হুন্ডির বিরুদ্ধে কঠোর অ্যাকশনে বিএফআইইউ, জব্দ ২৩০ অ্যাকাউন্ট

প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যাওয়ায় হুন্ডি বিরুদ্ধে কঠোর নজরদারী করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংকিং সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের (এমএফএস) অ্যাকাউন্ট ও এজেন্ট হিসাবগুলোতের ইতোমধ্যে বিকাশ, রকেট ও নগদের ২৩০ গ্রাহক এবং ৫ হাজার ৪১৮ এমএফএস এজেন্টের হিসাব জব্দ করেছে। ফলে এসব হিসাবে জমা টাকা এখনই তুলতে পারবেন না গ্রাহকেরা। ভবিষ্যতে বৈধপথে আয় পাঠানোর শর্ত মানলে হিসাবগুলো খুলে দেওয়া হবে। তখন জমা টাকাও তুলতে পারবেন সংশ্লিষ্ট গ্রাহকেরা।
বিএফআইইউ বুধবার এই ব্যবস্থা নিয়ে সংশ্লিষ্ট এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিঠি দিয়েছে। পাশাপাশি কয়েকজন এমএফএস এজেন্টের হিসাবও জব্দ করা হয়েছে। এর আগে একই অপরাধে জড়িত থাকায় ৫ হাজার ৪১৮ এমএফএস এজেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) চিঠি দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। যার মধ্যে কয়েকজনকে আটক করেছে পুলিশ।
সাধারণত হুন্ডি তখনই হয়, যখন কেউ দেশ থেকে অবৈধ উপায়ে বিদেশে অর্থ পাঠাতে চায়, আর বিদেশ থেকে যারা প্রবাসী আয় পাঠাতে চায়। এ ক্ষেত্রে হাতে হাতে বা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এসব অর্থ সংগ্রহ করা হয়। বিদেশ থেকে যারা প্রবাসী আয় পাঠাতে চায়, তা বিদেশেই থেকে যায়। সেই অর্থ বিদেশে পাচারকারীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। আর দেশ থেকে যারা অর্থ পাচার করে, তারা তা হুন্ডি চক্রের হাতে তুলে দেয়। ফলে কার্যত কোনো ডলার দেশে আসে না।
বিষয়টি নিয়ে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের (এমএফএস) একাধিক প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাংলাভিশনের প্রতিবেদক যোগাযোগ করলেও তারা এনিয়ে কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, প্রবাসী বাংলাদেশি ও তাদের প্রিয়জনদের জানানো যাচ্ছে যে কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে (হুন্ডি বা অন্য কোনো অবৈধ পথে) প্রেরণ করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এতে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা হুন্ডি বা অন্য কোনো অবৈধ পথে না পাঠিয়ে বৈধ পথে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে প্রেরণের অনুরোধ জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, অবৈধ পথে প্রবাসী আয় প্রেরণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের বিরুদ্ধে প্রমাণ সাপেক্ষে প্রচলিত আইনে বিএফআইইউ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।
এদিকে বিএফআইইউর তথ্যের ভিত্তিতে গত সেপ্টেম্বরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ বা সিআইডি জানায়, এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্তত পাঁচ হাজার এজেন্ট অবৈধভাবে বিদেশ থেকে অর্থ আনা ও বিদেশে অর্থ পাঠানোর কাজের সঙ্গে জড়িত। হুন্ডির এই চক্রের কারণে বাংলাদেশ সরকার বছরে প্রায় ৭ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার (৭৫ হাজার কোটি টাকা) প্রবাসী আয় বঞ্চিত হচ্ছে। এ বিষয়ে অনুসন্ধান এবং হুন্ডিতে জড়িত ১৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বিভি/এইচএস
মন্তব্য করুন: