ফেসবুক ষ্ট্যাটাস
যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে জাসদ নেতাকে হাতপায়ের রগ কেটে হত্যার অভিযোগ

জাসদ নেতা মাহবুব খান সালাম
মাদক কারবারীদের বিরুদ্ধে ফেসবুক ষ্ট্যাটাস দেয়ায় জের ধরে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে জাসদ নেতা মাহবুব খান সালাম (৪০) কে হাত-পায়ের রগ কেটে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে। বুধবার (১১ মে) রাত ১১টার দিকে উপজেলার আল্লারদর্গার বয়েজমোড় এলাকার এই ঘটনায় নিহত মাহবুব খান সালাম জাসদের জাতীয় যুব জোটের দৌলতপুর উপজেলার সাধারণ সম্পাদক। তিনি উপজেলার আমদহ গ্রামের আলাউদ্দিন খানের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শী নিহত মাহবুব খান সালামকে বহনকারী ভ্যান চালক রিয়াজুল জানান, রাত ১১টার দিকে আল্লারদর্গা বাজার থেকে আমার ভ্যানে সালাম ভাইকে নিয়ে আমদাহ গ্রামের দিকে বাড়ি ফিরছিলাম। কিছু দূর এগিয়ে বয়েজমোড় পার হতেই বালু ব্যবসায়ী শহীদ ট্রেডার্সের বাড়ির নিকট পৌঁছা মাত্র রাস্তার মাঝে দাঁড়িয়ে একজন ভ্যানের গতিরোধ করে সালাম ভাইকে ডেকে ভ্যান থেকে নামিয়ে নেয়। এ সময় সেখানে আগে থেকেই ওঁৎ পেতে থাকা আরও ৮/১০ জন লোক তাকে ঘিরে ধরে মারধর করতে শুরু করে।
নিহত মাহবুব সালামের স্ত্রী সিমুয়ারা খাতুনের অভিযোগ, বুধবার কুষ্টিয়া কোর্টে কয়েকজন মাদক কারবারীর যাবজ্জীবন সাজা দেয়া হয়েছে। ওই বিষয়ে সালাম তার ফেসবুকে ষ্ট্যাটাস দেয়ার কিছুক্ষন পরই টোকেন চৌধুরীর লোকজন বাড়িতে সালামকে খুঁজতে আসে। সে সময় সালাম বাড়িতে ছিলো না। বিষয়টি দৌলতপুর থানা পুলিশকে জানানোও হয়েছিলো। এছাড়া মাদক ব্যবাসায়ীদের বিরুদ্ধে কথা বলায় পূর্ব থেকেই যুবলীগ নেতা টোকেন চৌধুরীর লোকজনের সাথে বিরোধ চলে আসছিলো। তারই জের ধরে ওরা আমার স্বামীকে হত্যা করেছে। আমি আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই।
নিহতের স্ত্রী আরও জানায়, ‘হাসপাতালে যতক্ষন পর্যন্ত জ্ঞান ছিলে সেসময়ে সালাম বলছিলো, চেয়ারম্যান ও টোকেন চৌধুরীর লোকজন রাতের আঁধারে হঠাৎ এই হামলা চালায়। তারা সালামকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হাত-পায়ের রগ কেটে দিয়েছে।’
তবে এবিষয়ে দৌলতপুর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ৭নং হোগলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সেলিম চৌধুরী মুঠোফোনে আলাপকালে বলেন, ‘এটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বশত: আমার ও আমার পরিবারকে হেয় করতে প্রতিপক্ষের লোকজন এসব কথা ছড়াচ্ছে। হত্যাকাণ্ডের মতো কোন নোংরা রাজনীতি আমি করিনা।’
দৌলতপুর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি বুলবুল আহমেদ চৌধুরী টোকনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। একাধিকবার কল করেও তার সেলফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আশরাফুল আলম জানান, বুধবার রাতে গুরুতর আহত অবস্থায় সালামকে ভর্তি করা হয়। তার প্রয়োজনীয় চিকিৎসা চলছিলো। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত দেড়টার দিকে তার মৃত্যু হয়। সালামের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর রক্তাক্ত জখম ছিলো। তার পায়ের লিগামেন্ট বিচ্ছিন্ন হওয়ায় অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণের কারণে মৃত্যু হয়েছে বলে প্রথামিক ভাবে ধারণা করছি।
দৌলতপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক ওসি জাবীদ হাসান মাহবুব খান সালাম হত্যার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, মাহবুব খান সালাম হত্যায় জড়িত সন্দেহে একজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি। তবে পুলিশ ইতোমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে। যারাই জড়িত থাক তাদের গ্রেফতার করা হবে।
বিভি/এইচএ/এইচএস
মন্তব্য করুন: