• NEWS PORTAL

  • বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে র‍্যাগিংয়ের অভিযোগ, অভিযুক্তদের কারণ দর্শানোর নোটিশ

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়

প্রকাশিত: ১৬:১৯, ২২ জানুয়ারি ২০২৫

আপডেট: ১৬:২০, ২২ জানুয়ারি ২০২৫

ফন্ট সাইজ
নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে র‍্যাগিংয়ের অভিযোগ, অভিযুক্তদের কারণ দর্শানোর নোটিশ

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ১৭তম আবর্তনের সিনিয়র কর্তৃক ১৮তম আবর্তনের শিক্ষার্থীদের র‍্যাগিং এর অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ৩০ জন শিক্ষার্থী র‍্যাগিংয়ের বিচার চেয়ে প্রক্টর বরাবর একটি অভিযোগ পত্র জমা দেয়।

অভিযোগ পত্রে বলা হয়, আমরা ১৮ তম আবর্তনের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। বিভাগের ১৭তম আবর্তনের শিক্ষার্থীরা আমাদেরকে ‘চেইন অফ কমান্ড’ ও ‘ভার্সিটির কালচার’ শিখানোর নামে অমানুষিক নির্যাতন করে থাকেন। ম্যানার শিখানোর নামে ঘন্টার পর ঘন্টা আমাদেরকে আটকে রাখা হয়। কারো অসুস্থতা বা কোনো অসুবিধা বিবেচনা করা হয় না। ছেলেদেরকে রাতে বঙ্গবন্ধু হলের ৪১৬ ও ৮২৪ নাম্বার কক্ষে এবং জঙ্গলবাড়িতে নিয়ে হেনস্থা করে ফজরের সময় ছাড়া হয়।

অভিযোগ পত্রে আরও বলা হয়, মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) বিকাল ৫ টা থেকে ৮.৩০ পর্যন্ত আমাদের ব্যাচের ৩২ জন শিক্ষার্থীকে ডেকে নিয়ে আমাদের উপর মানসিক অত্যাচার করা হয়। যার ফলে সেখানে উপস্থিত দুইজন মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এরকম মিটিংয়ে এর আগেও অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। ছেলেদেরকে বেশি অত্যাচার করা হয় শারীরিক ও মানসিকভাবে। এসব কাজে জড়িত উল্লেখযোগ্য সিনিয়দের নামগুলো হলো: আশরাফ, মাসুম, ইমরান, জিসান, মারুফ, নিঝুম, তামান্না, ডানা, জীম, ফারিহা, পুনম, অর্পিতা ও লিজা তালুকদার।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানায়, আমাদের সিনিয়রদের জেলাসহ নাম মুখস্ত করতে হয়। এমনকি কোন সিনিয়রের কি পছন্দ তাও মনে রাখতে বলা হয়। জোরপূর্বক ছেলেদেরকে নারী সিনিয়রের নাম্বার দিয়ে বলা হয় প্রপোজ করে কুপ্রস্তাব দিতে। এছাড়া নানান ভাবে মেয়েদেরকে হেনস্তা করা হয়। এমনকি অকথ্য ভাষায় গালি দেওয়া হয়। এইসব কারণে আমরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। আমাদের ক্লাসমেট লাইজু একবার এসব বিষয়ের ভিডিও সাংবাদিকদের জানাতে চায়। এই খবর জেনে আমাদের উপর জোর করা হয় যেনো আমরা তার সাথে কথা না বলি। তাকে বয়কট করার জন্য সিনিয়ররা আমাদেরকে চাপ দেয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নারী শিক্ষার্থী জানায়, আমাদের সিনিয়ররা ডেকে রাত ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত আটকে রেখে নানান ভাবে মানসিক নির্যাতন করে। দাঁড় করিয়ে অপমান ও অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করা হয়। এমনকি নানান ইঙ্গিতে আমাদেরকে অসম্মান করা হয়। 

আরেক নারী শিক্ষার্থী বলেন, আমরা অনেকেই রান্না করে খাই। আমাদের রাত পর্যন্ত আটকে রাখায় খাওয়া-দাওয়াও ঠিক মতো হয় না। এইসব বিষয়ে আমরা কাওকে কিছু যেনো না জানাই সেজন্য সবসময় বয়কট করে দেয়ার ভয় দেখানো হয়। বলা হয় বিভাগীয় প্রধান-প্রক্টরদের আমরা পকেটে নিয়ে ঘুরি। তাই আমরা এসব বিষয়ে কাওকে জানানোর সাহস করতে পারি নি। আজকে আমাদের মাঝে ৪ জন অসুস্থ হয়ে পড়ে। কারো অসুস্থতার কথা বললে বলা হয় এগুলো আমরা অজুহাত দেখাই।

এ বিষয়ে প্রক্টর জানান, আমরা রাতে এরকম একটি অভিযোগ পেয়েছি। তবে বিভাগ থেকে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে শিক্ষার্থীরা এসে অভিযোগপত্রটি তুলে নেয়ার জন্য আবেদন জানায়। তবে অভিযুক্তদের প্রক্টর অফিস থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে।

এ বিষয়ে সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মাসুদুর রহমান জানায়, বিভাগ থেকে ইতিমধ্যে অভিযুক্তদেরকে কারণ দর্শানোর জন্য বলা হয়েছে। এছাড়াও বিভাগ থেকে ভুক্তভোগীদের উত্থাপিত দাবিগুলো বাস্তবায়নে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ্য, এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২২ জানুয়ারি সমাজবিজ্ঞান বিভাগের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত ১৩ শিক্ষার্থীকে আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে কেন তাদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে না সে বিষয়ে লিখিত আকারে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রকাশ করা হয়।
 

বিভি/এসজি

মন্তব্য করুন:

Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2