ই-কমার্স গ্রাহকের কোটি কোটি টাকা ফেরত না পাওয়ার আশঙ্কা

সুনির্দিষ্ট আইনের অভাবে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানে গ্রাহকের খোয়া যাওয়া কোটি কোটি টাকা আর ফেরত না পাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, কেবল পেমেন্ট গেটওয়েতে আটকে থাকা টাকা ফেরত পাবেন গ্রাহকরা। এক্ষেত্রে আইন প্রণয়নের কাজ দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে রয়েছে।
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের জমকালো বিজ্ঞাপণ আর লোভনীয় ছাড়ের অফারের ফাঁদে পা দিয়ে নিজের কষ্টের জমানোর টাকা খুইয়েছেন এমন গ্রাহকের সংখ্যা নেহায়েত কম নয়। প্রতারণার অভিযোগে এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা হলেও নিজের টাকা ফেরত পাওয়া নিয়ে গ্রাহকের মধ্যে রয়েছে চরম অনিশ্চয়তা।
এ অবস্থায় গ্রাহকের কষ্টের টাকা দ্রুত ফেরত দেয়ার উদ্যোগ নিতে সরকারকে আরও আন্তরিক ও কার্যকরি পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান সংশ্লিষ্টরা।
প্রতারিত একজন গ্রাহক বলেন, ‘এখন যে তদন্তটা হচ্ছে তাতে আমি মোটেও সন্তুষ্ট না। আমার মতো যতজন গ্রাহক আছে লক্ষাধিক, কেউই এতে সন্তুষ্ট না। পেমেন্ট গেটওয়েতে যে অর্থ আছে তা খুবই সামান্য। সেটা দিয়ে আসলে সকলের টাকা মিটানো যাবে না।’
সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় দেশের ই-কমার্সখাত বিকশিত হলেও তা পরিচালনায় করা হয়নি কোনো আইন বা নজরদারি সংস্থা। ফলে সুযোগ সন্ধানীরা হাতিয়ে নিয়েছে গ্রাহকের কোটি কোটি টাকা।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলছে, খোয়া যাওয়া টাকা থেকে কেবল পেমেন্ট গেটওয়েতে আটকে থাকা অর্থই ফেরত পাওয়া সম্ভব। এদিকে আইন প্রণয়নে ১৬ সদস্যের কমিটি করা হলেও তার অগ্রগতি নেই।
ই-ক্যাব সহ সভাপতি মোহাম্মদ সাহাব উদ্দিন বলেন, ‘প্রতারণার জন্য যে সমস্ত ধারা আছে, সেগুলো কিন্তু ডিজিটাল কমার্সের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। বেশ কিছু মিটিংয়ে উপস্থিত থেকে আমরা খুব দ্রুতই ভোক্তা অধিকার আইন এবং প্রতিযোগিতা আইন নিয়ে কাজ শুরু করেছি।’
কোম্পানি আইন ও অর্থনীতি বিশ্লেষক ব্যারিস্টার এ এম মাসুম জানান, ডিজিটাল সিকিউরেটি ২০১৮, সেটাও কিন্তু কোন ধরণের নির্দিষ্ট অপরাধ এবং এটার জন্য শাস্তি কি হবে তা বলা নাই। শত কোটি টাকা যেটা উধাও হয়েছে সেটা কিন্তু উদ্ধার করার কোন পদক্ষেপ নাই।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের জন্য কোনো আইন না থাকার সুযোগে টাকা ফেরত দেয়ার দায় থেকে সহজেই পার পেয়ে যেতে পারেন প্রতারকরা। মামলা হলেও জামিনে বেরিয়ে যাচ্ছেন অনেকে।
বিভি/এইচএস
মন্তব্য করুন: