এবার ঘর পেল বন্যার সময় ডিসি অফিসে জন্ম নেওয়া সেই শিশু

গত জুনে ভয়াবহ বন্যায় সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জন্ম নিয়েছিলো এক শিশু। ওই সময় তার রাখা হয় প্লাবন। এবার সেই প্লাবনকে ঘর দিচ্ছে সরকার। প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে দ্রুত তাকে ঘর দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন।
বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে প্লাবনের মা-বাবার কাছে নগদ অর্থ ও খাদ্য সহায়তা দেন জেলা প্রশাসক। এসময় প্লাবনের মা-বাবাকে এ আশ্বাস দেন জেলা প্রশাসক।
ভয়াবহ বন্যায় জেলাজুড়ে কোথাও দাঁড়ানোর মতো শুকনো জায়গা ছিল না। এ অবস্থায় পৌর শহরের মল্লিকপুর এলাকার বাসিন্দা সুমন মিয়ার স্ত্রীর জমিলা খাতুনের প্রসব বেদনা উঠলে তাকে নিয়ে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে রওনা হন স্বামী। কিন্তু রাস্তা ডুবে যাওয়ায় তারা আটকা পড়েন। তাদের জেলা প্রশাসনের সহায়তায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়।
গত ১৮ জুন সকাল ১০টায় সেই অফিসেই জমিলা বেগমের কোল আলো করে জন্ম নেয় পুত্র সন্তান। সঙ্গে সঙ্গেই জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানান। বিষয়টি জানার পর প্রধানমন্ত্রী নিজে শিশুটির নাম রাখেন প্লাবন এবং শিশুটির জন্য উপহার সামগ্রী পাঠান।
প্লাবনের মা জমিলা খাতুন জানান, ‘আজ জেলা প্রশাসকের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলাম। তিনি আমাদের নগদ অর্থ ও খাদ্য সহায়তা দিয়েছেন। যেকোনো প্রয়োজনে আসতে বলেছেন।’
সুমন মিয়া জানান, ‘বন্যার সময় অনেক দুর্ভোগ পোহালেও জেলা প্রশাসকের সহায়তায় আমরা ভালো ছিলাম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন আমার ছেলের নাম নিজে রেখে দিলেন এবং উপহার সামগ্রী পাঠালেন আমি নিজেকে ধন্য মনে করেছি।
তিনি আরও বলেন, ডিসি সাহেব বলেছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রীর ঘর উপহার দেবেন। ঘর পেলে আমাদের মাথা গোজার ঠাঁই মিলবে।’
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, ওই দম্পতির বাড়ি বন্যার পানিতে ডুবে গিয়েছিল। তার মধ্যে জমিলা খাতুনের প্রসব যন্ত্রণা উঠলে তারা সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে যাওয়ার জন্য বের হয়। কিন্তু রাস্তা ডুবে যাওয়ায় সেখানে যেতে পারেনি। পরে আমি তাদের আমার কার্যালয়ের আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে এলে একটি পুত্রসন্তানের জন্ম হয়। বিষয়টি আমি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে জানাই। প্লাবনের সব সময় খোঁজ রাখার জন্যও আমাদের বলেছেন।
তিনি আরও জানান, প্লাবনের বাবার নিজের জমি-ঘর নেই এটা জানার পর তাকে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে একটি ঘর উপহার দেওয়া হবে। আগামী একমাসের মধ্যে সদর উপজেলার লালপুরে একশটি ঘর নির্মাণের কাজ শুরু হবে।
বিভি/এজেড
মন্তব্য করুন: