সাংবাদিক হত্যা মামলার আসামি মারা গেলেন কারাগারে

মো. আসিফ ইমরান
ফরিদপুর জেলা কারাগারে বন্দি সাংবাদিক গৌতম দাস হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি মো. আসিফ ইমরান (৫৬) মারা গেছেন। মঙ্গলবার সকাল ৬টার দিকে তাকে কারাগার থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে ফরিদপুরের মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ফরিদপুর জেলা কারাগারের জেলার মো. তারেক কামাল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আসিফ ইমরান জেলা কারাগারের মেঘনা ওয়ার্ডে বন্দি ছিলেন। মঙ্গলবার ভোর ৫ টা ৪০ মিনিটের দিকে বন্দিদের গুনতি দেয়ার সময় তাকে ওয়ার্ডের মধ্যে অচেতন অবস্থায় পড়ে দেখা যায়। তিনি স্ট্রোক করেছিলেন। এরপর তাকে দ্রুত ফরিদপুরের বিএসএমএমসি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে পরীক্ষা করে মৃত ঘোষণা করেন।
জেলার মো.তারেক কামাল জানান, ফরিদপুর জেলে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে বন্দি মো. আসিফ ইমরান এর আগেও দুইবার স্ট্রোক করেন এই কারাগারেই বন্দি থাকা অবস্থায়। এরপর দুইবারই তাকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়ার পরে অবশ্য তিনি সুস্থ হয়ে আবার কারাগারে ফিরে এসেছিলেন।
এদিকে, রিপোর্ট লেখার সময় সকাল ১১টার দিকে আসিফ ইমরানের লাশ ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের লাশঘরে রাখা ছিলো। জেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসকের নিকট আবেদন করে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরির পর আইনগত প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে।
প্রসঙ্গত, ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার চন্ডিদাসদি গ্রামের মৃত বলাই দাসের কনিষ্ঠ পুত্র গৌতম দাস দৈনিক সমকালের ফরিদপুর ব্যুরো প্রধান হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় ২০০৫ সালের ১৭ নভেম্বর নিহত হন। মুজিব সড়কের মায়া সুপার মার্কেটের দোতলায় সমকালের ব্যুরো কার্যালয়ের একটি কক্ষ থেকে দুই হাত পিঠমোড়া করে বেঁধে রাখা অবস্থায় সাংবাদিক গৌতম দাসের বিভৎস লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় সমকালের ফরিদপুর ব্যুরোর সাংবাদিক হাসানুজ্জামান বাদি হয়ে এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলায় ২০১৩ সালের ২৭ জুন ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন ৯ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। ওই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা হাইকোর্টে আপিল করলে হাইকোর্টে চারজন আসামি খালাস পায় এবং অপর ৫ জন আসামির যাবজ্জীবন বহাল থাকে।
জানা গেছে, মো. আসিফ ইমরান ফরিদপুর শহরের কুঠিবাড়ি কমলাপুরের মরহুম মনসুর আলী লস্করের ৬ ছেলে ১ মেয়ের মধ্যে পঞ্চমতম ছিলেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী ও এক মেয়ে রেখে যান।
বিভি/এজেড
মন্তব্য করুন: