টিপু-প্রীতি হত্যাকাণ্ড
কন্ট্রাকে জোড়া খুন করে ভারতে পালাতে চেয়েছিলো আকাশ

শাহজাহানপুরে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু ও কলেজছাত্রী সামিয়া আফরান প্রীতিকে হত্যাকাণ্ডের মূল স্যুটারকে ৪৮ ঘণ্টা পর গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া মূল স্যুটারের নাম মো. মাসুম ওরফে আকাশ।
রবিবার (২৭ মার্চ) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত টিপু-প্রীতি হত্যা মামলার বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান গোয়েন্দা প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।
তিনি আরো জানান, ঘটনার পাঁচদিন আগে কাট-আউট পদ্ধতিতে একজনকে হত্যার কন্ট্রাক্ট পান মাসুম। তাঁকে মামলা থেকে অব্যাহতি করিয়ে দিবেন-এমন আশ্বাসে রাজি হন। তিন দিনের দিন তাঁকে নাম পরিচয় দেয়া হয়।
গোয়েন্দা প্রধান বলেন, টিপু ও প্রীতি হত্যায় গ্রেফতার মাসুম আরও একাধিক মামলার আসামি। এই হত্যাকাণ্ডে তার সঙ্গে আরও যারা জড়িত তাদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, এটি পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। গ্রেফতারের পর প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, ঘটনার আগের দিন ব্যর্থ হয়ে তারপরের দিন হত্যাকাণ্ডটি সংগঠিত করেন মাসুম। পরবর্তী সময় তার দুই বন্ধুর সহযোগিতায় নিরাপদ স্থানে আত্মগোপনে চলে যায়।
পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে মাসুম বলেন, আমার টার্গেট ছিল টিপুকে হত্যা করা। তাই আমি অস্ত্রের ট্রিগার চেপে রেখেছিলাম। একাধারে গুলি বের হচ্ছিলো। প্রীতিকে টার্গেট করে গুলি মারিনি। প্রীতির শরীরে যে গুলি লেগেছে সেটা আমি জানতাম না। হত্যার পরের দিন সোস্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে এবং টিভি দেখে জেনেছি। তাকে আমি গুলি করতেও যাইনি। আমার টার্গেট ছিলো কেবল টিপু।
তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডের আগের দিনই (বুধবার) তিনি (মাসুম) মোটরসাইকেল ও একটি পিস্তল নেয়। হত্যাকাণ্ডের জন্য কলোনীকে টার্গেট করা হয়। তবে কে বা কারা অস্ত্র সরবরাহ করেন এবং ঘটনার নেপথ্যে মাস্টারমাইন্ড কারা- এমন প্রশ্ন করলে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হাফিজ আক্তার জানান, এই বিষয়ে এখনও বিস্তর জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
হত্যার একদিন পর শুক্রবার তিনি দেশ ছেড়ে পালানোর জন্য জয়পুরহাট সীমান্তে যান বলে জানিয়েছে পুলিশ। মো. মাসুম ওরফে আকাশ একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রাফিক আর্টস ও ডিজাইনে পড়াশুনা শেষ করেছে। তার বাবা স্কুল শিক্ষক এবং স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে গোয়েন্দা প্রধান জানান, ঢাকা শহরে অনেক দিন পর এমন স্যুটিং মিশনে হত্যা করা হয়। থানা পুলিশের পাশাপাশি ডিবি এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনে কাজ করছে। এখন পর্যন্ত স্যুটার মাসুমের নামে ১টি মামলা রয়েছে বলে জানান হাফিজ আক্তার। তবে, আসামি নিজেই তার নামে বিভিন্ন থানায় ৫টি মামলা থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন বলেও জানান হাফিজ।
বিভি/এনএম
মন্তব্য করুন: