• NEWS PORTAL

  • বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

স্বেচ্ছাসেবকলীগ কর্মী হত্যা: এমপি’র মদদপুষ্টে অভিযুক্তরা প্রকাশ্যে

স্টাফ রিপোর্টার, ময়মনসিংহ

প্রকাশিত: ১৭:০৬, ৩০ মে ২০২৪

আপডেট: ১৭:০৭, ৩০ মে ২০২৪

ফন্ট সাইজ
স্বেচ্ছাসেবকলীগ কর্মী হত্যা: এমপি’র মদদপুষ্টে অভিযুক্তরা প্রকাশ্যে

ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়ায় স্বেচ্ছাসেবকলীগ কর্মী আখতারুল আলম শুভ হত্যায় অভিযুক্তরা স্থানীয় স্বতন্ত্র এমপি’র মদদপুষ্টে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। পুলিশ তাদের গ্রেফতার না করে নিরব ভূমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ করেছেন শুভ’র মা মোছা. আম্বিয়া আক্তার। তিনি তার একমাত্র পুত্রকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। 

বৃহস্পতিবার (৩০ মে) দুপুরে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নিহত শুভ’র মা আম্বিয়া খাতুন পুত্র হত্যার সুষ্ঠ্যু তদন্ত করে হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে বলেন, বিগত সংসদ নির্বাচনে আমার জামাতা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক এনামুর রহমান রবি নৌকা প্রতীকের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেয়ায় বিজয়ী স্বতন্ত্র এমপি আব্দুল মালেক সরকারের মদদপুষ্ট জয়নাল আবেদীন গ্রুপের সন্ত্রাসীরা আমার মেয়ের জামাতাকে খুন করার জন্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলো। এরই ধারাবাহিকতায় বিগত ১৩ মে রাত ১০ টার দিকে ফুলবাড়ীয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নির্বাচনী প্রচারণা শেষ করে বাড়ী ফেরার পথে দেওখোলা বাজার মসজিদ মার্কেটের সামনে আসা মাত্রই জয়নাল গংদের নেতৃত্বে ১৫/২০ জনের সন্ত্রাসী বাহিনী আমার মেয়ের জামাতা ও তার সঙ্গীয় লোকজনদের উপর আক্রমণ চালায়। এসময় আমার মেয়ের জামাতা এনামুর রহমান রবিকে মাথায়, পিঠে এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে নৃশংসভাবে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করা হয়। খবর পেয়ে আমার একমাত্র ছেলে দেওখোলা বাজারে জামাতার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে এগিয়ে গেলে সন্ত্রাসীরা তাকেও কোপায় এবং তার খাদ্যনালী কেটে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন আমার পুত্র ও জামাতাসহ আহতদের উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। আমার পুত্র শুভ’র অবস্থা আশংকাজনক থাকায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার্ড করলে ঢাকা আনোয়ার খান মডার্ন কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে ১১ দিন ভর্তি থাকার পরও তার অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তাকে আরো উন্নত চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (পিজি) হাসপাতালে রেফার্ড করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২৭ মে সকালে মৃত্যুবরণ করে। 

তিনি আরও বলেন, ঘটনার পর আমার জামাতার ভাই আতাউর রহমান বাদী হয়ে সন্ত্রাসী জয়নাল আবেদীনসহ ১৫ জনের নাম উল্লেখপূর্বক অজ্ঞাত আরো ৫/৬ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। কিন্তু স্বতন্ত্র এমপি’র মদদপুষ্ট ও ক্ষমতার দাপটে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্য কুপিয়ে খুন করার পরও দাপিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। আমার পুত্রের খুনি আরিফ গত ১৮ মে ন্যাম ভবনে গিয়ে স্বতন্ত্র এমপি’র সাথে ছবি তুলে তার ফেইজবুকে (মাই স্টোরিতে) পোস্ট দেয়। ফলে পুলিশ প্রশাসনও নিরব দর্শকের ভূমিকায়। সংবাদ সম্মেলনে কান্নাজড়িত কন্ঠে পুত্র হত্যার বিচার চেয়ে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের অভিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন শুভ’র মা মোছা. আম্বিয়া আক্তার। তিনি আরো জানান, সন্ত্রাসীরা আমার ছেলেকে খুন করেই ক্ষান্ত হয়নি; তারা আমার ছেলে এবং মেয়ে জামাতাসহ লোকজনের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারেরও দাবি জানান। 

নিহত শুভ’র বড় বোন ইসমত আরা সরকার লুচি আবেগ-আপ্লুত কন্ঠে বলেন, আমার স্বামী এনামুর রহমান রবি এবং ছোট ভাই শুভকে সন্ত্রাসীরা নির্মমভাবে কুপিয়েছে। ১৪ দিন হাসপাতালের বিছানায় কষ্ট করে আমার ছোট ভাইটি মারা যায়। পুলিশ বলছে খুনিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। অথচ খুনের মামলার ৩ নং আসামী আরিফ বর্তমান স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য আব্দুল মালেক সরকারের ছত্রছাঁয়ায় ঘুরাফেরা করছে। সংসদ সদস্যের সাথে পোস্ট করা আরিফের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তারপরও পুলিশ আসামীদের গ্রেফতার করছে না। আমাদের পরিবারের কেউ এখন নিরাপদে নেই। 

সংবাদ সম্মেলনে জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি উত্তম চক্রবর্তী রকেট, মহানগর সভাপতি আব্দুল আওয়াল মিন্টু, নিহত শুভ’র বড় বোন ইসমত আরা সরকার লুচিসহ পরিবরের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। 

উল্লেখ্য, গত ১৩ মে রাতে উপজেলার দেওখোলা বাজারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জয়নাল আবেদিন গ্রুপের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় মারাত্মক আহত হয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা এনামুর রহমান রবি, তার শ্যালক আখতারুল আলমসহ পাঁচ নেতাকর্মী। আহত হওয়ার ১৪ দিন পর সোমবার (২৭ মে) রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুভর মৃত্যু হয়।

বিভি/এজেড

মন্তব্য করুন: