এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন নিয়ে ভয়ের কিছু নেই: বাণিজ্য সচিব

স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ হওয়ায় আগামী ২০২৬ সালের পর রপ্তানি ক্ষেত্রে অনেক সুবিধা হারাবে বাংলাদেশ। এতে ভয়ের কিছু নেই বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ।
বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত এক সেমিনারে একথা বলেন।
‘বেসরকারি খাতের দৃষ্টিতে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রথমার্ধে গত জুলাই-ডিসেম্বর বাংলাদেশের অর্থনীতির সামগ্রিক পর্যালোচনা’ শীর্ষক এ সেমিনার প্রধান অতিথির বক্তব্য বাণিজ্য সচিব বলেন, এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন বা স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ হওয়ায় আগামী ২০২৬ সালের পর রপ্তানি ক্ষেত্রে অনেক সুবিধা হারাবে বাংলাদেশ। এ অবস্থায় ওই সময়ে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে তৈরি পোশাক শিল্প ও রেমিট্যান্সের ওপর নির্ভর না করে ব্যবসায়ীদের এখন থেকে প্রস্তুতি নেওয়া আহ্বান জানান সচিব।
তপন কান্তি ঘোষ বলেন, এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। কিন্তু যে জিনিসটা করা দরকার সেটা হলো আমাদের অনেক জায়গায় হয় তো কিছু পরিবর্তন করতে হবে। রিফর্ম করতে হবে, যেখানে অনেক হোমওয়ার্ক করতে হবে। সেটা যদি আমরা করতে পারি তাহলে স্মুথ ট্রানজেকশন সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, আমেরিকা বাদে পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই আমরা বিনা শুল্কে রপ্তানি করতে পারি। এটা ২০২৬ সালের পরে অনেক দেশেই থাকবে না। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭টি দেশ এবং ইউকে (যুক্তরাজ্য) এখানে থাকবে ২০৩০ সাল পর্যন্ত। তারপরে আবার থাকবে না। এটা একটা বড় জায়গা।
তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের এখন থেকে প্রস্তুতি নেওয়া দরকার, নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে ব্যবসা করতে হবে। বিশ্বে অন্য দেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে তাকে রপ্তানি করতে হবে। আমাদের গার্মেন্টসসহ ৪৩টি রপ্তানি পণ্যে ২ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত ক্যাশ ইনসেনটিভ দিচ্ছে সরকার।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বলেন, চলতি অর্থবছরে ১৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা ক্যাস ইনসেনটিভ দেওয়ার জন্য নির্ধারিত আছে। ২০২৬ সালের পর এটা দেওয়ার সুযোগ থাকবে না। তখন ডব্লিউটিও (ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশন)- এর বিধিবিধান অনুযায়ী যে সুযোগ-সুবিধা দেওয়া যায়, সেটা দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, এখন আমরা ৩০ শতাংশ ভ্যালু অ্যাডিশন করলে শুল্ক সুবিধাটা পায় এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে তা ২৫ শতাংশ। যখন আমরা এলডিসি থেকে উন্নয়শীল দেশ হয়ে যাবো, এটা সাধারণভাবে থাকবে না। এটা ৫০ শতাংশ হয়ে যাবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে। ইউরোপীয় ইউনিয়নেও ৫০ ভাগ হয়ে যাবে। তার মানে এখন কম ভ্যালু অ্যাডিশন করে বেশিরভাগ শুল্ক সুবিধা পাচ্ছেন। তখন কিন্তু আপনার নিজের ব্যাকওয়ার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এবং অনেক ইনভেস্টমেন্ট লাগবে, যাতে আপনি অন্তত শতকরা ৫০ শতাংশ সেই সুবিধাটা পান। এমনকি আমাদের গার্মেন্টস খাতে এখন ৫০ শতাংশ ভ্যালু অ্যাডিশন নেই।
তপন কান্তি ঘোষ আরও বলেন, আমরা শিল্পে অনেক ডাইভারসিফাই করেছি। অভ্যন্তরীণভাবে যদি আমরা দেখি বাংলাদেশে অনেক ধরনের শিল্প খুবই ভালো অবস্থানে গিয়েছে। কিন্তু এটাকে এক্সপোর্ট মার্কেটে আমরা এখনো নিতে পারিনি।
বিভি/এইচএস
মন্তব্য করুন: