• NEWS PORTAL

  • সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

দেশে একবছরে কোটিপতি অ্যাকাউন্ট সংখ্যা বেড়েছে ৮ হাজার ৮৬টি

আনোয়ার হোসাইন সোহেল

প্রকাশিত: ১০:০৭, ১৭ মার্চ ২০২২

আপডেট: ১১:২৩, ১৭ মার্চ ২০২২

ফন্ট সাইজ
দেশে একবছরে কোটিপতি অ্যাকাউন্ট সংখ্যা বেড়েছে ৮ হাজার ৮৬টি

ফাইল ছবি

করোনামহামারি ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে যখন নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের নাভিশ্বাস উঠছে ঠিক তখন দেশে ব্যাংকে কোটি টাকা রয়েছে, এ ধরনের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। গত এক বছরে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা ৮ হাজার ৮৬টিতে উন্নীত হয়েছে। সে হিসাবে মোট কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা ১ লাখ ১ হাজার ৯৭৬টিতে দাঁড়িয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০২১ সালের ডিসেম্বর ভিত্তিক হালনাগাদ প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০২১ সালে দেশে কোটিপতি অ্যাকাউন্টের সংখ্যা বেড়েছে ৮ হাজার ৮৬টি। সে হিসাবে ২০২১ এর ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকিং সেক্টরে মোট কোটিপতি অ্যাকাউন্টের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১ হাজার ৯৭৬টি। যা ২০২০ সালের একই সময়ে ছিলো ৯৩ হাজার ৮৯০টি। 

২০২০ সালের মার্চে দেশে যখন করোনা হানা দেয় তখন ব্যাংক খাতে কোটি টাকার বেশি আমানত রাখার হিসাবের সংখ্যা ছিলো ৮২ হাজার ৬২৫টি। কিন্তু ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরেই কোটিপতি হিসাবের ওই অংক দাঁড়ায় এক লাখ ২৩৯টিতে। ২০২১ সালের ডিসেম্বর শেষে তা দাঁড়ায় ১ লাখ ১ হাজার ৯৭৬টিতে। সেই হিসাবে কোভিড-১৯ এর ২১ মাসে কোটিপতি অ্যাকাউন্ট বেড়েছে ১৯ হাজার ৩৫১টি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন একটি গোষ্ঠীর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকার কারণে কোটি টাকার অ্যাকাউন্ট সংখ্যা বাড়ছে। তিনি বলেন, কোটি টাকার অ্যাকাউন্ট বাড়ার আরেকটি বড় কারণ দেশে বেসরকারিখাতে বিনিয়োগ হচ্ছে না। লোকজনের কাছে যে বাড়তি টাকা আছে সেটার বিনিয়োগ করতে না পেরে অ্যাকাউন্টে রেখে দিচ্ছে। পুঁজিবাজারের অস্থিরতার কারণে সেখানেও বিনিয়োগের ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেন না কোটি টাকার অ্যাকাউন্টধারীরা। এছাড়া সঞ্চয়পত্রের বিভিন্ন শর্তের কারণে নিরাপদ হিসেবে ব্যাংকে আমানত রাখেন। এসব কারণেই বড় আমানতকারীর সংখ্যা বেড়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকিং খাতে মোট আমানতকারীর সংখ্যা দাঁড়ায় ১২ কোটি ৪৮ লাখ ৯৬ হাজার ৯৩৪টি। যেখানে জমা ছিলো ১৫ লাখ ১২ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। এর মধ্যে কোটি টাকার বেশি হিসাবে জমা ৬ লাখ ৫৩ হাজার ৫৮৫ কোটি টাকা।

২০২০ সালের ডিসেম্বর শেষে কোটিপতি ব্যাংক হিসাবগুলোতে জমা ছিলো ৫ লাখ ৯৫ হাজার ২৮৬ কোটি টাকা। ওই সময় মোট আমানতের স্থিতি ছিলো ১৩ লাখ ৭৯ হাজার ১৫০ কোটি টাকা।

২০২১ সালের ডিসেম্বরের তথ্য অনুযায়ী, ১-৫ কোটি টাকার অ্যাকাউন্ট সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৭৯ হাজার ৮৮৩টি। যাদের হিসাবে জমার পরিমাণ ১ লাখ ৬৬ হাজার ৪৪৩ কোটি টাকা। ৫-২০ কোটির মধ্যে রয়েছে ১৭ হাজার ৯টি হিসাব। তাদের হিসাবে জমার পরিমাণ ১ লাখ ৫৮ হাজার ৬৯৫ কোটি টাকা। এছাড়া ২০-৫০ কোটির উপরে মোট হিসবাধারীর সংখ্যা ৫ হাজার ৮৪টি। এই হিসাবগুলোতে জমার পরিমাণ ৩ লাখ ২৮ হাজার ৭১৯ কোটি টাকা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, কোটি টাকার হিসাব মানেই কোটিপতি ব্যক্তির হিসাব নয়। কারণ ব্যাংকে এক কোটি টাকার বেশি অর্থ রাখার তালিকায় ব্যক্তি ছাড়া অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ব্যাংকে কোনো ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠান কতটি করে হিসাব খেলাতে পারবেন তার কোনো নির্দিষ্ট সংখ্যা বলা নেই। সেকারণে একটি প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির নামে একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকতে পারে। এগুলোর মধ্যে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার এক বা একাধিক কোটি টাকার হিসাবও আছে। 

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো’র তথ্য অনুযায়ী, দেশে স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে কোটিপতি ছিলেন মাত্র ৫ জন, ১৯৭৫ সালে ৪৭ জনে উন্নীত হয়। ১৯৮০ সালে কোটিপতিদের হিসাবধারীর সংখ্যা ছিল ৯৮টি। এরপর ১৯৯০ সালে ৯৪৩টি, কিন্তু  ১৯৯৬ সালে একলাফে তা ২ হাজার ৫৯৪টিতে পৌঁছায়, সেই ধারা অব্যাহত রেখে ২০০১ সালে ৫ হাজার ১৬২, ২০০৬ সালে ৮ হাজার ৮৮৭ ও ২০০৮ সালে ছিল ১৯ হাজার ১৬৩টি।

বিভি/এইচএস

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2