ফ্ল্যাট থেকে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার, স্বামী পলাতক

নিহত সানজিদা
মানিকগঞ্জ শহরের উত্তর সেওতা এলাকার একটি ফ্ল্যাট থেকে সানজিদা আক্তার ওরফে রূপা (২৪) নামের এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার (১৩ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে শহরের উত্তর সেওতা এলাকার একটি বাসা থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনার পর থেকে তিন বছরের শিশু ছেলেকে ফেলে রেখে সানজিদার স্বামী শহীদুল ইসলাম পলাতক।
নিহত রুপার ভাই মনিরুল ইসলাম সুমনের অভিযোগ, যৌতুক ও দাম্পত্য কলহের জেরে তার বোনকে শ্বাসরোধে হত্যার পর শহীদুল পালিয়েছেন। তবে পুলিশ বলছে, তিনি আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন।
জানা গেছে, সানজিদা টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার বনগ্রাম এলাকার শহীদুল ইসলামের স্ত্রী। উত্তর সেওতা এলাকার নুরুল ইসলামের বাড়ীর পঞ্চম তলায় তারা একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকেন। তাদের লাবিব হোসেন নামের তিন বছরের একটি সন্তান আছে।
পুলিশ ও গৃহবধূর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চার বছর আগে নাগরপুরের বনগ্রাম এলাকার জহিরুল ইসলামের ছেলে শহীদুল ইসলামের সঙ্গে পাশের মাহমুদনগর গ্রামের মৃত আনোয়ার হোসেনের মেয়ে সানজিদার বিয়ে হয়। তাঁরা মানিকগঞ্জের উত্তর সেওতা এলাকার জনৈক নূরুল ইসলামের বাসার পঞ্চম তলার একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকতেন। শহীদুল মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় একটি ওষুধের দোকান চালাতেন। আজ রাত ৯টার দিকে ওই ফ্ল্যাট থেকে খাটের ওপর শোয়ানো অবস্থায় সানজিদার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত সানজিদার ভাই মনিরুল ইসলাম সুমন বলেন, আজ (বুধবার) বিকেল পাঁচটার দিকে শহীদুলের ভগ্নিপতি নাসির হোসেন তাঁকে মুঠোফোনে জানান, তার বোন আত্মহত্যা করেছেন। সন্ধ্যায় এসে বোনের লাশ ফ্ল্যাটের একটি কক্ষে খাটের ওপর পড়ে থাকতে দেখেন। মনিরুলের অভিযোগ, বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে স্বর্ণালংকার, আসবাবসহ গৃহস্থালির জিনিস নেন শহীদুল। বিয়ের দুই বছরপর তিনি শ্বশুরবাড়ি থেকে যৌতুকের টাকা দাবি করে আসছিলেন। এনিয়ে সানজিদাকে মারধরও করতেন। তাঁর বোনকে শ্বাসরোধে হত্যার পর খাটের ওপরে ফেলে রাখেন। পরে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যার প্রচার করেন।
ওই দম্পতির পাশের ফ্ল্যাটের বাসিন্দা খাদেজা আক্তার জানান, আজ বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে শহীদুল তাঁর কক্ষে এসে বলেন, সানজিদা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এরপর শহীদুলের সঙ্গে ওই কক্ষে গিয়ে দেখতে পান, সানজিদার লাশ খাটের ওপরে পড়ে আছে। এ ঘটনার পর থেকে শহীদুল ইসলাম পলাতক।
খবর পেয়ে মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ভাস্কর সাহাসহ পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান।
ভাস্কর সাহা বলেন, ওই গৃহবধূর লাশ জেলা সদরের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর গৃহবধূর মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
বিভি/এএইচ/এইচএস
মন্তব্য করুন: