড়াখালী, জয়খালী, হেতালবুনিয়া, ছৈলার চর পর্যটন কেন্দ্র, কচুয়া, শৌলজালিয়া, তালগাছিয়া, লতাবুনিয়া, সোনার বাংলা, আওরাবুনিয়া, রঘুয়ারদরি চর, জাঙ্গালিয়া, আমুয়া, মশাবুনিয়া, মরিচবুনিয়া, পাটিখালঘটা, তারাবুনিয়া, ঘোষের হাট, ছোনাউটা, বিল ছোনাউটা, মোল্লাখালী, পোটকাখালী, জোড়খালী, জমাদ্দার হাট, বানাই, দাসেরবাড়ী।  

আউরা গ্রামের বাসিন্দা আ. লতিফ খান জানান, আমাদের এলাকাসহ আশ্রান প্রকল্পের সবকয়টি ঘরে পানি উঠেছে। ঘর থেকে বের হতে হলে কমর সমান পানি ভেঙ্গে বেড় হতে হয়। 

কাঠালিয়া গ্রামের কৃষক আ. মজিদ জানান, বিষখালী নদীর জোয়ারের পানি বেশি হওয়ায় রোপা আমন পচে যেতে পারে।

কাঠালিয়া গালর্স স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক মো. শামিম হোসেন জানান, রবিবার থেকে পানি বৃদ্ধি পায়। ফলে শ্রেণি কক্ষে পানি ঢুকে পড়ে, এ জন্য শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিতে সমস্যা হচ্ছে। শ্রেণি কক্ষ স্থানান্তর করা হয়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিসার মো. শহীদুল ইসলাম জানান, দুই এক দিনের ভিতর পানি না কমলে রোপা আমন ধান পচে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

উপজেলা মৎস্য মৎস্য কর্মকর্তা মো. নুরুল আমিন জানিয়েছেন, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জানান, অফিসের স্বাবাভিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্রের সংরক্ষণ নিয়ে চিন্তিত রয়েছি। তিনি আরও জানান, ৪০ শতাংশ মাছের ঘের ও পুকুর তলিয়ে গেছে। ফলে এ সকল খামারিদে অর্ধকোটি টাকা ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। 

কাঠালিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মিজানুর রহমান জানান, কাঠালিয়া উপজেলাকে সরকারের পক্ষ থেকে কোস্টাল এরিয়া ঘোষনা করা এবং ভেরিবাঁধ নির্মাণ করা না হলে এলাকার মানুষের দুর্ভোগের সমাধান সম্ভব নয়। জোয়ারের পানিতে প্রতিবারই উপজেলার প্রশাসনিক ভবনগুলো পানিতে প্লাবিত হয়। কাঠালিয়াসহ ঝালকাঠি জেলা বন্যা দুর্যোগপূর্ণ এলাকা। 

ঝালকাঠি পানি উন্নয়ন বোর্ড জানান, বিষখালী ও হলতা নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ অঞ্চলের সব কয়টি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেক নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।


 

বিভি/রিসি

মন্তব্য করুন: