হয়রানির বিচার চাইতে গিয়ে প্রভাবশালীর কুনজরে, নারী ছাড়লেন পৃথিবীর মায়া
বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দুই সন্তানের জননীকে একাধিকবার ধর্ষণ। কিন্তু বিয়ের কথা বললে গড়িমশি করছিল খলিল নামের এক যুবক। এই ঘটনার বিচার চাইতে ওই নারীর স্বজনরা গিয়েছিলেন ওয়াহিদুজ্জামান নামের এলাকার এক প্রভাবশালীর কাছে। কিন্তু সেই প্রভাবশালীও ওই নারীর দিকে কুনজর দিয়েছিল। ফলে লজ্জায় ঘৃণায় পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেছেন জাকিয়া আক্তার নামের ওই নারী।
এমন নিষ্ঠুর ঘটনাটি ঘটেছে রাজধানীর খিলগাঁওয়ের পশ্চিম নন্দীপাড়ায়। শুক্রবার (২৪ মে) সকালে বিষপান করলে ওই নারীকে উদ্ধার করে মুগদা হাসপাতালে নিলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। স্বজনরা জানায়-বিয়ের দাবি নিয়ে বিচার চাইতে গেলে বিচারক ৫০ হাজার টাকা দিয়ে ঘটনা মিটমাট করে দেওয়ার প্রস্তাব দেয়। এ সময় জাকিয়াকে অশালীন-গালিগালাজ এবং কুপ্রস্তাব দেয় ওয়াহিদ। সেই সঙ্গে তার রুমে ওই নারীকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণও করার চেষ্টা হয়েছে বলে অভিযোগ স্বজনদের। এমন কাণ্ডে লজ্জায় ওই নারী পরদিন সকালে বিষপান করে।
মৃতের মামা হানিফ বলেন- খলিলের প্রলোভনে পড়ে জাকিয়া তার প্রথম স্বামীকে ডির্ভোস দিয়েছিল। কিন্তু খলিল ও ওয়াহেদদের প্রতারণার কাছে আত্মহত্যার কারণে জাকিয়ার দুই শিশুর দায়িত্ব নেওয়ার কেউ নেই। তারা জাকিয়ার মৃত্যুর বিচার এবং দুই শিশুর ভবিষ্যত বিবেচনায় সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানায়- ওয়াহেদের দুই স্ত্রী থাকার পরও জাকিয়াকে কুপ্রস্তাব দিয়েছিল। অন্যদিকে, খলিল নামের ওই যুবকের স্ত্রী থাকলেও জাকিয়ার সঙ্গে পরকীয়ায় অপরাধে শাস্তি না দিয়ে উল্টো জাকিয়াকে দোষারোপ করে খলিলের পক্ষ নিয়েছিল ওয়াহেদ। আর এজন্য জাকিয়ার মৃত্যুর জন্য খলিল এবং ওয়াহেদের শাস্তি দাবি করেছেন প্রতিবেশীরা।
খিলগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালাউদ্দিন মিয়া বলেন, জাকিয়ার মৃত্যুর ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে খলিল ও ওয়াহেদ, আতাউর এবং আনোয়ার হোসেনসহ চারজনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে এই ঘটনায় আসামিরা পলাতক থাকায় কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বিভি/এসএইচ/রিসি
মন্তব্য করুন: