সেনাবাহিনীর ‘গাড়ি পোড়ানো’ মামলায় ছাত্রলীগ নেতা কারাগারে

গোপালগঞ্জে সেনা সদস্যদের উপর হামলা, গাড়ি ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও অস্ত্র ছিনতাই মামলায় ছাত্রলীগ নেতা নীরব শিকদারকে (২৭) কারাগারে পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে কাশিয়ানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিউদ্দিন খান জানিয়েছেন ।
ওই কর্মকর্তা বলেন, বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) রাত ১০ টার দিকে কাশিয়ানী উপজেলার সীতারামপুর গ্রাম থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। পরে শুক্রবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলার অন্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
নীরব কাশিয়ানী উপজেলার পুইশুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ও ওই ইউনিয়নের সীতারামপুর গ্রামের আব্দুল মান্নান শিকদারের ছেলে।
ওসি আরো জানান, গত ১০ আগস্ট বিকালে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবিতে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা গোপীনাথপুর ইউনিয়নের গোপীনাথপুর বাসস্ট্যান্ডে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে এলাকাবাসী। এতে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা গোপীনাথপুর, জালালাবাদ, চন্দ্রদিঘলিয়া, কাশিয়ানী উপজেলা নিজামকান্দি, ফুকরা সহ আশপাশের বিভিন্ন ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা কর্মী ও সমর্থক অংশগ্রহণ করেন।
বেলা ৩টার দিকে ৫/৭ টি ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা কর্মীরা খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোপীনাথপুর বাসস্ট্যান্ডে একত্রিত হয়ে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এতে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে দুই দিকের শত শত যানবহন আটকা পড়ে। খবর পেয়ে গোপালগঞ্জে কর্মরত সেনাবাহিনীর সদস্যরা সেখানে গেলে তাদের দেখে ভুয়া ভুয়া শ্লোগান দেয় বিক্ষোভকারীরা। এক পর্যায়ে সেনাবাহিনীর সদস্যদের সাথে তারা তর্কে জড়িয়ে পড়েন। বিক্ষোভকারীরা ক্ষিপ্ত হয়ে সেনা সদস্যদের উপর হামলা করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে। পরে বিক্ষুব্ধরা সেনা সদস্যের কাছ থেকে অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে মিছিল করতে থাকে। এসময় তারা সেনাবাহিনীর ২টি গাড়ি ভাংচুর ও একটি গাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। এতে সেনা কর্মকর্তা সহ ৯ সেনা সদস্য আহত হয়।
এ ঘটনায় গত ২২ আগস্ট ১০ বেঙ্গল রেজিমেন্টের লেফটেন্যান্ট কর্ণেল মো. মাকসুদুল আলম বাদী হয়ে গোপালগঞ্জ সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং (গোপা জিআর ১৭/৩৩০)। এ মামলায় গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহবুব আলী খান ও সাধারণ সম্পাদক জিএম সাহব উদ্দিন আজমসহ ১০৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এছাড়া ৩ হাজার ২'শ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
ওই মামলায় নীরব শিকদারকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানান কাশিয়ানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিউদ্দিন খান।
বিভি/এজেড
মন্তব্য করুন: