• NEWS PORTAL

  • সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

টিপু হত্যায় ফেঁসে যেতে পারেন কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা

প্রকাশিত: ১৭:০০, ১৮ জুন ২০২২

আপডেট: ১৮:২০, ১৮ জুন ২০২২

ফন্ট সাইজ
টিপু হত্যায় ফেঁসে যেতে পারেন কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা

আটক মুসা। ইনসেটে আওয়ামী লীগ নেতা টিপু। ছবি: র‌্যাবের সৌজন্যে

মতিঝিলের আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু হত্যার ঘটনায় ওমান থেকে গ্রেফতার হওয়া সুমন সিকদার ওরফে মুসার কাছ থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ এবং ভয়ংকর তথ্য পেয়েছেন গোয়েন্দারা। মতিঝিলে রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তারে এই হত্যাকাণ্ড ঘটলেও রিমান্ডে নতুন কিছু তথ্য দিয়েছে মুসা। বিশেষ করে তার কাছ থেকে পাওয়া রাজনৈতিক কিলিং মিশন এবং আন্ডারওয়ার্ল্ডের শীর্ষ সন্ত্রাসীদের জড়িত থাকার গুরুত্বপূর্ণ তথ্যে নড়চেড়ে বসেছেন গোয়েন্দারা।

ইতোমধ্যে টিপু খুনের পরিকল্পনাকারী হিসেবে গ্রেফতার হয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক, আবু সালেহ শিকদার ওরফে শুটার সালেহ, নাছির উদ্দিন ওরফে কিলার নাছির এবং মোরশেদুল আলম ওরফে কাইল্লা পলাশ।

গত ৯ জুন ওমান থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয় মুসাকে। পরদিন থেকে ১৬ জুন পর্যন্ত ডিবি পুলিশের রিমান্ডে বেশ কিছু তথ্য দিয়েছে মুসা। তাতে রয়েছে কবে, কোথায় হত্যার পরিকল্পনা হয়েছে এবং কারা টিপু হত্যার সুযোগ নিতে চেয়েছে, কার কি ভূমিকা ছিল এসবের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। যাদের নাম উঠে এসেছে তাদের মধ্যে কয়েকজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং কয়েকজন শীর্ষ সন্ত্রাসী রয়েছে।

শীর্ষ সন্ত্রাসীদের অধিকাংশ বর্তমানে দেশের বাইরে থেকে ঢাকার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করছে। প্রথম দফায় মুসার দেওয়া তথ্যগুলো আরও নিশ্চিত হতে দ্বিতীয় দফায় ফের চার দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে তাকে। এই রিমান্ডে রাজনৈতিক কিলিং মিশনের যেসব ব্যক্তির বিষয়ে তথ্য দিয়েছে মুসা তাদের কয়েকজনকে তার সঙ্গে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে ডিবির একাধিক সূত্র জানিয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে এখনই সেসব ব্যক্তির নাম প্রকাশ করতে চাচ্ছে না ডিবি।

ডিবির তদন্তকারী টিমের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বাংলাভিশনকে বলেন, ‘ছয় দিনের রিমান্ডে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে মুসা। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত ১৫ জুন ইমরান হোসেন জিতু ও রাকিবুর রহমান রাকিব নামে আরও দুই সন্ত্রাসীকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদেরকে দুই দিনের রিমান্ডে আনা হয়েছে। এই রিমান্ডে মুসার মুখোমুখি তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’

ডিবির একটি সূত্র বলছে, এই হত্যা পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বিদেশে পলাতক দুই শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান আহমেদ মন্টি ও জাফর আহমেদ মানিক ওরফে ফ্রিডম মানিক একযোগে কাজ করেছে। দেশে তাদের হয়ে কয়েকজন সরাসরি খুনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। কিলিং মিশনের দেড় মাস আগে দুবাইয়ে পলাতক সন্ত্রাসী জিসানের নির্দেশে অস্ত্রের জোগান দেয় ইশতিয়াক আহমেদ জিতু। এই জিতুর মগবাজারের বাসায় অনেকটা কৌশলী ভূমিকায় মূল শুটার আকাশের বন্ধু মোল্লা শামিমের হাতে দুই রাউন্ড গুলিসহ অস্ত্র তুলে দেয় মুসা। এরপর কিলিং মিশনের আগে সেই অস্ত্রটিই দেওয়া হয় শুটার মাসুম মোহাম্মদ আকাশের হাতে। তবে আকাশ এবং মুসার মুখোমুখি দেখা হয়নি।

ডিবি বলছে, টিপু খুনের পরিকল্পনাকারী হিসেবে এর আগে গ্রেফতার ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক, আবু সালেহ শিকদার ওরফে শুটার সালেহ, নাছির উদ্দিন ওরফে কিলার নাছির এবং মোরশেদুল আলম ওরফে কাইল্লা পলাশকে জিজ্ঞাসাবাদেও মুসার নাম উঠে এসেছিল। তবে মুসাকে জিজ্ঞাসাবাদে আন্ডারওয়ার্ল্ডের জিসান ও ফ্রিডম মানিক এবং তাদের কয়েকজন সহযোগীর নাম উঠে আসছে।

জিজ্ঞাসাবাদে মুসা জানায়, কিলিং মিশনে অস্ত্রের জন্য সে জিতুর সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলে জিসানকে। জিসান মোল্লা পরে শামীমকে অস্ত্র আনতে পাঠায় জিতুর কাছে। ঘটনা থেকে নিজেকে আড়ালে রাখতেই এই কৌশল নেয় মুসা। সে জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রটি ছিল ব্রাজিলের তৈরি তাওরাস ব্র্যান্ডের। এই অস্ত্রটিতে দুই ধরনের গুলি ব্যবহার করা যায়। এখন ধারণা করা হচ্ছে-একই পিস্তলে দুই ধরনের গুলি ঢুকানো হয়েছে। তবে এসব গুলি কোথা থেকে সংগ্রহ করেছে এবং সেই অস্ত্রটি কোথায় রয়েছে সেসব নিয়ে এখনও অনুসন্ধান করছে ডিবি।

বাম থেকে শুটার আকাশ এবং দুর্ঘটনাবশত গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত প্রীতি

মুসার দেওয়া তথ্যে বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক ব্যক্তিকে নজরদারিতে রেখেছে ডিবি। তাদের মধ্যে ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান দুজন নেতা এবং মতিঝিল আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা রয়েছে। তদন্তের স্বার্থে যে কোনো সময় তাদের আটক করা হতে পারে বলে জানিয়েছে ডিবি।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান এ কে এম হাফিজ আক্তার বাংলাভিশনকে বলেন, ‘ছয় দিনের রিমান্ডে মুসা যেসব তথ্য দিয়েছে সেগুলো আরও গভীরভাবে নিশ্চিত হতে তাকে আবারও চার দিনের রিমান্ডে আনা হয়েছে। এই রিমান্ডে সে যেসব ব্যক্তির তথ্য দিয়েছে তাদেরকেও মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে। এছাড়া বেশ কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তির তথ্য সে দিয়েছে।’

জিজ্ঞাসাবাদে মুসা যাদের নাম বলেছে তারা কিলিং মিশনে যুক্ত কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে গোয়েন্দা প্রধান বলেন, ‘এটিকে কিলিং মিশন বলবো না। যাদের নাম বলেছে তাদের আমরা নজরদারিতে রেখেছি। যে কোনো সময় তদন্তের স্বার্থে তাদের আটক করে মুসার মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’

গত মার্চে খিলগাঁও রেলগেটে হেলমেট পরিহিত যুবক টিপুকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এতে টিপু ও তার গাড়িচালক মনির হোসেন মুন্না গুলিবিদ্ধ হয়। এ সময় পাশে রিকশায় থাকা বদরুন্নেসা কলেজের ছাত্রী সামিয়া আফরিন প্রীতিও গুলিবিদ্ধ হন। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে টিপু এবং প্রীতির মৃত্যু হয়।

বিভি/এসএইচ/এনএ

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2