মিজোরামে বর্ডার হাট সম্প্রসারিত করবে বাণিজ্যের সম্ভাবনা: বাণিজ্যমন্ত্রী

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, ভারতের মিজোরাম রাজ্য এবং বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে যোগাযোগ ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধির জন্য মিজোরাম সীমান্তে একটি বর্ডার হাট স্থাপন করা হবে। মিজোরামের সিলসুরি এবং বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকার সাজেক এ একটি বর্ডার হাট স্থাপনের বিষয়ে মিজোরাম প্রস্তাব দিয়েছে।
তিনি বলেন, উভয় দেশ এ বিষয়ে একমত হয়েছি। মিজোরামের সাথে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য বাণিজ্যিক সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশের তৈরী পোশাক, নির্মাণ সামগ্রী, প্লাষ্টিক ও খাদ্য পণ্যসহ চাহিদা মোতাবেক বিভিন্ন পণ্য মিজোরামে রফতানি করা সম্ভব হবে। সেখানে এসকল পণ্যের বিপুল চাহিদা রয়েছে। একই সঙ্গে মিজোরামের পাথর, হলুদ, আদা, মরিচ, বিখ্যাত বাশ ইত্যাদি বাংলাদেশে আমদানি করার সুযোগ সৃষ্টি হবে। এখানে একটি বর্ডার হাট স্থাপনের ফলে মিজোরামের সাথে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী ও সম্প্রসারিত হবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, লুসাই পাহাড়ের অবস্থান মিজোরামে, কর্ণফুল নদী লুসাই পাহাড় হতে উৎপত্তি হয়ে বাংলাদেশের চট্টগ্রামের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত। নৌপথ ব্যবহার করে মিজোরামের সঙ্গে বাংলাদেশের পণ্য পরিবহন এবং বাণিজ্যবৃদ্ধির সম্ভাব্যতা যাচাই করা হবে। উভয় দেশের বাণিজ্য বৃদ্ধি করতে যে সকল সমস্যা ও করণীয় রয়েছে সেগুলো যাচাই-বাচাই করে সমস্যা সমাধানের জন্য আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করছি।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এবং ভারতের মিজোরাম রাজ্যের বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী আর. লালথাংলিয়ানার আজ (২৫ এপ্রিল) মিজোরামের কনফারেন্স হলে একটি জয়েন্ট স্টেটমেন্ট স্বাক্ষর করে যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য প্রদানের সময় এসব কথা বলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের উন্নয়ন এখন দৃশ্যমান। বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো প্রতিবেশি দেশের সাথেও বাণিজ্য বৃদ্ধি করতে আগ্রহী। মিজোরাম রাজ্যের সাথে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধির উল্লেখযোগ্য সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে চাই। এজন্য বাণিজ্যবৃদ্ধির পরিবেশ সৃষ্টি এবং প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির জন্য আমরা কাজ করছি।
ভারতের মিজোরাম রাজ্যের বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী আর. লালথাংলিয়ানার বলেন, বাংলাদেশের চট্রগ্রাম বন্দর ও নৌপথ ব্যবহার করে উভয় দেশের মালামাল পরিবহন এবং বাণিজ্য বৃদ্ধি করার সুযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি। বর্ডার হাটের বিষয়ে উভয় দেশের মানুষের আগ্রহ রয়েছে। এখানে বর্ডার হাট স্থাপন করা হলে উভয় দেশ উপকৃত হবে। উভয় দেশের মানুষের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ স্থাপিত হবে এবং বাণিজ্যের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাবে। এতে করে উভয় দেশ লাভবান হবে।
উল্লেখ্য, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ২২-২৫ এপ্রিল মিজোরাম রাজ্য সফর করেন। এসময় বাণিজ্যমন্ত্রী মিজোরাম রাজ্যের বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী আর. লালথাংলিয়ানারকে সাথে নিয়ে বর্ডারহাট স্থাপনের সম্ভাব্য স্থান পরিদর্শন করেন। উভয় দেশের সীমান্ত এলাকার সিলসুরি-সাজেক এলাকা পরিদর্শন করেন। মিজোরামের পথে বাংলাদেশের ৩১৮ মিলোমিটার সীমানা রয়েছে।
সফর কালে বাণিজ্যমন্ত্রী মিজোরামের চিফ মিনিষ্টার জোরামথাঙ্গা এবং মিজোরাম রাজ্য সভার স্পিকারের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন এবং উভয় দেশের সার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। মিজোরাম এর সরকারি দলের ডেপুটি চিফ হুইপ, মিজোরাম সরকারের কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট বোর্ড এর ভাইস চেয়ারম্যান এসময় উপস্থিত ছিলেন।
বিভি/এইচএস
মন্তব্য করুন: