অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে কার্ডে বিদেশি মুদ্রার লেনদেন

অস্বাভাবিকভাবে কার্ডের মাধ্যমে বিদেশি মুদ্রার লেনদেন বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে কার্ডের মাধ্যমে ৫৫৭ কোটি ৫০ লাখ টাকার সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রা লেনদেন হয়েছে। যা আগের বছরের একই মাসের চেয়ে প্রায় তিন গুণ বেশি। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে কার্ডের মাধ্যমে ২৫৬ কোটি ২০ লাখ টাকার বিদেশি মুদ্রা লেনদেন হয়েছিল।
রবিবার (৯ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। তাতে দেখা যায়, প্রায় প্রতিমাসেই বাড়ছে কার্ডের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেনের পরিমাণ। তবে জানুয়ারির চেয়ে ফেব্রুয়ারি মাসে লেনদেন কিছুটা কমেছে। জানুয়ারি মাসে লেনদেন হয়েছিল ৬২০ কোটি ৩০ লাখ টাকা। আর তার আগের মাস ডিসেম্বরে হয়েছিল ৬৩৯ কোটি টাকা।
প্রায় দুই বছর ধরে দেশে ডলারের সংকট চলছে। রবিবার আন্তঃব্যাংক লেনদেনে প্রতি ডলারের সর্বোচ্চ দর ছিল ১০৭ টাকা। আর সর্বনিম্ন দর ছিল ১০৬ টাকা ৮৫ পয়সা। দুই বছর আগে এই ডলারের দর ছিল ৮৫ টাকা ৭০ পয়সা। খোলাবাজার বা কার্ব মার্কেটে ডলারের দর বেড়ে ১২০ টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছিল। এখন ১১৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেছেন, ভ্রমণ, চিকিৎসা, শিক্ষা ও ব্যবসার কাজে অনেকেই বিদেশে কার্ডের মাধ্যমে ডলার নিয়ে যাচ্ছেন। সে কারণে কার্ডের মাধ্যমে ডলারের লেনদেন বেড়েছে। গ্রাহকদের কাছে নগদ ও কার্ডে- দুইভাবেই ডলার বিক্রি করে ব্যাংকগুলো। এতদিন নগদের চেয়ে কার্ডে ডলার নেয়ার খরচ ছিল কম।
দেশে অনেক আগেই ক্রেডিট কার্ডে বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের অনুমোদন দেয়া হয়। আর ২০২০ সালের জুনে ব্যাংকগুলোকে গ্রাহকদের হিসাবের বিপরীতে আন্তর্জাতিক ডেবিট কার্ড ইস্যুর অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এ বিষয়ে বেসরকারি মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘গত কয়েক বছর ধরে বিদেশে ভ্রমণ বেড়েছে। যা করোনা মহামারির সময় প্রায় বন্ধ ছিল। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় মানুষজন ভ্রমণ, চিকিৎসাসহ বিভিন্ন কাজে বিদেশে যাচ্ছেন। ফলে বৈদেশিক মুদ্রার ব্যবহারও বাড়ছে। এরফলে নগদের বদলে কার্ডে বেশি হচ্ছে। এ ছাড়া সামনে ঈদ। ফলে লেনদেন আরও বাড়বে।’
তিনি বলেন, ‘বাইরের দেশে এখন অনেকেই নগদ মুদ্রা ব্যবহার করতে চান না। ফলে আগের চেয়ে কার্ডের মাধ্যমে মুদ্রার লেনদেন বেড়ে গেছে।’
বাংলাদেশ ব্যাংকে ২০১৯ সালে এক সার্কুলারের মাধ্যমে বাংলাদেশি একজন নাগরিক ভ্রমণের জন্য বছরে ১২ হাজার ডলার সঙ্গে নিতে পারবে। চিকিৎসার জন্য অনুমতি ছাড়া ১০ হাজার ডলার এবং শিক্ষার জন্য গ্রেড ১২-এর নিচে বাইরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যত লাগবে তত নিতে পারবে। যা ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে কার্যকর করা হয়েছে।
কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই ১০ হাজার ডলার বা সমমূল্যের অন্য বিদেশি মুদ্রা সাথে রাখা যাবে। আগে এই সীমা ৫ হাজার ডলার ছিল।
বিভি/এইচএস
মন্তব্য করুন: