উচ্চাভিলাষী জীবনের প্রলোভন: এক যুবকে প্রতারিত বহু নারী

ছবি: আটক গোলাম মোস্তফা
তিনি কখনো কানাডা প্রবাসী আবার কখনও হয়ে যান অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারি সচিব, আবার কারো কারো কাছে পরিচয় দেন সিরামিক কোম্পানির ডিএমডি। এসব পরিচয়ের একটাই উদ্দেশ্য- বিয়ে করে নারীদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া। আর এভাবেই বিয়ে করেছেন অন্তত ১০টির অধিক। পরিস্থিতি এমন- কোন বউয়ের কি নাম তাও মনে রাখতে পারেন না তিনি।
সম্প্রতি রাজধানীর খিলগাঁও থানায় ভুক্তভোগী এক নারীর অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারের পর তিনদিনের রিমান্ডে বেরিয়ে আসে তার একের পর এক অপকর্মের তথ্য। জন্মসূত্রে তার নাম গোলাম মোস্তাফা হলেও তিনি কখনো হয়েছেন শওকত আলী, কখনো রাজন আবার কখনো তার নাম হয়ে যায় ফাহিম।
পুলিশ বলছে- আদতে তিনি কানাডায় কখনোই যাননি। সিনিয়র সচিব তো দূরের কথা উচ্চ মাধ্যমিকের গণ্ডিও পেরোতে পারেননি। ১০টির অধিক বিয়ের মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছেন ২ থেকে ৩ কোটি টাকা।
অভিযুক্ত গোলাম মোস্তফা জানান, একাধিক বিয়ে করে ৪০-৫০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তবে প্রতারণা করে ভাগিয়ে নেওয়া টাকা থেকে দুই কোটি টাকা অন্য একজনকে ধার দিয়েছেন বলেও দাবি তার।
রিমান্ডে থাকাকালে এই প্রতারকের মোবাইলে বহু নারীদের কল দেখে রীতিমত বিস্মিত পুলিশ কর্মকর্তারা। কল দেওয়া নারীরা সবাই নিজেদেরকে প্রতারক গোলাম মোস্তফার স্ত্রী দাবি করতে থাকেন এবং তাদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ তোলেন।
ভুক্তভোগী নারীরা বলছেন- তাদের প্রত্যেককে বিয়ের সময় কানাডায় নিয়ে যাওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বিয়ে করেছিলো সে। শুধু তাই নয়- বিয়ের পর স্ত্রীদের পাসপোর্টও নিজের জিম্মায় নিয়ে ব্ল্যাকমেইল করেছে এই প্রতারক।
পুলিশ বলছে- জামাল নামের এক ঘটকের মাধ্যমে রাজধানীতে বিধবা কিংবা ডিভোর্সি নারীদেরকে টার্গেট করে বিয়ে করে অর্থ হাতিয়ে নিতো এই প্রতারক। আর এই অর্থের একটা অংশ পেতো ওই ঘটক।
মতিঝিল বিভাগের খিলগাঁও জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার আবদুল্লাহ-আল-মামুন বাংলাভিশনকে বলেন, এই প্রতারক এখন গ্রেফতার না হলে এরইমধ্যে আরও এক তরুণীকে বিয়ে করে ফেলতো। সব আয়োজন সম্পন্ন হওয়ার মধ্যেই গ্রেফতার হওয়ায় অল্পের জন্য এই প্রতারকের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে ওই তরুণী।
সমাজে বিবাহ উপযুক্ত নারীদের উচ্চাভিলাষী জীবনের প্রলোভনে সুযোগ নেয় এসব প্রতারকরা। তাই বিয়ের আগে পাত্র-পাত্রীর ভালোভাবে খোঁজ-খবর নেওয়ার পরামর্শ দেন পুলিশ কমিশনার।
বিভি/এমআর
মন্তব্য করুন: