যে কারণে মারাত্মক শিক্ষার্থী সংকটে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ

বাংলাদেশে চিকিৎসা শাস্ত্রে পড়াশুনার আগ্রহ কম নয় এবং এতে পড়াশুনার সুযোগ পেতে প্রতিবছর হাজার হাজার শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে থাকেন। গত ৯ ফেব্রুয়ারি দেয়া পরীক্ষায় পাশ করেছেন ৪৯ হাজার ৯শ’ ২৩ জন। সাড়ে ১১ হাজার আসনের বিপরীতে অর্ধলাখ শিক্ষার্থী পাশ করলেও মারাত্মক শিক্ষার্থী সংকটে পড়েছে বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলো। অথচ ৯দিন পর ৫ জুন শুরু হচ্ছে প্রথম বর্ষের এমবিবিএস ক্লাস। কোভিড মহামারির সময়ে সিট ফাঁকা না থাকায় ফিরিয়ে দিতে হয়েছে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের।
বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন বলছে- ভর্তিতে ‘অটোমেশনের কারণে’ বেসরকারি মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থী সংকটে পড়েছে। ১২শ’ আসন খালি আছে। এরমধ্যে গরীব মেধাবি, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কোটা এবং বিদেশি শিক্ষার্থীদের আসনও পূরণ হয়নি। টাকা দিয়ে ইচ্ছার বিপরীতে বিভিন্ন জায়গায় ভর্তি করায় ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের মনোযোগ হারিয়ে পড়াশুনো থেকে ঝরে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন সংগঠনটির সভাপতি এম এ মুবিন খান।
তবে সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, যেসব বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ভালো, তাদের শিক্ষার্থীর অভাব নেই, আসনও খালি নেই। ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজে আসন ১২০টা। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাদের একটা আসনও খালি নেই। বাজারে যাদের সুনাম নেই, তারাই শিক্ষার্থী পাচ্ছে না। মেডিকেল শিক্ষার মান ঠিক রাখতে হলে কঠোর ভর্তিপ্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই তা শুরু করতে হবে।
বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এম এ মুবিন খান বলছেন, অটোমেশন পদ্ধতি চালু হওয়ার আগে ‘পাইলট’ হিসেবে নিয়ে এর ওপর আরও আলোচনা-পর্যালোচনা করার প্রয়োজন ছিল। এছাড়া বিদেশী শিক্ষার্থী ভর্তির কোটা ৫০ শতাংশে উন্নীত করা গেলে ২০০ কোটি টাকার বেশি রেমিটেন্স আসবে বলে দাবি করেন তিনি। এছাড়া বেসরকারি মেডিকেলে ভর্তিতে যে অর্থ নেয়া হয় পাশ্ববর্তী অন্যান্য দেশ থেকে অনেক কম বলেও জানান তিনি।
সিরডাপ মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা বলেন, অটোমেশন পাকিস্তান আমলেও ছিল। বর্তমানে যে অটোমেশন পদ্ধতি রয়েছে, তার কারণে সত্যিই কি শিক্ষার্থী পাওয়া যাচ্ছে না, নাকি অন্য কোনো কারণ রয়েছে, সেটা তলিয়ে দেখা দরকার।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর বলছে, বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুললো মান নিয়ন্ত্রণে নীতিমালা মানে না। টাকার বিনিময়ে ভর্তি করে। যার কারণেই মান নিয়ন্ত্রণ ও যারা মেধাবী, তাঁদের পড়ার সুযোগ করে দিতেই অটোমেশন চালু করা হয়েছে।
বিভি/এনএম
মন্তব্য করুন: