• NEWS PORTAL

  • সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

আকুতেও মার্কিন নিষেধাজ্ঞা, বাকিতে পণ্য আমদানি করতে পারবে না বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ২২:১২, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩

আপডেট: ১৭:২১, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

ফন্ট সাইজ
আকুতেও মার্কিন নিষেধাজ্ঞা, বাকিতে পণ্য আমদানি করতে পারবে না বাংলাদেশ

ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের এক সপ্তাহ না পেরুতেই বাংলাদেশের অর্থনীতিকে আরেকটি বড় ধাক্কা দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এবার এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) সঙ্গে লেনদেন নিষ্পত্তি না করার জন্য মার্কিন ব্যাংকগুলোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অফিস অব ফরেন অ্যাসেট কন্ট্রোল (ওএফএসি) নির্দেশনা জারি করেছে। 

আকু হচ্ছে একটি আন্তঃআঞ্চলিক লেনদেন নিষ্পত্তিকারী সংস্থা। এর মাধ্যমে আন্তঃআঞ্চলিক লেনদেন নিষ্পত্তি হয়। এর মাধ্যমে লেনদেনের সুবিধা হলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোকে লেনদেনের পুরো অর্থ পরিশোধ না করে, বরং পরস্পরের কাছে তাদের ঠিক কী পরিমাণ দেনা আছে, তা বাদ দিয়ে বাকি অর্থ পরিশোধ করে।

এতদিন আকুর মাধ্যমে পণ্য কিনে তা প্রতি দুই মাস অন্তর অন্তর পরিশোধ করে আসছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এই তালিকায় বাংলাদেশ ছাড়াও রয়েছে আরো ৯টি দেশে। তার মধ্যে ভারত বাদে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি পণ্য আকুর মাধ্যমে আমদানি বিল পরিশোধ করে থাকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই নিষেধাজ্ঞার ফলে পণ্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে নগদে পণ্য ক্রয়ের পাশাপাশি বাড়তি দামে বাংলাদেশকে মূল্য পরিশোধ করতে হতে পারে। যদিও দেশ এই মুহূর্তে ডলারের সংকট রয়েছে।    

আকুর তথ্য অনুযায়ী আন্তঃদেশিয় এই সংস্থাটির মাধ্যমে ভারত বাদে অন্য দেশগুলোর মধ্যে পণ্য ক্রয়ের মূল্য বাবদ সবচেয়ে বেশি লেনদেন করে আসছে বাংলাদেশ। ২০২১ সালে একবছরে বাংলাদেশ ১০৬০৯.২১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য ক্রয় করে ছিলো। যা আকুর মোট লেনদেনের ৩৭ শতাংশ। একই সময়ে শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তান যথাক্রমে ৩৫৬৬.৬৯ মিলিয়ন ডলার এবং ৯৪৮.৯১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য ক্রয় করে। তবে ভারত মোট লেনদেনের ৪৬ শতাংশ করে থাকে।  

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের অফিস অব ফরেন অ্যাসেট কন্ট্রোল (ওএফএসি)- এর বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইকোনমিক টাইমসে একটি সংবাদ প্রকাশ করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের ব্যাংকগুলো দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া বা আরবিআইয়ের দ্বারস্থ হয়েছে বলে ইকোনমিক টাইমস জানিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে নানা মহলে আলোচনা হচ্ছে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানান, এমন পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) এক ই-মেইলের মাধ্যমে ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার কাছে বিস্তারিত জানতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চিঠি পাঠানো হয়। বিষয়টি তারা অবগত কি না চিঠিতে তা জানতে চাওয়া হয়। কারণ এ-সংক্রান্ত খবর সত্য হলে আমদানি ও রপ্তানির লেনদেন নিষ্পত্তিতে জটিলতা দেখা দেবে। কারণ ভারত থেকে বাংলাদেশ বিপুল পরিমাণ পণ্য আমদানি করে। যদি আকুর মাধ্যমে লেনদেন না করা যায়, তাহলে পণ্য আমদানি ব্যয় বেড়ে যাবে।

এবিষয়ে ভারতের এক জ্যেষ্ঠ ব্যাংকার ইকোনমিক টাইমসকে বলেছেন, ‘আকুর প্রধান কার্যালয় ইরানে অবস্থিত, সেই বিষয় নিয়ে কিছু একটা ঘটেছে। আমাদের এমন ধারণা দেয়া হয়েছে যে (ওএফএসি) যুক্তরাষ্ট্রের সব সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে অর্থ পরিশোধপ্রক্রিয়া স্থগিত রাখতে বলেছে।’

আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে ১৯৭৪ সালের ৯ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সহযোগী সংস্থা এসকাপের উদ্যোগে আকু গঠিত হয়। এর প্রধান কার্যালয় ইরানের রাজধানী তেহরানে। আকুর সদস্য দেশগুলো হলো- বাংলাদেশ, ভুটান, ইরান, ভারত, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা।

আকুর সদস্য দেশগুলোর লেনদেনের হার

ভারতের সঙ্গে আকুর সদস্য দেশগুলোর লেনদেনের ভিন্ন মাধ্যম নেই। সে কারণে ভারতের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো আরবিআইয়ের হস্তক্ষেপ চেয়েছে। তারা এই সমস্যার সমাধান চায়। তবে ইকোনমিক টাইমস এ বিষয়ে আকু ও আরবিআইয়ের মন্তব্য চাইলেও তারা সাড়া দেয়নি।

ভারতের সমস্যা হলো দেশটি আকুর সদস্য দেশগুলোয় যত পণ্য রপ্তানি করে, তার চেয়ে কম আমদানি করে। সে কারণে ভারতের বড় অঙ্কের অর্থ আটকা পড়ে গেছে। ২০২০ সালে আকুর মাধ্যমে ভারতের লেনদেন হয়েছে ৮.৪ বিলিয়ন বা ৮৪০ কোটি ডলার।

এর ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই নিষেধাজ্ঞার কারণে আকুর সদস্য দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক লেনদেন আরও জটিল হয়ে যেতে পারে।

এবিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, আকুর সেক্রেটারিয়েট বোর্ড রয়েছে। এমন কোনো নির্দেশনা হলে আমরা চিঠি পেতাম। আকু পদ্ধতি বন্ধ হলে সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে লেনদেন কীভাবে হবে এমন প্রশ্নে মুখপাত্র বলেন, আমরা আকুর সংশ্লিষ্টতাই ছাড়া অন্য দেশগুলোর সঙ্গে সচরাচর যেভাবে আমদানি-রপ্তানি করি, সেভাবেই পেমেন্ট করা হবে। এ ক্ষেত্রে খরচ বেশি। আবার জটিলতাও রয়েছে। কারণ এ লেনদেন তাৎক্ষণিক পেমেন্ট দিতে হয়। আকুর মাধ্যমে সেটা দুই মাস সময় পাওয়া যায়। এসব সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবো।

বিভি/এইচএস/এজেড

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2