• NEWS PORTAL

  • বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

পার্সেন্টেজ না দিলে বিলে স্বাক্ষর করেন না উপজেলা শিক্ষা অফিসার

শরীয়তপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৬:২৬, ২ জুন ২০২৪

আপডেট: ১৭:৪৯, ২ জুন ২০২৪

ফন্ট সাইজ
পার্সেন্টেজ না দিলে বিলে স্বাক্ষর করেন না উপজেলা শিক্ষা অফিসার

শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে পার্সেন্টেজ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন বরাদ্দ থেকে পার্সেন্টেজ না দিলে কোন বিলে স্বাক্ষর করেন না ওই কর্মকর্তা। নানা হয়রানির ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না অধিকাংশ শিক্ষক। চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে শিক্ষকগণের মাঝে।

ভেদরগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা অফিসার আঃ ছোবহান মুন্সী ভেদরগঞ্জ উপজেলায় যোগদানের পর থেকে পার্সেন্টেজ বাণিজ্য রমরমা হয়ে উঠেছে। স্কুলের বিভিন্ন বরাদ্দ বাবদ তাকে দিতে হয় মোটা অংকের পার্সেন্টেজ। পার্সেন্টেজ ছাড়া বিলে স্বাক্ষর করেন না তিনি। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বেহাল ভোটকেন্দ্রগুলো জরুরি মেরামতের জন্য বিভিন্ন বিদ্যালয়ে টাকা বরাদ্দ করে সরকার। ভেদরগঞ্জ উপজেলার ৫টি বিদ্যালয়ে জরুরী মেরামতের জন্য ৪ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়।

বরাদ্দপ্রাপ্ত স্কুলগুলো হলো- ৭৮ নং তারাবুনিয়া বকাউল বাড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, ৫২ নং চরভাগা পোদা বাড়ি সরকারী প্রাথমিকি বিদ্যালয় ৮০ হাজার টাকা, ১০৬ নং ছুরির চর বেপারী কন্দি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫০ হাজার টাকা, ৬৮ নং তারাবুনিয়া মোল্যাবাড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১ লক্ষ টাকা এবং ১৪ নং কৃঞ্চপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫০ হাজার টাকা।

এ বিদ্যালয় গুলো ঘুরে দেখা গেছে অধিকাংশ বিদ্যালয়ে আংশিক কিছু কাজ করে পুরো বিল তুলে নিয়েছে প্রধান শিক্ষকগণ। এ বরাদ্দ সর্ম্পকে ম্যানেজিং কমিটি, সহকারী শিক্ষক এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে কোন ধরেনের সভা ছাড়াই অসৎ উদ্দেশ্যে নামমাত্র কাজ করা হয়েছে। উপজেলা শিক্ষা অফিসারের সাথে যোগসাজশে নয়ছয় করা হয়েছে বরাদ্দের অধিকাংশ টাকা। এ নিয়ে ম্যানেজিং কমিটি ও সাধারণ শিক্ষকদের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

নামপ্রকাশ না করার শর্তে অধিকাংশ প্রধান শিক্ষক জানান, বরাদ্দ আশার পরপর উপজেলা শিক্ষা অফিসার আঃ ছোবহান মুন্সী স্যার অর্ধেক টাকা অফিস খরচ বাবদ রেখে- বাকী টাকার কাজ করতে বলেছেন। স্কুলে স্কুলে গিয়ে তিনি কাজ নির্ধারণ করে দিয়েছে। আমরা এরচেয়ে বেশী কাজ কিভাবে করবো। এখন আপানার কাছে যদি বলি স্যারতো স্বীকার করবে না। আমরাই আবার বিপদে পড়বো। আমাদের নামে পুরো টাকা চেকের মাধ্যমে দেয়া হয়েছে। আমি তো অস্বীকার করতে পারবো না। কিন্তু আমরা তাকে নগদ টাকা দিয়ে এসেছি সেটা কিভাবে প্রমান করবো। আমরা তাদের কাছে জিম্মি। ভাই আপনি যদি নিউজ করেন আমরাই আবার নির্যাতনের স্বীকার হবো। আমাদের বিপদে ফেলবেন না।

৭৮ নং বকাউল বাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ইউছুব বকাউল বলেন, আমার বিদ্যালয়ে দেড় লক্ষ টাকা বিশেষ বরাদ্দ এসেছে। ভ্যাট টেক্স কেটে আমরা ১ লক্ষ ২৭ হাজার ৫শ টাকা পেয়েছি। স্কুলের বারান্দার গ্রীল ও কেচি গেটের কাজ করাতে খরচ হয়েছে ৭৫ হাজার টাকা আর পাশের একটি বেড়া নির্মানের ১০ হাজার টাকার মত খরচ হয়েছে। বাকী টাকা কী হয়েছে আমি জানি না। বিষয়টি নিয়ে অবশ্যই পরিবর্তি সভায় আলোচনা হবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ম্যানেজিং কমিটির এক প্রভাবশালী সদস্য বলেন, আমার স্কুলেও বিশেষ বরাদ্দ পেয়েছে। কিন্তু টাকা পাওয়ার সাথে সাথে টিও স্যার অর্ধেক টাকার কাজ করতে বলেছে বলে প্রধান শিক্ষক আমাকে জানিয়েছে। আমরা অর্ধেক টাকার কাজ করেছি। 
উপজেলা শিক্ষা অফিসার আঃ ছোবহান মুন্সী এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোন বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি।

বিভি/এজেড

মন্তব্য করুন: