মাইকিং করে ইলিশ বিক্রি, কেজি মাত্র ২৫০ টাকা!

দরজার কড়া নাড়ছে বাঙালির প্রাণের উৎসব বৈশাখ। তবে রোজার মধ্যে পহেলা বৈশাখ হওয়ায় কিছুটা হলেও উৎসবে ভাটা পড়েছে। মাটির প্লেটে পান্তা ভাত-ইলিশ মাছের সঙ্গে শুকনো মরিচ দিয়ে খাবার খাওয়া বাঙালির সেই চীর চেনা ঐতির্য্য বৈশাখী উৎসবের তেমনি প্রস্তুতি লক্ষ করা যাচ্ছে না। ঈদ খুব কাছাকাছি হওয়ায় বাজেট ঠিক রাখতে অনেকেই বৈশাখী সাজে ও খাবারে তেমন প্রস্তুতি নেয়নি। তবে বাঙালির পরিচয় মেলে উৎসবে পাগল জাতি হিসেবে। এখানে ‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার’ এই স্লোগান প্রতিফলিত হয় প্রতিটি জাতীয় উৎসবে।
প্রতিবছর বৈশাখী উৎসব এলে ইলিশ মাছ নিয়ে দেশজুড়ে হৈ চৈ শুরু হয়। কিন্তু এবার তেমনটিও লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। প্রতিবার ইলিশের দাম রেকর্ড করা হয়। এনিয়ে পত্র-পত্রিকায় শিরোনাম হয় কিন্তু এবার উত্তরের জেলা দিনাজপুরে মাইকিং করে বিক্রি করা হচ্ছে ইলিশ মাছ।
প্রতি কেজি ইলিশ মাছের দাম ধরা হচ্ছে ২৫০ টাকা ৩০০ টাকা। ফুলবাড়ী পৌর মাছ বাজারে এ দামেই ইলিশ বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। মাইকিং করে বুধবার (১২ এপ্রিল) ইলিশ মাছ বিক্রির এমন প্রচার চালাতে দেখা গেছে ব্যবসায়ীদের।
মাইকিং শুনে ফুলবাড়ী পৌর শহরের মাছ বাজারে গিয়ে দেখা যায়, মালেক ও খট্টু নামের দুই ব্যবসায়ী প্রতি কেজি ইলিশ মাছ ২৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা বিক্রি করছেন। তুলনামূলক দাম কম হওয়ায় ওই দুই দোকানে ক্রেতার সমাগমও অনেক।
ইলিশ কিনতে আসা রবিন, মোয়াজ্জেন ও সানি জানান, মাইকিংক শুনেই তারা ইলিশ মাছ কিনতে এসেছেন। বাজারে সাধারণত চাষের মাছ পাওয়া যায়, এর মধ্যে সবচেয়ে কম দামে পাওয়া যায় সিলভার কার্প। সিলভার কার্প মাছও প্রতি কেজি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হয়। তাই তারা ইলিশ কিনতে এসেছেন। আকারে ছোট হলেও তারা ইলিশ কিনছেন বলে জানান।
ইলিশ মাছের দাম এত কম হওয়ার কারণ হিসেবে মাছ বাজারের অপর ব্যবসায়ী নিবারণ বলেন, এক কেজি বা তার একটু বেশি ওজনের ইলিশ ১ হাজার টাকা থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা দরে বিক্রি করা হয়। এক কেজি ওজনের বা বড় ইলিশ মাছের স্বাদ বেশি, যার কারণে দামও বেশি। তবে কম দামে যে সব ইলিশ বিক্রি হচ্ছে তা ছোট ইলিশ। এসব ইলিশ প্রতি কেজিতে ৪-৫টা হয় এবং হিমায়িত, তাই দাম কম।’
প্রসঙ্গত, গত ১ নভেম্বর থেকে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত দেশে ইলিশ পোনা জাটকা আহরন, পরিবহন ও বিপনন নিষিদ্ধ রয়েছে। আর এ সময়ের মধ্যে দেশের ৬টি গুরুত্বপূর্ণ ইলিশ পরিভ্রমন এলাকা, নার্সারি ক্ষেত্রে ইলিশের বিচরন নির্বিঘ্ন করতে নভেম্বর থেকে পর্যায়ক্রমে দু মাস করে অভায়শ্রম ঘোষনা করে সব ধরনের মৎস্য আহরন, পরিবহন ও বিপনন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
গত ১ মার্চ থেকে বরিশালে দেশের ৬ষ্ঠ মৎস্য অভয়াশ্রমে সব ধরনের মাছ আহরনে নিষেধাজ্ঞা বলবৎ হয়েছে। মৎস্য বিজ্ঞানীদের সুপারিশে বরিশালের হিজলা ও মেহদিগঞ্জের লতা, নয়া ভাঙ্গনী ও ধর্মগঞ্জ নদীর মিলনস্থল পর্যন্ত প্রায় ৬০ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় আগামী ৩০ এপ্রিল মধ্যরাত অবধি সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকবে। মৎস্য অধিদপ্তরের তত্বাবধানে এসব এলাকায় ইতোমধ্যে পুলিশ, র্যাব ও কোষ্ট গার্ড-এর নজরদারী অব্যাহত রয়েছে।
বিভি/এইচএস
মন্তব্য করুন: