মোহাম্মদপুরে অস্ত্র ঠেকিয়ে কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, সেনা অভিযানে গ্রেফতার ৪

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার এলাকায় এক কিশোরীর গলায় দেশীয় ধারালো অস্ত্র ঠেকিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার পর কিশোরীর পরিবারকে জিম্মি করে মামলা না করতে চাপ সৃষ্টি করছিলো কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। এমন খবর পেয়ে রাতে অভিযান চালিয়ে ঘটনার সাথে জড়িত চারজনকে গ্রেফতার করেছে সেনাবাহিনী।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) রাতে রায়েরবাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার চার ধর্ষক ও কিশোর গ্যাং সদস্য হলো- মুস্তাকিম, সুমন, ঝটন ও রবিন। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১টি সামুরাই, ১টি দেশীয় বড় ছুরি, নগদ ৩ হাজার ৩৪০ টাকা উদ্ধার করা হয়।
ধর্ষনের ঘটনায় কিশোরীর বড় বোন রত্মা আক্তার বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেছেন। মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, গত ২৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় কিশোর গ্যাং গ্রুপের কয়েকজন সদস্য রায়েরবাজার সাদেকখান রোডের ৬৩/৩ নম্বর বাসার আন্ডারগ্রাউন্ড ধরে নিয়ে যায়। সেখানে কিশোর গ্যাং সদস্যরা মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে গলায় অস্ত্র ঠেকিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের বিষয়টি কাউকে জানালে ওই কিশোরীসহ তার পরিবারের সদস্যদের মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এ ঘটনায় ওই কিশোরী ভয়ে কিছু না বললেও বাসায় এসে অসুস্থ হয়ে পড়ে। বিষয়টি নিয়ে পরিবারের সদস্যদের সন্দেহ হলে তারা কিশোরীকে জিজ্ঞাসার এক পর্যায়ে বিষয়টি পরিবারের সদস্যদের খুলে বলে। এ ঘটনার পর ঘটনার সাথে জড়িত কিশোর গ্যাং সদস্যদের জিজ্ঞেস করলে তারা মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিতে থাকে।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) সেনাবাহিনীর ৪৬ বিগ্রেডের এক কর্মকর্তা ধর্ষণের ঘটনায় আসামিদের গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গতকাল (২৮ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০টার দিকে একটি গোয়েন্দা তথ্য নিশ্চিত করে যে, চারজনের একটি চক্র এক কিশোরীকে ধর্ষণ করে এবং পরে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ভুক্তভোগী পরিবারের ওপর ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে মামলা না করার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। চক্রটি ছিনতাই, ডাকাতি ও ইভটিজিংসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত ছিল। পরবর্তীকালে সোহরাওয়ার্দী সেনা ক্যাম্পের একটি টহল দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুই অপরাধীকে দেশীয় অস্ত্রসহ ভুক্তভোগী পরিবারকে হুমকি দেওয়ার সময় হাতেনাতে আটক করে। পরবর্তী অভিযানে বাকি দুইজনকেও আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক মুস্তাকিম, সুমন, ঝটন ও রবিন তাদের দোষ স্বীকার করে।
এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাফিজুর রহমান জানান, এ ঘটনায় রাতেই ঘটনার সাথে জড়িত চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। ভুক্তভোগীর বড় বোন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। আমরা ভুক্তভোগীকে উদ্ধারের পর আদালতে নিয়ে এসেছি।
বিভি/টিটি
মন্তব্য করুন: