শ্বশুরবাড়ির দ্বন্দ্বে দুই গ্রামের সংঘর্ষ, আহত ২০

দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মুখোমুখি হয় দুই গ্রামের বাসিন্দারা।
কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের বাঁশগাড়ী গ্রামে শ্বশুর বাড়িতে জামাইয়ের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষ হয়। এতে করে দুই পক্ষের আহত হয়েছে অন্তত ২০ জন। শনিবার (৬ মে) রাতে গজারিয়ার বাঁশগাড়ী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, শনিবার (৬ মে) রাতে গজারিয়া গ্রামের কাসেম মিয়া দলবল নিয়ে শ্বশুর বাড়ি বাঁশগাড়ী গ্রামে গেলে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজনের সাথে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় গজারিয়া গ্রামের মোস্তুফা মিয়ার ছেলে কাসেম (৩০), জালাল উদ্দিনের ছেলে মোরাদ(২৬) ও অহিদ মিয়ার ছেলে আনোয়ার (৩০) আহত হয়।
রাতেই এলাকাবাসী তাদের উদ্ধার করে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। পরে কাসেমের অবস্থা অবনতি হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজে প্রেরণ করা হয়।
পরদিন আজ রবিবার এ ঘটনার জের ধরে দীর্ঘ ৪ ঘণ্টা বাঁশগাড়ী ও গজারিয়া গ্রামবাসী দা, বল্লম, টেটা, ইটপাটকেলসহ দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় আরো ২০ জনের মতো আহত হয়। এছাড়াও আরো অনেকেই আহত হয়েছে। খবর পেয়ে ভৈরব থানাপুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ সময় উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক শিশু, নারী-পুরুষ,বৃদ্ধ আহত হয়। গুরুতর আহতরা হলেন, নজরুল (২২), বাবু (১৩), মোস্তফা (৩৮), সিরাজ (৪০), দানিস (২৫), কবির (৪৫), জাকারিয়া (৫০), ইয়া হিয়া (২১), ইমন (২২), রিনা(৪৫), চাঁন মিয়া (১৮), জিল্লু (৫৫), সাইজ উদ্দিন (৪০), রুবেলা (৩০), গিয়াস উদ্দিন (৭৬)।
এদের মধ্যে কবির কাজী ও মোস্তুফা উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে শিশু মেম্বারের পক্ষে তার ছেলে জনি জানান, আমাদের বংশের রফিক মিয়া জমি নিয়ে দ্বন্দ্বে বাঁশগাড়ী গ্রাম থেকে তার আত্মীয়দের খবর দিলে তারা এসে আমাদের গ্রামে ঝগড়া করে। তারা আমাদের বাড়ির অনেক জায়গায় অগ্নিসংযোগ করে এবং বাড়ি ভাংচুর করে।প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদীসহ নগদ ১২ লক্ষ টাকা লুট করে নিয়ে যায়।
একই গ্রামের কৃষক ইসলাম উদ্দিন জানান, জমি নিয়ে তাদের দ্বন্দ্ব হয়েছে। কিন্তু তারা আমার ফসলি জমির ধান পুড়িয়ে দিয়েছে। তাদের পারিবারিক দ্বন্দ্বে আমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।
কাসেম মিয়ার পক্ষে তোফাজ্জল মিয়া জানান, রাতে আমি আমার বন্ধু কাসেমের সাথে ওই এলাকায় গেলে শিশু মেম্বারের লোকজন আমাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে কাসেম গুরুতর আহত হয়। এ ঘটনা কেন্দ্র করে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।
এ বিষয়ে গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম শাহরিয়ার বলেন, বাঁশগাড়ী গ্রামে তাদের পারিবারিক ঝগড়া ছিল এতে করে অন্য গজারিয়া গ্রামে আত্মীয়রা এতেযুক্ত হলে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়।
ভৈরব থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মাকছুদুল আলম বলেন, গজারিয়া ইউনিয়নে গ্রামবাসীর মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বিভি/এজেড
মন্তব্য করুন: