র্যাবের হাতে আটকের পর নওগাঁয় নারীর মৃত্যু

র্যাবের হাতে আটকের পর সুলতানা জেসমিন নামে নওগাঁ ইউনিয়ন ভূমি অফিসের এক কর্মচারীর মৃত্যু হয়েছে। র্যাবের দাবি, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে মারা গেছেন ওই নারী।
রবিবার (২৬ মার্চ) বিকালে নওগাঁর কেন্দ্রীয় গোরস্তানে তাকে দাফন করা হয়েছে।
সুলতানা সদর উপজেলার চন্ডীপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে অফিস সহকারী পদে চাকরি করতেন।
স্বজনরা জানান, বুধবার (২২ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে শহরের মুক্তির মোড় এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। এর দুদিন পর শনিবার দুপুরে তার মরদেহ বুঝে পায় পরিবার।
জেসমিনের ভগ্নিপতি রফিকুল ইসলাম জানান, বুধবার সকালে অফিসের উদ্দেশে বাসা থেকে বের হন জেসমিন। দুপুরের দিকে তারা জানতে পারেন, র্যাব সদস্যরা জেসমিনকে আটক করেছে। এরপর অসুস্থ অবস্থায় তাকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে তার মৃত্যু হয়। কিন্তু মৃতদেহ বুঝে পাওয়া যায় আরও একদিন পর শনিবার দুপুরে।
মৃতে জেসমিনের মামা ও নওগাঁ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর নাজমুল হক মন্টু বলেন, শহরের জনকল্যাণ এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতো জেসমিন। স্বামীর সঙ্গে তার বিচ্ছেদ হয়েছে প্রায় ১৭ বছর আগে। তার এক সন্তান রয়েছে। সে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। অভাব অনটনের মধ্যে তার পড়ালেখার খরচ চালিয়ে নিচ্ছিল জেসমিন।
আটকের পর জেসমিনের মৃত্যুর বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হয় র্যাবের সঙ্গে। অনেক চেষ্টার পর শনিবার বাহিনীর পক্ষ থেকে রাজশাহী র্যাব-৫-এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর নাজমুস সাকিব বলেন, একটি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আটক করা হয়েছিল সুলতানাকে। আটকের পরপরই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। সঙ্গে সঙ্গে তাকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে রাজশাহী নেওয়া হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হয় এবং গত শুক্রবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্ট্রোকের কারণে তার মৃত্যু হয়। আইনি প্রক্রিয়া শেষে শনিবার স্বজনদের কাছে তার লাশ হস্তান্তর করা হয়।
কী অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে আটক করা হয়েছিল জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রতারণার একটি অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে আটক করা হয়। তার ব্যাংক হিসাবে অস্বাভাবিক লেনদেনের প্রমাণও পাওয়া যায়। তবে তাকে র্যাব ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়ার পথেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।
এ বিষয়ে জেসমিনের মামা ও নওগাঁ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর নাজমুল হক মন্টু বলেন, এর আগে কোনো দিন তার বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতি কিংবা অনিয়মের অভিযোগ শোনা যায়নি।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক এফ এম শামীম আহাম্মদ বলেন, সিটিস্ক্যান করে দেখা যায় মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে ওই রোগীর মৃত্যু হয়। তার মাথায় ছোট্ট একটি লাল দাগ ছিল। শরীরে অন্য কোথাও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
বিভি/এইচএস
মন্তব্য করুন: