বেরোবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে রেজাল্ট টেম্পারিং ও যৌন হয়রানির অভিযোগ

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. তানজিউল ইসলাম জীবনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও নাম্বার টেম্পারিং এর অভিযোগ পত্র জমা পড়েছে। গত কয়েকদিন থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও নাম্বার কমিয়ে দেওয়ার অনেক অভিযোগ ওঠে।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) বিকালে ফেসবুকের মাধ্যমে জানতে পারা যায় যে, একই বিভাগের সাবেক এক শিক্ষার্থী অভিযোগ পত্র জমা দিয়েছে উপাচার্য ও রেজিস্টারের ইমেইলে। সেই অভিযোগ পত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, তিনি শিক্ষক জীবনের বিরুদ্ধে মানসিক নির্যাতন, ভয়ভীতি দেখানো, যৌন হয়রানি ও মার্ক টেম্পারিং করে ফলাফল খারাপ করিয়ে দেওয়ার অভিযোগ আনেন।
অভিযোগপত্রে নাম প্রকাশ না করার শর্তে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও রেজিস্ট্রার বরাবর ইমেইলের মাধ্যমে অভিযোগ পত্র দাখিলের কপি পাওয়া যায়। অভিযোগ পত্রে বলা হয়, দেশের বাইরে অবস্থান করায় স্ব-শরীরে হাজির হয়ে অভিযোগ জমা দেওয়া সম্ভব হয়নি। তাই উপাচার্য ও রেজিস্ট্রার দফতরে ইমেইল ও হোয়াটসআ্যপের মাধ্যমে লিখিত অভিযোগ পাঠিয়েছে।
তিনি বলেন, তাকে বিভিন্ন সময় ঐ শিক্ষক বাজে ও অশ্লীল ইঙ্গিত দেখিয়েছেন কিন্তু তিনি ফাঁদে পা দেননি। এই কারণে উক্ত শিক্ষক তাকে হেনস্তার পাশাপাশি মানসিক নির্যাতন ও ফলাফল খারাপ করে দিয়েছেন। এজন্য উক্ত শিক্ষার্থী দাবি হিসেবে তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া সকল অন্যায়ের বিচার চেয়েছেন।
এর আগে সচেতন শিক্ষার্থীদের নামে এ শিক্ষকের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছে। গত ১৪ এপ্রিল থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই শিক্ষার্থীর সঙ্গে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের তিনটি অডিও ফাঁস হলে আলোচনায় আসেন।
অভিযোগের ব্যাপারে রেজিস্ট্রার ড. হারুন অর রশীদ বলেন, ইমেইলে তার অভিযোগটি পেয়েছি
এবং তৎক্ষণাৎ সেটি প্রিন্ট করে সংশ্লিষ্ট কমিটির কাছে উপস্থাপন করেছি। অভিযোগকারী তার নাম প্রকাশ করতে নিষেধ করেছেন। তাই আমরা নাম প্রকাশ করতে পারবো না। তদন্ত কমিটি শীঘ্রই তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেবে বলে আশা করি।
অভিযুক্ত সেই শিক্ষক ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. তানজিউল ইসলাম জীবন বলেন, আমি অভিযোগটা দেখলাম। প্রশাসন জমা দিয়েছে তাই এখন এটা প্রশাসন দেখবে। আমার এখানে কোনো মতামত নেই। প্রশাসন যদি তদন্ত করে আমার বিরুদ্ধে প্রমাণ পায় তাহলে আমার শাস্তি হবে আর যদি না পায় তাহলে যে অভিযোগ করেছে সে শাস্তি পাবে।
নাম্বার টেম্পারিংয়ের ও যৌন হয়রানির অভিযোগ বিষয়ক বিশেষ সেলের সদস্য সচিব ড. মো. ইলিয়াস প্রামাণিক বলেন, যে অভিযোগ দিয়েছে সেই ব্যক্তিটি অভিযোগকারী কি না, যে রেকর্ড গুলো আমরা পেয়েছি সেগুলো সত্য কি না এটা নিয়ে পর্যালোচনা করব। শুধু সত্য নাকি মিথ্যা সেটা যাচাই করবো। এ পর্যন্ত যার যার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে আমরা সেই কাজ গুলো নিয়ে ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছি। ভিসি স্যার এই বিষয় নিয়ে আন্তরিক। শীঘ্রই এগুলোর সমাধান হবে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. শওকত আলী বলেন, আমরা এর আগে যথাযথ মাধ্যমে অভিযোগ পত্র পাইনি কিন্তু এখন পেয়েছি এবং এটা নিয়ে ইতিমধ্যে কাজও শুরু করে দিয়েছি। আমরা এই জন্য একটি বিশেষ সেল গঠন করেছি। সেলের নাম হচ্ছে নাম্বার টেম্পারিং ও যৌন হয়রানির অভিযোগ বিষয়ক বিশেষ সেল। এখানে যে কেউ অভিযোগ দিতে পারে। আমরা অভিযোগকারীর নাম পরিচয় গোপন করে সত্যতা যাচাই করবো। সত্যতা মিললে আমরা আইন অনুযায়ী বিচার করবো।
বিভি/এসজি
মন্তব্য করুন: