এক তরুণীর প্রেমে দুই বন্ধু, অতঃপর খুন

এক তরুণীর প্রেমে পড়েছিলেন দুই স্কুল বন্ধু। তাদের নাম ইমন রহমান (২১) ও রাশেদুল ইসলাম রাসু (২২)। কিন্তু কেউ কারো প্রেমের বিষয়ে জানতো না। একদিন কোনো কারণে প্রেমিক ইমন প্রেমিকাকে বকা দেওয়ায় প্রেমিকা ক্ষুব্ধ হয়ে অপর প্রেমিক রাসুকে সব কিছু বলে দেয়। এরপরই জানাজানি হয় তারা দুই বন্ধু এক তরুণীর সঙ্গে প্রেম করছে।
প্রেমিকাকে বকা দিয়েছে-বিষয়টি মানতে না পেরে রাসু ও তার সহযোগীরা ইমনকে ডেকে এনে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে তুরাগ নদীতে ফেলে দেয়। ৯ দিন পর ইমনের মরদেহ উদ্ধার করে নৌ-পুলিশ। তবে কে বা কারা ইমনকে হত্যা করেছে তা ছিল অজানা। বিষয়টির রহস্য উদঘাটনে মৃতদেহ উদ্ধারের পর ছায়াতদন্ত শুরু করে র্যাব। শেষ পর্যন্ত রহস্য উদঘাটন এবং হত্যায় জড়িত রাসুকে টাঙ্গাইল থেকে গ্রেফতার করে র্যাব। পরে গাজীপুর থেকে তার সহযোগী বিপুল চন্দ্র বর্মণকেও গ্রেফতার করা হয়।
বুধবার (২৭ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-১-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন।
তিনি বলেন, ‘ইমনকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন গ্রেফতার রাসু ও বিপুল চন্দ্র। ইমন, রাসু, বিপুল সবাই একই স্কুলে পড়াশোনা করেছেন। তারা একে অপরের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। বর্তমানে তাদের মধ্যে কেউ পোশাকশ্রমিক। কয়েক বছর ধরে এ গ্রুপটি মাদক সেবন ও কারবারিতে জড়িয়ে পড়ে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত ৭ জুলাই ইমনকে মোবাইলে কল করে বাসা থেকে ডেকে নেয় রাসু। তিনি ইমনের কাছে জানতে চান, কেন সে তার প্রেমিকাকে বকা দিয়েছে, ডিসটার্ব করেছে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। এক পর্যায়ে রাসু ধারালো অস্ত্র দিয়ে ইমনকে কোপাতে শুরু করেন। এ সময় তার সহযোগীরাও ইমনকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করেন। ইমন নিস্তেজ হয়ে গেলে তাকে তুরাগ নদী ফেলে দেন তারা। পরে ১৬ জুলাই নৌ-পুলিশ ইমনের মৃতদেহ উদ্ধার করে।’
র্যাব-১ এর অধিনায়ক বলেন, ‘মূলত এক তরুণীর সঙ্গে ইমন ও রাসুর প্রেম ছিল। এর জেরেই খুন হতে হয়েছে ইমনকে।’
তিনি বলেন, ‘গত ৭ জুলাই রাতে খাবার খেয়ে ২০০ টাকা নিয়ে বাসা থেকে বের হন ইমন। রাতে আর বাসায় ফেরেননি। এরপর পাঁচদিন তার পরিবার তাকে খোঁজাখুঁজি করেও সন্ধান পাননি। পরে ১১ জুলাই থানায় পরিবারের পক্ষ থেকে জিডি করা হয়। ১৬ জুলাই তার মৃতদেহ পাওয়ার পর ঘটনার রহস্য উদঘাটন এবং জড়িতদের ধরতে ছায়া তদন্ত শুরু করেছিলাম আমরা। এর প্রেক্ষিতে আজকে প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে এই ঘটনার জড়িত অন্যদের গ্রেফতারেও অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।’
বিভি/এসএইচ/এনএ
মন্তব্য করুন: